তুহিন আর মিলির আজ বিয়ের চার বছর হবে। আজ মানে এইতো আর দুই ঘণ্টা পর ঘড়ির কাঁটা ১২টার ঘরে গেলেই ওদের বিয়ের চার বছর। মিলি হাতে ফোনটা নিয়ে অপেক্ষা করছে। ১২টা বাজলে ও আজ তুহিনকে ফোন করবে। বিয়ের কথা মনে হতেই মিলির মন খারাপ হল।
বিয়ের চার বছর, অথচ ও একটিবারের জন্যও ওর শ্বশুর বাড়ি যায় নাই! যদিও ওর শ্বশুরবাড়ি মিনিট তিনেক পথ দূরে, ভালাবাসার বিয়ে বলে ওর শাশুড়ি এখনও মেনে নেয় নাই! কি অদ্ভুত! অথচ পড়াশুনা- বংশ মর্যাদা- বাড়ি-টাকা পয়সা সব দিক দিয়ে মিলির পরিবার অনেক বেশি এগিয়ে!
সামনের মাসে মিলির মেয়ে আসছে পৃথিবীতে! মিলি-তুহিনের প্রথম সন্তান! মেয়ে হবে জেনেও তুহিন ছেলেই হবে ধরে রেখেছে! মিলি মাঝে মাঝে ভাবে কেমন করে ও এই ছেলের প্রেমে পড়েছিলো! দিনের পর দিন মিলি ওর বাবার বাড়িতে, ওর আত্মীয় স্বজনরা দিনের পর দিন এইটা নিয়ে খোঁটা- টিপ্পনী দিচ্ছে, কিন্তু তুহিন ঠিক’ই ওর মতন আছে, রজ সন্ধ্যায় “বউ” এর কাছে আসছে!
বাবুটা পেটে আসার পর থেকে মিলি ওর স্কুলের চাকুরীটা ছেড়ে দিয়েছে, তারপরও দুইটা টিউশনি করতো, তারই টাকা একটু একটু জমিয়েছে এই ৮টা মাস। কারনটা আর কিছু’ই না, বাবুটার জন্য নিজের টাকায় জামা কিনবে বলে!
নাহ, তুহিনটাকে ফোন করার জন্য অপেক্ষা করাটা বিরক্তকর! মিলি টিভিটা ছেড়ে দিয়ে এলোমেলোভাবে চ্যানেল ঘুরলো। নাহ, দেখার মতন কিছু’ই হচ্ছে না! হটাৎ একটা নাটক দেখে থামল। বিয়ের দৃশ্য। বিয়ের দৃশ্য দেখলে মিলির মন খারাপ হয়! ওর বিয়ের কোন ছবি নাই! এমনকি বিয়ে উপলক্ষে তুহিন ওকে একটা শাড়ি পর্যন্ত কিনে দেয় নাই!
দশদিন পর, মিলি ওর ছোট বোন অ্যানিকে নিয়ে দোকানে গেলো, বাবুটার জন্য একটা দোলনা, একটা মশারী কিংবা কিছু কাপড় কিনবে বলে।
এলোমেলো ভাবে ওরা দোকান ঘুরছে, হটাৎ একটা দোকানের ডিসপ্লেতে চোখ গেলো মিলির, একটা লাল শাড়ি! নাহ, এরপর আর কোন দোকানেই- কোন কিছুই মিলির আর ভালো লাগছে না! লাল শাড়ি- মিলির মেয়ে যদি কখনও মায়ের বিয়ের শাড়ি দেখতে চায়!
“মিলির বিয়ের কোন শাড়ি নাই”- মিলির মাথায় এই কথাটাই কেবল ঘুরছে! আচ্ছা এই শাড়িটার দাম নয় হাজারের মধ্যে হবে তো?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।