খবর: "সার্কভুক্ত দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। "
এই খবরে খুশি হব নাকি দু-চিন্তিত হব বুঝতে পারতেছি না
রিজার্ভ বৃদ্ধির যে কারণ গুলো উল্লেখ করা হয়েছে তা নিম্নরুপ:
১) আমদানি ব্যয় কমে যাওয়া
২) তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় বৃদ্ধি
৩) প্রবাসী (মূলত মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিক) রেমিটেন্স বৃদ্ধি
সুসংবাদ হবার কথা ছিল:
আমদানি নির্ভর জিনিসের দাম কমার কথা কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন জিনিসের দাম একবার বাড়লে সেটা কি কমে কখনও?
আমদানি নির্ভর জিনিস যেমন: তেল, ডাল, আটা এর দাম কমেছে কি ???
প্রথম আলো লিখেছে "অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমেছে"
আমার প্রশ্ন নিচের কোন দ্রব্যটির আমদানি কমেছে?
১) গাড়ি আমদানি কি কমেছে ?
২) আইপিএস আমদানি কি কমেছে ?
৩) সিগারেট আমদানি কি কমেছে ?
৪) এয়ার কন্ডিশনার আমদানি কি কমেছে?
৫) ভারতীয় সানি লিওন, ক্যাটরিনা, কারিনা, ড্রেস আমদানি কি কমেছে
কিন্তু দু-সংবাদ গুলো পাচ্ছি সাথে সাথে:
১) ৭০ লাখ প্রবাসী পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। পূর্বে ১০০০ ডলার পাঠিয়ে যেখানে পেত ৮৪ হাজার টাকা সেখানে বর্তমানে পাচ্ছে ৭৭ হাজার (নিজেই ভুক্তভুগি); অর্থাৎ প্রবাসী পরিবারের আয় ১ হাজার ডলারে ৭ হাজার টাকা কমলেও জিনিসপত্রের দাম ১ টাকাও কমেনি। অর্থাৎ বর্তমানে তাদের বাজেট ঘটতিতে ভুগতে হবে।
২) গার্মেন্টস মালিকরা যে রপ্তানি আয় করে দেশের রিজার্ভ বাড়াচ্ছেন সেই একই মালিকরা এখন ডলারের দাম কমার অজুহাতে শ্রমিকদের বেতন বাড়াবে না।
ফলাফল প্রায় ৫০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত।
৩) উৎপাদন মুখী শিল্পের কাঁচা মাল আমদানি মারাত্মক ভাবে কমে গেছে যার প্রভাব পরবে আগামী ২/৩ বছর পরে। কারণ একটা ভারি শিল্প যেমন তৈরি পোশাক শিল্পের কাপড় তৈরি করা একটা টেক্সটাইল মিল স্থাপন করতে মূলত ২-৩ বছর লেগে যায়। এখন যদি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির সাথে মিল রেখে তার সাথে সম্পর্কিত শিল্প কারখান স্থাপনের হার কমে যায় তবে আগামী ২/৩ বছর পরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির হার কমে যেতে বাধ্য।
সারাংশ: দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ হলো বাগানে পানি দেওয়ার মত।
পানির অভাবে যেমন গাছ নেতিয়ে পড়ে একই ভাবে গাছের গোঁড়ায় বেশি পানি জমা হলে বাগানের গাছ মরে যেতে বাধ্য। বাগানের গাছের বৃদ্ধি সর্বোচ্চ হবে যদি আমারা যতটুকু পানি প্রয়োজন ঠিক ততটুকুর সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।