আজকের প্রথম আলোতে খবর তা দেখে মন আনন্দে নেচে উঠল।
বড়াইগ্রামে সাংসদ আবদুল কুদ্দুসের দাবি
পুলিশকে আ.লীগ নেতা-কর্মীদের আদেশ মানতে হবে
নাটোর প্রতিনিধি | তারিখ: ১৪-১০-২০১০
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন পর গতকাল বুধবার প্রথম দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। উপজেলার বনপাড়া বাইপাস মোড়ে আয়োজিত কর্মিসভায় স্থানীয় সাংসদ আবদুল কুদ্দুসসহ দলীয় নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে তাঁদের শায়েস্তা করার হুমকি দিয়েছেন। আবদুল কুদ্দুস বলেছেন, পুলিশ বাহিনী সরকারের একটি অংশ মাত্র। কাজেই পুলিশকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের আদেশ মানতে হবে।
অন্যথায় বদলি হয়ে যেতে হবে।
বড়ইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন দলের প্রবীণ নেতা আফতাব উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘সানাউল্লাহ নূর নিজ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হয়েছেন। অথচ প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ওই মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে।
’
আবদুল কুদ্দুস আরও বলেন, ‘তারা (পুলিশ) পক্ষাশ্রিত হয়ে নিরপরাধ লোকদের হয়রানি করছে। যারা আসামি না তাদেরও হয়রানি করছে। এর জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। ’
সানাউল্লাহ নূর হত্যাকাণ্ডকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে সাংসদ বলেন, ‘এই ঘটনা কেন্দ্র করে বিএনপিকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে সংঘবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
’
সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বলেন, ‘পুলিশের হয়রানি বরদাশত করা হবে না। প্রয়োজনে পুলিশকে শায়েস্তা করতে হবে। ’ উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ডিবি পুলিশ (তদন্তকারী সংস্থা) যদি কারও বাড়িতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে তাহলে তাঁদের আটক করে আমাদের খবর দেবেন। আমরা তাদের বিচার করব। অন্তত আগামী তিন বছর পুলিশকে আমাদের কথামতো চলতে হবে।
’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান, গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, সানাউল্লাহ নূর হত্যা মামলার প্রধান আসামি জাকির হোসেনের স্ত্রী বেগম নাজমা জাকির, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আইনজীবী আরিফ সরকার প্রমুখ।
রাসেল তিন দিনের রিমান্ডে
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সানাউল্লাহ নূর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা আসামি ছাত্রলীগের কর্মী রাসেলকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হান্নান রাসেলকে নাটোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল বিকেলে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসআই আবদুল হান্নান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির
ভিডিও ফুটেজ দেখে সানাউল্লাহ নূর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির নেতারা। গতকাল বিকেলে বনপাড়া বাজারে সমিতি আয়োজিত শোক ও প্রতিবাদ সভা থেকে তাঁরা এই দাবি জানান।
সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, সমিতির সদস্য আবদুল হান্নান ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
বক্তারা বলেন, এমনিতেই উপজেলা চেয়ারম্যানরা নির্যাতিত ও বঞ্চিত।
এর ওপর সানাউলাহ নূরের মতো একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। খুনি যে দলেরই হোক না কেন, তাঁদের যেন কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া না হয়।
এর আগে প্রায় ৫০ জন উপজেলা চেয়ারম্যান বনপাড়ায় পৌঁছে সানাউল্লাহ নূরের কবর জিয়ারত করেন এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সান্ত্বনা দেন। বনপাড়া বাজারের যে স্থানে তাঁকে হত্যা করা হয় সেখানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপজেলা চেয়ারম্যানরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।