ঘরের ছেলেরাই এখন থেকে কি-না অতিথি। সাকিব আল হাসানের 'টিম বাংলাদেশ' আজ থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির তত্ত্বাবধানে চলে যাচ্ছে। আইসিসির সৌজন্যে হোটেলে থাকা, যাতায়াত করা, মিডিয়ার সঙ্গে
কথা বলার অনুমতি নেওয়া। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ আসরের মূল বেদিতে আজই পা রাখছেন সাকিবরা। নিজেদের গায়ে আইসিসি লোগো বসানো জার্সি তোলার আগে গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আইসিসির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সাকিব আল হাসান ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর জন্য একটি বার্তা পেঁৗছে দিয়েছেন।
'এবারের বিশ্বকাপে আমাদের লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনাল। ' গত দেড় বছর ধরে দলের সাফল্য সাকিব আল হাসানকে 'কোয়ার্টার ফাইনাল' পর্যন্তই থামিয়ে রাখেনি, আরও বেশি কিছুর স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। 'শেষ ১৫ মাস আমরা যেভাবে মাঠে পারফর্ম করেছি, আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে পেঁৗছতে পারলে কেন বলব না আরও এগিয়ে যাব আমরা। ' দশম বিশ্বকাপের কনিষ্ঠ অধিনায়কের মুখে এতটা আত্মবিশ্বাস দেখে উপস্থিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরাও চমৎকৃত।
চার বছর আগে ক্যারিবিয়ান বিশ্বকাপে সুপার এইটে গিয়ে ক্রিকেটভুবনকে চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
ভারতকে হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকেও বধ করেছিল। সেদিনের সেই প্রেক্ষাপটের সঙ্গে এখনকার বেশ মিল দেখছেন সাকিব। 'সেবার আমরা বিশ্বকাপে নামার আগে বেশ কিছু ম্যাচ জিতেছিলাম। এবারও নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েকে হারানোর সুখস্মৃতি রয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই এবার মাঠে নামব আমরা।
' বাংলাদেশ এবার গ্রুপ 'এ' থেকে খেলতে নেমে মোকাবেলা করবে ভারত, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও হল্যান্ডের। অন্তত চারটি ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হবে। সাকিব গুনে গুনে নয়, একেকটি ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চান। 'নির্দিষ্ট করে কোনো দলকে টার্গেট করছি না আমরা। যেদিন যে দলের বিপক্ষে খেলতে নামব, সেদিন সে দলকে হারানোর চেষ্টা করব।
ধোনিরা আমাদের প্রথম প্রতিপক্ষ তাই প্রথম লক্ষ্য ভারতকে হারানো। ' চোয়াল শক্ত করে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাকিব তার মিশনের কথা জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেছেন, তারা যেন প্রতিবারের মতো এবারও দলের সঙ্গে থেকে সাপোর্ট করে যায়। 'জানি ঘরের মাঠের এই বিশ্বকাপ ঘিরে দেশের মানুষের প্রত্যাশা কতটা উঁচুতে পেঁৗছেছে। আমি বলব, এভাবেই আপনারা আমাদের পাশে থাকুন।
দেখবেন, নিশ্চয় ভালো কিছু দিতে পারব আমরা। অনেকেই বলছে, এ প্রত্যাশাটা চাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে কি-না; আমি বলছি, চাপ না, এটাই আমাদের অনুপ্রেরণা। ' ১২ ফেব্রুয়ারি কানাডার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে আজ রাতেই চট্টগ্রাম রওনা হচ্ছেন সাকিবরা। যাওয়ার আগে বলে গেছেন, মূল পর্বের আগে হাতে পাওয়া দুটি ম্যাচ থেকেই দলের টুকটাক সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে চান। 'এ মুহূর্তে দলের সবাই বিশ্বকাপে মাঠে নামার জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করছে।
ছেলেদের সবার চোখে আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। দলের সবাই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে। তারপরও যে টুকটাক ভুলভ্রান্তি আছে তা কানাডা আর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে শুধরে নিতে চাই। '
আগের বিশ্বকাপে এক কিশোর হয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এবারে তিনিই বিশ্ব ক্রিকেটে পরিণত একজন।
নিশ্চয় তার কাছে এবার দল বেশি কিছু আশা করছে? 'আমি মনে করি না আগের বিশ্বকাপের সাকিবের সঙ্গে এবারের সাকিবের খুব বেশি পার্থক্য রয়েছে। আগেও আমি ব্যাটিং-বোলিং করে দলকে সাহায্য করতাম, এবারও তাই করছি। তবে এটা ঠিক, ঘরের মাঠে একটা বাড়তি উত্তেজনা কাজ করছে নিজের মধ্যে। ' সাকিবের মতো বিশ্বকাপ ঘিরে এই জ্বরে পড়েছেন দলের প্রত্যেক সদস্য। আর সে কারণেই বেশ দাপটের সঙ্গে সাকিব জানালেন, 'মিরপুর আর চট্টগ্রাম মিলে আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দলে কোনো চোট নেই। আশা করি ভালো কিছুই হবে। আমাদের সামর্থ্য রয়েছে এই চেনা পরিবেশ আর উইকেটে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার। ' সাকিবের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণার পর সমর্থকরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন, 'আন্ডারডগ' নয়, বাংলাদেশ তাদের মাটিতে সত্যিকারের 'ফেভারিট' দল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।