গল্পের রাজত্বে বসবাস করছি আপাতত
পৃথিবীর দীর্ঘতম চলচ্চিত্রটির নাম কি? গন উইথ দ্য উইন্ড ৩ ঘন্ট ৪০ মিনিটের ছবি, বেনহারের দৈর্ঘ ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট, লরেন্স অব এরাবিয়া ৩ ঘন্টা ৪৭ মিনিটের। এই তিনটি ছবিই অস্কারে সেরা ছবির পুরস্কার পেয়েছে। তবে শুধুমাত্র দৈর্ঘের বিচারে যে ছবিটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ছবি বলে স্বীকৃতি দেয়া হয় সেটির নাম কিউর ফর ইনসোমেনিয়া। ঘুম হয় না যাদের তাদের রোগ সারাতে এ ছবি সত্যিই কাজে লাগে কি না আমি জানি না, কারণ ৮৭ ঘন্টা [৫২২০ মিনিটের] এ ছবি আমি দেখিনি, কে দেখেছে তাও জানি না। চতুর্থ জন হেনরি টিমিস পরিচালিত এ ছবি টানা দেখতে চাইলে সাড়ে তিনদিন না-খেয়ে, না-ঘুমিয়ে দেখতে হবে।
নিরীক্ষামূলক এ ছবিতে কবি এ ডি গ্রোবান মাত্র ৪০৮০ পৃষ্ঠার একটা কবিতা পড়েন, এর পাশাপাশি কিছু এক্সরেটেড ভিডিও ও হেভি মেটাল গান দেখান হয়। এবং মানুষের ঘুমের উপর যথার্থই একটি নিরীক্ষার সুযোগ এ ছবি দিয়েছে বলা যায়। তবে ৪ ঘন্টার করে একটি ডিভিডিতে ধারণ করলেও এ ছবি যে দেখবে তার ২৯ বার ডিস্ক বদলাতে হবে, এই ২৯ বারে ঘুম নিশ্চয়ই কেটে যাবে! ১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবি টানা প্রদর্শিত হয় দ্য স্কুল অব দ্য আর্ট ইন্সটিট্যুট শিকাগোতে। অতি উৎসাহীদের জন্য সুখবর কোন হলে দেখানো না হলেও ডিভিডিতে এ ছবি পাওয়া যায়।
এটুকু পরেই যারা ক্লান্ত হয়ে গেছেন, তারা এবার একটু নড়েচড়ে বসুন, নিরীক্ষামূলক আরেক ছবির নাম সিনাম্যাটন, এটির দৈর্ঘ ১৫০ ঘন্টা।
৬ দিন ৬ ঘন্টা ব্যাপী এই ছবিকে অবশ্য কেউ মূল চলচ্চিত্র ঘরানা ফেলতে চায় না। ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবি আসলে স্রেফ গিনিজ বুকে ঠাই পাওয়ার উদ্দেশ্যেই তৈরি।
এরিখ ভন স্ট্রোহাইমের গ্রিড ছবিটি প্রায় সাড়ে আট ঘন্টার। এটি সবচেয়ে দীর্ঘ নির্বাক ছবি। অবশ্য ১৯২৫ সালে মুক্তি পাওয়ার পর একবারই মাত্র এ ছবি সাড়ে আট ঘন্টা দেখানো হয়েছিলো, এরপর ছবিটিকে কেটে ২ ঘন্টায় আনা হয়, অবশ্য পরিচালক এই কর্তন কখনোই মেনে নেননি।
১৯২৮ সলে চীনে মুক্তি পাওয়া দ্য বার্নি অব দ্য রেড লোটসকে বিশ্বের দীর্ঘতম নির্বাক ছবির স্বীকৃতি দেয়া হয়। ঝ্যাং সিচুয়ান পরিচালিত ২৯ ঘন্টার এ ছবিকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ১৮টি পর্বে ভাগ করে প্রচার করতো।
পপ আর্টের গুরু এন্ড্রি ওয়্যারহল এম্পারার নামে একটি ছবি করেছিলেন যার দৈর্ঘ ৮ ঘন্টা। এই সব অতিদীর্ঘ ছবিগুলো কিন্তু সিনেমাহল বা দর্শক তেমন করে গ্রহণ করেনি, স্রেফ রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছে। তুলনায় সাড়ে ছয় ঘন্টার ছবি ওয়ার এণ্ড পিস দর্শক নন্দিত হয়েছে।
অস্কার পাওয়া লরেন্স অলিভারের হ্যামলেট ৪ ঘন্টার ছবি। পোলান্ডের ডকুমেন্টারি ছবি সোয়া সাড়ে নয় ঘন্টা দৈর্ঘের।
পোলিশ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অত্যচারের উপর নির্ভর করে তৈরি এ ছবি অস্কারও পেয়েছিলো। জার্মানীতে ১৯৮০ সালে তৈরি বার্লিন আলেক্সান্দাপ্লাজ প্রায় ৩৯ ঘন্টার [৯৩১ মিনিট],১৯৮৪ সালে হাইমাট ছবিটিও এর কাছাকাছি দৈর্ঘের [৯৪০ মিনিট]। ২০০৬ সালে জার্মানিতে ম্যাতরিয়োসকা মুক্তি পায় যার দৈর্ঘ ৯৭ ঘন্টা! ১৯৬৮ সালে চেকোসাভাকিয়া থেকে মুক্তি পেয়েছিলো নান ছবিটি।
বুরাখ বোসনিৎস পরিচালিত এ ছবির দৈর্ঘ ৯০৮ মিনিট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।