কপট ধার্মিক, ভীরু- ভন্ড, রাজাকার এবং তাদের বংশধরদের এই ব্লগে প্রবেশ নিষেধ
ক্রিকেট আমার প্রিয় খেলা। সাকিব এবং তামিম আমার প্রিয় খেলোয়ার। বাংলাদেশের সাথে আমার সময়ের ব্যবধান রাত দিন। তবুও খেলা দেখি। দেখার আপ্রাণ চেষ্টা করি।
এর পরেও অনেক খেলা মিস হয়ে যায়। খেলার খবর জানার জন্যে কাজে থেকেই সরাসরি ফোন করি দেশে, ছোট ভাইয়ের বউয়ের কাছে। যাকে আমি দুষ্টুমি করে ভাবি ডাকি! প্রেম করে আমার আগে বিয়ে করেছে বলে আর ভাবি আমাকে লালভাই সম্বোধন করে ডাকে। আমি লাল না তবুও! এসবই আন্তরিকতার জন্য।
সেই প্রিয় দলের প্রিয় খেলোয়ারদের কথা গতকাল কালের কন্ঠে পড়ে শুধু আহত নয় মর্মাহত হলাম।
আমি জানি বাঙ্গালী এমনই। বাঙ্গালী সমালোচনা সহ্য করে না। আজকের খ্যাতিমান খেলোয়াররাও হয়তো অঁজপাঁড়াগা থেকে, নিম্ন পরিবার থেকে ওঠে এসেছে। তাই বলে কি উন্নতির সাথে সাথে তাদের আচরণে আমরা পরিবর্তন আশা করতে পারিনা?
কালেরকন্ঠ থেকে চুম্বক অংশটুকু তুলে ধরা হলোঃ
ঘটনা ১
স্কুলপড়–য়া কয়েকজন শিশু-কিশোর নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে মাঠ পর্যন্ত যেতে পারেনি। স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় ছিল কখন ক্রিকেটাররা বেরোবেন।
স্বপ্নের নায়ক সাকিব বের হতেই তাঁর সামনে বাড়িয়ে দেওয়া হলো খাতা-কলম। একটা অটোগ্রাফ চাই। সাকিব করলেন কী! হাত দিয়ে উত্তরপ্রজন্মকে ঠেলে সরিয়ে উঠে গেলেন গাড়িতে। কোনো কথা না বলেই চলে গেলেন।
প্রশ্ন
ব্যাটে-বলে দারুণ করেই বিশ্বসেরা সাকিব।
কিন্তু ভাবুন, তিনি মাঠের ক্রিকেটে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে চলেছেন, কিন্তু গ্যালারি শূন্য। কোনো দর্শক-সমর্থক-অনুসারী নেই। তাহলে সাকিবের সঙ্গে সাধারণ আর দশজনের পার্থক্য কী? অটোগ্রাফের খাতা কি ফিরিয়ে দিতে পারে কেউ?
ঘটনা ২
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ইনজুরড তামিমের ড্রেসিং রুমে প্রবেশাধিকারের জন্য অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের আবদার। সেটি পেতে দেরি হওয়ায় বিসিবির স্টাফদের সঙ্গে হম্বিতম্বি। এ সংবাদ করার জন্য কালের কণ্ঠ তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হুমকির সুরে তাঁর সাফ কথা, ‘এ সংবাদ ছাপাবেন না।
তাহলে কিন্তু আপনাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক থাকবে না। ’
প্রশ্ন
ঘটনার সংবাদমূল্য বুঝেই সেটি প্রকাশ করেছে কালের কণ্ঠ। আর তামিমও এরপর কালের কণ্ঠের কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক কোনো কথাই বলেননি। তাহলে কি কোনো সংবাদ প্রকাশের আগে ক্রিকেটারদের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক?
ঘটনা ৩
অনেক দিন রানে নেই মোহাম্মদ আশরাফুল। ফর্মে ফেরার জন্য অনুশীলন করছিলেন পুরো মাত্রায়।
জাতীয় দলের এমনই এক প্র্যাকটিস দেখতে আসা এক সমর্থক করে বসলেন তাঁর প্রতি কটূক্তি। আশরাফুল কি ছেড়ে দেওয়ার পাত্র! বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে এই ব্যাটসম্যান একেবারে চড় মেরে বসলেন ওই ক্রিকেট-সমর্থককে!
প্রশ্ন
এটি ঠিক যে সেলিব্রেটিরাও মানুষ। তাঁদেরও রাগ-ক্ষোভ-দুঃখ থাকে। আর সে অনুযায়ী নিজ মহলে প্রতিক্রিয়া তাঁরা দেখাতে পারেন ঠিক। কিন্তু সাধারণ লোকের মতো প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া কি দেখানো যায়? কোন পরিস্থিতিতেই কি একজন সমর্থককে প্রকাশ্যে চড় মারা যায়?
ঘটনা ৪
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের জন্য প্র্যাকটিস চলছে।
সেখানে এক টিভি সাংবাদিকের সঙ্গে সাকিবের কথোপকথন।
: আপনি কি মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করেছেন?
Ñ হ্যাঁ।
: নতুন নম্বরটা দিন না প্লিজ!
Ñ না, দেওয়া যাবে না।
পেশাদার সাংবাদিকের প্রতি তীব্র অপমান ছুড়ে দিয়ে গটগট করে হেঁটে চলে গেলেন সাকিব।
প্রশ্ন
পেশাগত কারণেই ক্রিকেটারদের ফোন নম্বর প্রয়োজন সাংবাদিকদের।
কোনো গালগপ্পোর জন্য তো আর মোবাইল নম্বর চাননি ওই সাংবাদিক। তার পরও ব্যক্তিগত নম্বর দিতে আপত্তি থাকতে পারে ক্রিকেটারদের। কিন্তু সেটি তো ভালোভাবে বলা যায়, নাকি?
ঘটনা ৫
জাতীয় দলের সাবেক পেসার মিজানুর রহমান বাবুল। এ বছরের ইংল্যান্ড সফর ও এশিয়া কাপে জাতীয় দলের বোলিং কোচ ছিলেন। তখন মিরপুরের ইনডোরে তামিম ইকবালকে কী একটা বোঝাতে গিয়েছিলেন।
‘আমাকে বোঝাতে আসবেন না। জাতীয় দলে কী...(ছাপার অযোগ্য শব্দ) খেলেছেন, জানি না?’Ñতামিমের শ্লেষাÍক বক্রোক্তি। হতভম্ব, বিমূঢ় বাবুল আর কী বলবেন!
প্রশ্ন
একে তিনি তামিমের কোচ। তার ওপর সাবেক ক্রিকেটার। না হয় তামিমরা এখন বিশ্বমঞ্চের ক্রিকেটার।
কিন্তু পূর্ব-প্রজšে§ এ বাবুলরাই তো সেই প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছিলেন। তেমন একজন সাবেক ক্রিকেটার এবং বর্তমান কোচকে কি এমনভাবে বলতে পারেন তামিম?
ঘটনা ৬
ব্ল–মফন্টেইন টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যথারীতি অসহায় আÍসমর্পণের পথে বাংলাদেশ। আরেকটি উইকেট পতনে ড্রেসিং রুম থেকে ক্রিজের দিকে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। গ্যালারির মাঝ দিয়ে যাওয়ার সময় কানে উড়ে গেল প্রবাসী এক বাংলাদেশি সমর্থকের প্রত্যাশা, ‘মুশফিক ভাই, ফাটিয়ে দিতে হবে কিন্তু।
’ জবাব?
Ñ‘তুই মাঠে গিয়ে ব্যাটিং কর। ’
প্রশ্ন
দেশ থেকে কত দূরে বাস করেন ওই বাঙালিরা! ক্রিকেট দলের সফর মানে প্রবাসীদের কাছে এক খণ্ড দেশ ফিরে পাওয়ার মতো। সেই দেশের পতাকা ওপর থেকে আরো ওপরে উঠবেÑএ প্রত্যাশা তো তাঁরা করতেই পারেন। তার প্রতিদান এভাবে দেবেন ক্রিকেটাররা?
ঘটনা ৭
কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ। সাইট-স্ক্রিনের পেছনের গ্যালারিতে এক বেখেয়ালি দর্শক।
তাঁর মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছিলেন সবাই। কিছুতেই কিছু না হওয়ায় ব্যাট হাতে তেড়ে গেলেন সাকিব। ক্রিজ থেকে একেবারে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে পর্যন্ত। স্যাটেলাইটের কল্যাণে সেই দৃশ্য দেখল গোলার্ধের নানা প্রান্তে থাকা গ্রহবাসী।
প্রশ্ন
ম্যাচ শেষে সাকিব বলেছেন বটে, তিনি মারার জন্য যাননি।
দর্শককে সরানোর জন্যই তাঁর ওই চেষ্টা। কিন্তু টিভিতে দেখা দর্শকদের কাছে সেটি কি বিশ্বাসযোগ্য? জাতীয় দলের অধিনায়কের এমনিভাবে তেড়ে যাবার আচরণ সবাই দেখায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গেল কোথায়?
ঘটনা ৮
চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাবেন তামিম। অধিনায়ক নন বলে ইকোনমি ক্লাসেই তাঁর বিমানভ্রমণের রীতি। কিন্তু দাবি করে বসলেন বিজনেস ক্লাসে যাওয়ার। ভিসা ফর্ম ছিঁড়ে ছুড়ে ফেললেন বিসিবির স্টাফদের সামনে।
আর তামিম বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই বিসিবির এক পরিচালকের সাফ কথা, ‘ও একটা বেয়াদব। আপাদমস্তক বেয়াদব। ’
প্রশ্ন
ক্রিকেটের নীতি-নির্ধারকদের কাছেই ক্রিকেটারদের এমন ভাবমূর্তি! ভক্ত-সমর্থক তথা আপামর দেশবাসীর সঙ্গে তাদের আচরণ তাহলে কেমন হতে পারে, বুঝুন! আর বিসিবির চাকুরেদের সঙ্গে বারবার তামিমের অমন ব্যবহার কি সমর্থনযোগ্য?« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।