মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের সরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান গতকাল সোমবার সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তবে যেকোনো সময় এই অভিযান শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। ভোরের দিকে এই অভিযান চালানো হতে পারে। এতে ব্যাপক রক্তপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুরসি গত ৩ জুলাই সেনা হস্তক্ষেপে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই তাঁর সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুডের হাজার হাজার নেতা-কর্মী রাজধানী কায়রোর পূর্বাঞ্চলে রাব্বার আল আদাবিয়া মসজিদের চারপাশে এবং পশ্চিমে নাধা স্কয়ারে অবস্থান নেয়।
এর পর থেকে সেখানেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তার অনুসারীরা।
মিসরের নিরাপত্তা বাহিনী ও একজন সরকারি কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, মুরসির সমর্থকদের সরিয়ে দিতে ভোরের দিকে প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। তবে সূত্রগুলো এটা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি, ঠিক কখন পুলিশ ওই ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করবে। মুরসিপন্থীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযানে ব্যাপক রক্তপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই আশঙ্কায় আগেও মুরসিপন্থীদের সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও পরে তা বাস্তবায়ন করা থেকে পিছিয়ে যায় অন্তর্বর্তী সরকার।
অভিযান সম্পর্কে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাবিল ফাহমি গতকাল বলেন, দুটি প্রক্রিয়া সমানভাবে বিবেচনায় রয়েছে। খুব শিগগির সংকটের সমাধান করতে হবে—সেটা সংলাপের মাধ্যমে হোক বা আইন প্রয়োগ করে হোক। তিনি দাবি করেন, বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে সরিয়ে দিতে তিন সপ্তাহ ধরে সরকার আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরাও যেন সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
ইতিমধ্যে তারা অভিযানের আশঙ্কায় সমর্থকদের রাস্তায় নামতে বলেছে। তারা নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে বালির বস্তা ও পাথর জড়ো করে রেখেছে।
মুস্তাফা আল খতিব নামের একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা যারা এখানে অবস্থান করছি, তারা মানসিকভাবে সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছি। এখানে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়া এবং বিক্ষোভস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান প্রভৃতি।
এদিকে রক্তপাতের আশঙ্কায় পশ্চিমা ও আরব বিশ্বের অনেক দেশের দূত এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিযান থেকে বিরত থাকতে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ দিচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, মুরসিপন্থীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযান শিগগিরই শুরু হতে পারে, এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে বিক্ষোভকারীদের সমাগম বেড়ে গেছে। এ কারণেই অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানায়, মুরসিপন্থীদের সরিয়ে দিতে অভিযান শুরুর ব্যাপারে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির ওপর কট্টরপন্থী সামরিক কর্মকর্তাদের চাপ রয়েছে।
রয়টার্স ও বিবিসি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।