শিরোনামহীনের চতুর্থ অ্যালবাম 'শিরোনামহীন-রবীন্দ্রনাথ' অভ্যুদিত। বেশকিছুদিন অপেক্ষার পর প্রাপ্তিপূর্ণ হল। এতটাই চমৎকার হয়েছে যে অপেক্ষার আবেদনটি এখন সকল অনুক্ষণ কেঁড়ে নিয়েছে, শিরোনামহীন শুভবোধে বুঁদ হয়ে আছি, এতটা সপ্রাণ মাদকতা শিরোনামহীন ছাড়া আর কে দিতে পারে। অন্ত:করণ থেকে শিরোনামহীনকে নিরন্তই সাধুবাদ।
আমি মুগ্ধতার কিছু ...কথা বলব (যদিও সংগীতশাস্ত্রে আমি অজ্ঞ)
1.গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ>>শুরুটা দারুণ, সিলভার ফ্লুটের আবহ ভয়াবহ আবেশ সৃষ্টি করে.......
2.পুরানো সেই দিনের কথা>>অসাধারণ, অসাধারণ এবং অসাধারণ।
উপমৌত্তর।
3.শাওনগগণে ঘোর ঘনঘটা>>এতটা মাদকতা আর কোথায় পাব!!!! আহা!!
4.ফুলে ফুলে>>ভিন্ন স্বাদ পেলাম, মূল গানটিও যুক্ত হয়েছে, সুন্দর।
5.কিছু বলব বলে এসেছিলেম>>সারোদের ব্যবহার রয়েছে। কিছু জায়গা চমৎকার।
6.যেতে যেতে একলা পথে>>বুলেট কিংবা কবিতা খুঁজে পেলাম.......
8.তুমি কি কেবলই ছবি>>অসাধারণ এবং অসাধারণ।
9.শুধু তোমার বাণী নয় গো>>অসাধারণ।
যারা নতুন স্বাদ পেতে চান এবং শিরোনামহীন মাদকতায় বুঁদ হতে চান তাদের সবার প্রতি অ্যালবামটি কিনে মন্ত্রমুগ্ধকর গানগুলো শোনার জন্য আনুরোধ রইল। (আমি শিরোনামহীনের একজন অতিএকরোঁখা অনুরাগী, হয়ত উচ্ছ্বসিত বেশি হই। )
নিচের গানের কথা গুলো কপি-পেস্ট করা (বানান শুদ্ধীকরণ ব্যতিরেকে)::
1.গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
আমার মন ভুলায় রে।
ওরে কার পানে মন হাত বাড়িয়ে লুটিয়ে যায় ধুলায় রে।
।
ও যে আমায় ঘরের বাহির করে, পায়ে-পায়ে পায়ে ধরে
মরি হায় হায় রে।
ও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে; যায় রে কোন্ চুলায় রে।
ও যে কোন্ বাঁকে কী ধন দেখাবে, কোন্খানে কী দায় ঠেকাবে–
কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে ভেবেই না কুলায় রে।
2.পুরানো সেই দিনের কথা
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।
আয় আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়।
মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।
মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়–
বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়।
হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি, গেলেম কে কোথায়–
আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয়
3.শাওনগগণে ঘোর ঘনঘটা
শাওনগগনে ঘোর ঘনঘটা, নিশীথযামিনী রে।
কুঞ্জপথে, সখি, কৈসে যাওব অবলা কামিনী রে।
উন্মদ পবনে যমুনা তর্জিত, ঘন ঘন গর্জিত মেহ।
দমকত বিদ্যুত, পথতরু লুন্ঠিত, থরহর কম্পিত দেহ
ঘন ঘন রিমঝিম, রিমঝিম রিমঝিম, বরখত নীরদপুঞ্জ।
শাল-পিয়ালে তাল-তমালে নিবিড়তিমিরময় কুঞ্জ।
কহ রে সজনী, এ দুরুযোগে কুঞ্জে নিরদয় কান
দারুণ বাঁশী কাহে বজায়ত সকরুণ রাধা নাম।
মোতিম হারে বেশ বনা দে, সীঁথি লগা দে ভালে।
উরহি বিলুন্ঠিত লোল চিকুর মম বাঁধহ চম্পকমালে।
গহন রয়নমে ন যাও, বালা, নওলকিশোরক পাশ।
গরজে ঘন ঘন, বহু ডর পাওব, কহে ভানু তব দাস
4.ফুলে ফুলে
ফুলে ফুলে ঢ'লে ঢ'লে বহে কিবা মৃদু বায় ,
তটিনী হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়।
পিক কিবা কুঞ্জে কুঞ্জে কুহু কুহু কুহু গায় ,
কী জানি কিসেরই লাগি প্রাণ করে হায় - হায়।
5.কিছু বলব বলে এসেছিলেম
কিছু বলব বলে এসেছিলেম,
রইনু চেয়ে না বলে। ।
দেখিলাম, খোলা বাতায়নে মালা গাঁথ আপন-মনে,
গাও গুন্-গুন্ গুঞ্জরিয়া যূথীকুঁড়ি নিয়ে কোলে। ।
সারা আকাশ তোমার দিকে
চেয়ে ছিল অনিমিখে।
মেঘ-ছেঁড়া আলো এসে পড়েছিল কালো কেশে,
বাদল-মেঘে মৃদুল হাওয়ায় অলক দোলে।
6.যেতে যেতে একলা পথে
যেতে যেতে একলা পথে নিবেছে মোর বাতি।
ঝড় এসেছে ওরে ওরে, ঝড় এসেছে ওরে এবার
ঝড়কে পেলেম সাথি॥
আকাশকোণে সর্বনেশে ক্ষণে ক্ষণে উঠছে হেসে,
প্রলয় আমার কেশে বেশে করছে মাতামাতি॥
যে পথ দিয়ে যেতেছিলেম ভুলিয়ে দিল তারে,
আবার কোথা চলতে হবে গভীর অন্ধকারে।
বুঝি বা এই বজ্ররবে নূতন পথের বার্তা কবে—
কোন্ পুরীতে গিয়ে তবে প্রভাত হবে রাতি
7.সকাতরে ওই কাঁদিছে
সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।
কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।
।
ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।
যা-কিছু পায় হারায়ে যায়, না মানে সান্ত্বনা। ।
সুখ-আশে দিশে দিশে বেড়ায় কাতরে–
মরীচিকা ধরিতে চায় এ মরুপ্রান্তরে।
।
ফুরায় বেলা, ফুরায় খেলা, সন্ধ্যা হয়ে আসে–
কাঁদে তখন আকুল-মন, কাঁপে তরাসে। ।
কী হবে গতি, বিশ্বপতি, শান্তি কোথা আছে–
তোমারে দাও, আশা পূরাও, তুমি এসো কাছে। ।
।
8.তুমি কি কেবলই ছবি
তুমি কি কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা।
ওই-যে সুদূর নীহারিকা
যারা করে আছে ভিড় আকাশের নীড়,
ওই যারা দিনরাত্রি
আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী গ্রহ তারা রবি,
তুমি কি তাদের মত সত্য নও।
হায় ছবি, তুমি শুধু ছবি। ।
নয়নসমুখে তুমি নাই,
নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই– আজি তাই
শ্যামলে শ্যামল তুমি, নীলিমায় নীল।
আমার নিখিল তোমাতে পেয়েছে তার অন্তরের মিল।
নাহি জানি, কেহ নাহি জানে–
তব সুর বাজে মোর গানে,
কবির অন্তরে তুমি কবি–
নও ছবি, নও ছবি, নও শুধু ছবি।
9.শুধু তোমার বাণী নয় গো
শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু, হে প্রিয়,
মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো॥
সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা
কেমন করে মেটাব যে খুঁজে না পাই দিশা—
এ আঁধার যে পূর্ণ তোমায় সেই কথা বলিয়ো॥
হৃদয় আমার চায় যে দিতে, কেবল নিতে নয়,
বয়ে বয়ে বেড়ায় সে তার যা-কিছু সঞ্চয়।
হাতখানি ওই বাড়িয়ে আনো, দাও গো আমার হাতে—
ধরব তারে, ভরব তারে, রাখব তারে সাথে,
একলা পথের চলা আমার করব রমণীয়...........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।