পারলৌকিক হ্যাঙ্গারে হ্যাঙ্গ হয়ে আছে ইহকাল / পুনরায় জন্ম নেয়া এখন বিশেষ প্রয়োজন
গত রাতে হঠাৎ তিনচারটা কুকুরের সমস্বর ক্রন্দন আমার বুকে একটা কাঁপন ধরিয়ে দিলো। প্রকৃতির সাথে এই অবলা প্রাণীগুলোর যোগাযোগটা খুবই নিবিড়। সে কারণেই হয়তো প্রাকৃতিক যে কোনো বিপর্যয়ে আঁচ করে ফেলে এরা। দেশের একটা দুর্গতি হয়তো অপেক্ষা করে আছে। কী হতে পারে সেটি! দফায় দফায় ভূকম্পন কি ইঙ্গিত করে না যে ভূমিকম্পে সারা দেশ মরুভূমিতে পরিণত হতে পারে; বহু মানুষের প্রাণনাশ হতে পারে? অথবা অ্যানথ্রাক্স মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়তে পারে আর তাতে দেশ হয়তো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবে! অথবা ঈদের পর দেশের প্রধান বিরোধী দল সরকার পতনের যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সেই আন্দোলন গৃহযুদ্ধে রূপ নিতে পারে? নিতেই পারে।
প্রধান বিরোধীদলের সহযোগী যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠনের নেতাদের বিচারের আওতায় আনা হলে তাদের বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে। সুতরাং দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আসলে তা কোন উপায়ে হবে সে বিষয়ে আঁচ করা একটু শক্ত।
বহুদিনের অব্যবস্থাপনা আর তার সাথে যোগ হওয়া দূর্নীতি দেশটাকে বানিয়ে ফেলেছে শুয়োরের খোয়ার (হযরত কার্ল মার্কসের ভাষায়)। বিল্ডিং প্যানে দূর্নীতি, ফ্যামিলি প্ল্যানে নির্বুদ্ধিতা, নগর প্ল্যানে অদূরদর্শী পরিকল্পনা ইত্যাদি মিলিয়ে দেশে যেভাবে গড়ে উঠেছে সব কিছু তাতে দোষটা দেয়া যায় জাতীয়তাবাদী দলকেই।
অন্যভাবে দেখলে আবার যায়ও না। একটা যুদ্ধোত্তর দেশকে গড়ে তোলবার জন্য যে পরিমাণ সময় প্রয়োজন শেখ মুজিবুর রহমান সে সময় পাননি। তাঁর মৃত্যুর পর যে বা যারা যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে তাদের হাত পা ছিলো বাধা। বাঙলাদেশকে একটি অর্থনৈতিকভাবে এমন এক ধরণের প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে এগিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র চলাছিলো যাতে এর নাগরিকরা সর্বচ্চ ক্রয়-ক্ষমতা বা ভোগ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। তাদের শিক্ষাও এমন ভাবে দেয়া হয় যাতে পরিমিত ভোগ ছাড়া অন্য কিছু তারা ভাবতেও না শেখে।
তাদের ভাবনায় টানার জন্য লাগাম সৃষ্টি করা হয় পরিকল্পিত বাণিজ্যিক শিক্ষায়নের মাধ্যমে। আর এভাবেই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে আমাদের দেশের বয়স বেড়ে যাচ্ছে আর যেহেতু এই দেশ অন্য কারো পরিকল্পনা বা প্রজেক্টের অংশ তাই এদেশের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দায় নিতে পারছে না কোনো সরকারই। আমেরিকার আগ্রাসী চেহারাটা আমরা সবাই কমবেশি জানি। আমরা হয়তো এও আঁচ করতে পারি এশিয়া মহাদেশেও এরকম একটা আমেরিকা আছে যারা এশিয়াকে শাসন বা শোষন বা নিয়ন্ত্রণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সে হচ্ছে আমাদের প্রতিবেশী ভারত।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার দায়টি তাই যেকোনো শিশুও বুঝতে পারে যে এত বড় একটা বাজার ওদের কী প্রয়োজন। মুক্তোর মত পেঁয়াজ, সুমিষ্ট চিনি, আমাদের রূপালি অহংকার ইলিশ সবই ওরা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পাটকলগুলো ধ্বংশের মূল প্ল্যানটা হয়তো ওদেরই যেমন কাগজের মিলগুলো। এভাবে বাঙলাদেশকে পুরোপুরি উৎপাদনহীন করে দিয়ে নিজেরাই উৎপাদন করছে পাট ও আর আর সবকিছু। কিছু উচ্চ ফলনশীল খাদ্য-শস্য তারা আমাদের কাছে বিক্রির জন্য উৎপাদন করছে।
আপনারা হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন চাইনিজ কমপিউটার এক্সেসরিজগুলো এখন মার্কেটে আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে আর সেই জায়গাগুলো দখল করছে ইন্ডিয়ান জিনিশ। এভাবে আমরা হয়ে উঠছি শুধুই শ্রমিক এবং শ্রমের পয়সা খরচ করে ভোক্তা। শুধুই ভোগ করা শিখছি। এই বিশাল জনগোষ্ঠী মুসলমান হওয়ায় তারা কোটি কোটি টাকার গরু বিক্রি করতে পারছে। কোটি কোটি মানুষকে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত করতে পারলে কোটি কোটি টাকার ঔষধ বিক্রি করা যাবে।
এভাবে পরনির্ভশীল প্রাণীতে পরিণত হতে হতে আমাদের এই জাতি একসময় হয়ে উঠবো বিশ্ব নাগরিক। আমাদের বাঙালী বা বাংলাদেশী পরিচয়টা বা সংষ্কৃতিটা হয়তো আমরা হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছি। চলুন ষড়যন্ত্রগুলো বোঝার চেষ্টা করি। খাদ্যাভ্যাসসহ যাবতীয় ভোগ থেকে নিজেকে সংযত করি। শুধুমাত্র প্রয়োজন ছাড়া কোনো কনজুম থেকে নিজেকে দূরে রেখে সঠিক শিক্ষার চর্চা ও জাতিকে এগিয়ে নেবার চেষ্টা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।