সুখ চাহি নাই মহারাজ—জয়! জয় চেয়েছিনু, জয়ী আমি আজ। ক্ষুদ্র সুখে ভরে নাকো ক্ষত্রিয়ের ক্ষুধা কুরুপতি! দীপ্তজ্বালা অগ্নিঢালা সুধা জয়রস, ঈর্ষাসিন্ধুমন্থনসঞ্জাত,সদ্য করিয়াছি পান—সুখী নহি তাত, অদ্য আমি জয়ী।
প্যাট্রিক ইংল্যান্ডের ছেলে। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বপ্নে বিভোর হয়ে ট্রট্স্কির “এক দেশ নয়, সমান্তরালভাবে সকল দেশে প্রলেতারিয়েত বিপ্লব”এর তত্বে উদবুদ্ধ হয়ে তার অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে ঘাঁটি গড়া। আমার ঘাঁটিও তখন ছবির মত সুন্দর ভিয়েনাতে।
ঘটনাচক্রে একদিন তার সাথে আমার পরিচয়, মতাদর্শিক ভাব বিনিময়, সাউথ এশিয়া তথা বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ঠিকুজি ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে জানতে তার উৎসাহের কমতি নেই। আমিও তখন ইউরোপের সমাজতন্ত্রপন্থীদের চিন্তার গতি প্রকৃতি জানতে ও বুঝতে উদগ্রীব। তো এই সূত্র ধরেই প্যাট্রিকের সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। সে তখন তুমুল উৎসাহে অস্ট্রিয়াস্থ Sozialistische Jugend বা জোৎসিয়ালিসটিশে ইয়্যুগেনড (Socialist Youth) নামক একটা বামপন্থি ভাবাদর্শগত সংগঠনের সাথে কাজ করে চলেছে। মতাদর্শিক দায়বদ্ধতার বেড়াজালে আটকে প্যাট্রিকের হাত ধরে আমিও ভিড়ে গেলাম সেই সংগঠনে।
এটা ছিল প্রায় এক যুগ আগের কথা।
সোসিয়ালিস্ট ইয়্যুথের ছেলেমেয়ে, বিশেষ করে প্যাট্রিকের সাথে চিন্তা ও পাঠজনিত ভাববিনিময়ের সূত্রে প্রায়ই আমরা নিজের নিজের পঠিত বই আদান প্রদান করতাম। সেরকমই এক বরফে ঢাকা তীব্র শীতের সন্ধ্যাগুলোতে আমি খুব আগ্রহ ভরে Kate Millett-এর Sexual Politics বইটা পড়ছিলাম। তো এমনই এক সন্ধ্যায় ফোন করে প্যাট্রিকের আমার ছোট্ট এপার্টমেন্টে আগমন। হাতে তার এক বোতল Chianti রেড ওয়াইন আর একটা কবিতার বই।
একটা জম্পেশ আড্ডার আভাস পেয়ে আমিও নড়েচড়ে বসলাম।
- তুমি কবিতাও পড়ো নাকি? আমার কৌতুহলী প্রশ্ন।
- বাহ, বিপ্লব করতে গেলে কবিতা পড়তে মানা বুঝি?
- না না, আমি তা মীন করিনি, এই বলে তাকে আস্বস্ত করে আমি তার হাত থেকে কবিতার বইটা টেনে নিয়ে চোখ বুলালাম।
ব্রায়ান প্যাটেন -এর Love Poems! লাভ পয়েমস??? মানে পুতু পুতু ভালোবাসার কবিতা! ছে:! আমার তাচ্ছিলের মুখভঙ্গী সম্ভবত প্যাট্রিক টের পেযে গিয়েছিল।
“কাম অন ডিউড! ওয়াই ডোন্ট ইয়্যু গিভ আ কুইক লুক থ্রু ইট? আই এসিওর ইটস আ জেইম টু রীড, আ শীয়ার এনটারটেইনমেন্ট, উইথ ফুল অফ রেপসোডিকাল রোমান্টিসিজম”, খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো প্যাট্রিক।
তার সিরিয়াস ভঙ্গি দেখে আমি ভাবলাম দেখিই না কী আছে এই কবতে গুলোতে। ওয়াইনের গ্লাসে আলতো একটা চুমুক দিয়ে প্যাটেনের পাতা উল্টালাম। অফ দ্য রেকর্ড বলে রাখি, ইংরেজী কবিতার, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়ান যুগের চসার থেকে শুরু করে ইয়েটস কীটস বায়রন ফ্রস্ট সহ তাবড় তাবড় কবিকুলের জমিনে বৃথা ঘুরাফেরা করে শেষমেষ দীর্ঘশ্বাস সহ হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমার দৌড় তখন রবীন্দ্র সুধীন্দ্র অমিয় শক্তি বিনয় হয়ে শামসুর আবুল হাসান ঘুরে আল মাহমুদে এসে থিতু হয়েছে। ওসব খটর মটর কাব্যিক ইংরেজির মশ্ক করা আমার মতো ভেতো বাঙ্গালীর কম্ম নয়! আমার যৎসামান্য ইংরেজী জ্ঞান দিয়ে একমাত্র সিলভিয়া প্লাথের কাব্যরসেই কেবল আমি কোন এক অলৌকিক নান্দনিক উৎকর্ষতায় মজে যেতে পেড়েছিলাম।
সেই প্রেমে আপ্লুত হয়ে প্লাথ-এর এক বিশাল ছবির পোস্টারও আমার বালখিল্য উৎসাহে লিভিংরুমের দেয়ালে টাঙ্গিয়ে রেখেছিলাম তখন।
যাকগে সেই সাতকাহন। তো প্যাট্রিকের কাছ থেকে ব্রায়ান প্যাটেন নামক সেই “মহান প্রেমিক” কবিবরের প্রেমের কবিতার বইটা ধার হিসেবে চেয়ে নিলাম। বিনিময়ে ব্যাটাকে আমার সাধের Sexual Politics টা ধার হিসেবে দিতে হলো। এই সাদা চামরাগুলো গিভ এন্ড টেইক এর থিওরীতে অতিমাত্রায় পটু কী না!
সে রাতে পড়ে ফেললাম প্যাটেনের প্রেমকাব্যগাঁথা।
পড়তে পড়তে নিজের অজান্তেই আপ্লুত হলাম আমি। কবিতাগুলোর সরল উৎপ্রেক্ষা ও উপমার মিশেলে আর সহজপাঠ্য ইংরেজীর বুননে রচিত সেই সব পংক্তিমালা আমার একাকী বাঙ্গালী রোমান্টিক সত্ত্বায় কী এক অনির্বচনীয় দ্যোতনা ছড়িয়ে দিল যেন।
তারপর মাস ছয়েক কেটে গেছে। হঠাৎ একদিন প্যাট্রিকের ফোন।
-প্যাটেনের কথা মনে আছে?
-আলবত আছে!
-দেখা করবে?
-মানে?... আমি ভ্রু কুঁচকালাম।
-পরশু মিউনিখ ঘুরে উনি ভিয়েনাতে আসছেন একটা কবিতা পাঠের আসরে। চাও তো আমার সাথে জয়েন করতে পারো, বলেই ঠাস করে ফোনটা রেখে দিল প্যাট্রিক।
আমি কিছুক্ষণ থম মেরে বসে রইলাম। ভাবতে চেষ্টা করলাম কোনো কবিকে সামনা সামনি চাক্ষুষ দেখেছি কি না। ও হ্যাঁ, মনে পড়েছে।
বেশ ছোটকালে বাবার হাত ধরে ধানমন্ডিতে অবস্থানরত নজরুলকে একবার দেখতে গিয়েছিলাম। নজরুলকে দেখার স্মৃতি আমার সেই বালক বয়সে খুব একটা সুখকর ছিল না, বলাই বাহুল্য। কেননা তখন তিনি বাকরুদ্ধ, শুধু একটা ঘোৎ ঘোৎ শব্দ ছাড়া আর কিছুই শুনিনি এই অমর কবির কন্ঠ থেকে। আমার বালকোচিত মন সংগত কারণেই ভয় পাবার মতই দশা! অনেক পরিণত বয়সে তারপর একবার আল মাহমুদকে দেখার সুযোগ ঘটেছিল। এখনও মনে আছে ভয়ে ভয়ে আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম, “এযাবৎকাল আপনার রচিত শেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি বলে আপনি মনে করেন?” আমি তখন তাঁর সোনালি কাবিনে মোহগ্রস্ত।
ভেবেছিলাম উত্তরটা হবে, “কেন, সোনালি কাবিন!”
কিন্তু তিনি আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে নির্লিপ্ত কন্ঠে বলেছিলেন, “কালের কলস”।
সর্বসাকুল্যে এই ছিল তখন আমার সাক্ষাৎ কবিদর্শনের সংখ্যা। তো প্যাট্রিকের প্যাটেন দর্শনের এহন প্রস্তাব আমি গদগদ হয়ে লুফে নেব, এটাই স্বাভাবিক। বলে রাখা ভালো, জর্মন ভাষার খটমট ধ্বনিসমস্টি রপ্ত করতে করতে আমার যৎকিঞ্চিৎ ইংরেজী জ্ঞানও ভুলতে বসেছিলাম প্রায় তখন। মুল জর্মন থেকে হাইনরিখ হাইনে (Heinrich Heine)-র কিছু প্রেমের কবিতা তখন ধুমায়ে (ভুল হোক শুদ্ধ হোক, থোরাই কেয়ার করি?) বাংলাতে অনুবাদ করার একান্ত ব্যক্তিগত ধৃষ্টতা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
তো এই ভজঘট পরিস্থিতিতে ইংরেজীটাকে আবার ঝালাই করবার কারণেই কি না জানি না, দাঁতমুখ খিচিয়ে কিছু ইংরেজী গদ্য অনুবাদের হুজুগও কাজ করছিল তখন। এরই মধ্যে এ্যালেন গিন্সবার্গ এর বিখ্যাত দীর্ঘ Kaddish কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করে তখনকার ভোরের কাগজ পত্রিকায় কর্মরত (জহিরুল আহসান টিপু, যে কিনা এই কিছুদিন আগে আমাদের অকুল শোকে ভাসিয়ে দেহ রেখেছেন) আমার এক সাংবাদিক বন্ধুকে তেলিয়ে প্রকাশ করিয়ে আমার তখন “কী হনু রে” টাইপ অবস্থা! সেই উৎসাহেই কি না জানি না, ব্রায়ান প্যাটেন এর খানকতক কবিতা নিজের আনন্দের কারণেই রাতারাতি অনুবাদ করে ফেলেছিলাম দু’রাত জেগে। তো এহেনো কবিবরকে সামনাসামনি দেখবার আর শুনবার সুযোগ কে হাতছাড়া করে, বলেন?
আর প্যাঁচাল নয়। বাকীটা সংক্ষেপে সারি। কবিতার আসরে প্যাটেনকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলাম।
তাঁর স্বকন্ঠের ভরাট আবৃত্তির আবেগী স্বরপ্রক্ষাপণ আমাকে এক তুরীয় আনন্দে ভাসালো। পাঠ শেষে চা পানের সময় প্যাট্রিককে অবাক করে দিয়ে এগিয়ে গিয়ে পরিচিত হলাম কবির সাথে। ব্রীড়াবনতচিত্তে তাঁকে জানালাম আমার কৃত তাঁর কবিতার কিছু বাংলা অনুবাদের কথা। তাঁর Collected Love Poems কাব্যগ্রন্থটি পুরোটা অনুবাদের অনুমুতি চাইতেই তিনি সানন্দে রাজী হয়ে গেলেন। এরই মাঝে উনি উইলিয়াম রাদিচীর রবীন্দ্র বিষয়ক রচিত একটা বইয়ের রেফারেন্স টানতে আমি যারপরনাই অবাকও হলাম।
পরবর্তিতে আমাদের আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ’র “বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ” কাব্যগ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদকৃত বইটি লন্ডনে বাই পোস্টে তাঁকে উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দেবার মধ্য দিয়ে তাঁর সাথে সখ্যতা আরো বেড়েছিল। এক যুগেরও বেশী সময় পরে সেসব কথা এখন বিস্মৃতপ্রায় ইতিহাস মাত্র। দুঃখের বিষয় এই যে, আমার আলস্য ও বেঁচে থাকার লড়াইজনিত খাসিলতের জন্যই হয়তো, Collected Love Poems –এর পুরোটা বাংলায় তরজমা করা আর হয়ে উঠেনি।
কেন যেন এতোদিন পর ব্রায়ান প্যাটানের কয়েকটি কবিতার আমার কৃত অনুবাদ আপনাদের সাথে শেয়ার করার খায়েস জাগলো বিধায় এই পোস্ট। কবুল করে নেই, নীচের অনুবাদগুলো একান্তই আমার নিজের মনের আনন্দের আতিশয্যে করা।
অনুবাদ, সবিশেষ করে কবিতার অনুবাদ যে একটি প্রায় অনতিক্রম্য দুষ্কর্মের ব্যাপার, এটা বলাই বাহুল্য। এই জন্যই হয়তো বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের চক্ষুশূল লেখক নীরদ চৌধুরী বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ কবি হিসেবে কখনই এই ব-দ্বীপের সীমারেখা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক হতে পারেন না, তা আমরা সুশীল মধ্যবিত্তরা যতই গলা ফাটিয়ে দাবী করি না কেন। কারণ, রবি ঠাকুরের কবিতা, তাঁর গীতমাধুর্যের যে সুধারস, ভাষার যে মাধুর্যলালিত্য; তা অনুবাদের মাধ্যমে কখনই একজন বিদেশী ভাষার পাঠকের অনুভূতি, মর্ম ও চেতনাকে ছুঁয়ে যেতে পারবে না... পারা সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথ তাই শুধু আমাদের কবি, বাংলা ভাষাভাষির কবি।
নীচের কবিতার অনুবাদগুলো হয়তো আক্ষরিক অনুবাদের দোষে দুষ্ট।
তবু এটা আমার একান্ত হৃদয়ানন্দ থেকে উৎসারিত। অনুবাদকৃত অংশগুলোর ভুল ধরিয়ে দিলে বাধিত থাকবো।
Party Piece
He said:
Let’s stay here
Now this place has emptied
And make gentle pornography with one another,
While the partygoers go out
And the dawn creeps in,
Like a stranger.
Let us not hesitate
Over what we know
Or over how cold this place has become,
But let’s unclip our minds
And let tumble free
The mind, mangled crocodile of love.
So they did,
There among the cigarettes and Guinness stains,
And later he caught a bus and she a train
And all there was between them then
Was rain.
উৎসব শেষে
ছেলেটি বললো,
এখানে দাঁড়ানো যাক কিছুক্ষণ
দেখো কেউ নেই কিছু পরে নেই এখানে এখন
উৎসব শেষে চলে যায় যখন ওরা সব
এবং যখন দিনের প্রথম আভা হামাগুড়ি দিয়ে
এসে পড়ে অনাহুত আগন্তুকের মতো,
তখন চলো মধুর ছেনাল কথায় আরক্তিম হই পরষ্পর।
যা কিছু আমাদের জানা
কিংবা কতটা শীতলতা ঘিরে আছে এখানে এখন-
সে বিষয়ে করবো না চলো আজ ইতস্তত ভাব
তারচেয়ে খুলে ফেলি চলো মনের জানালাগুলো
তারপর লাফিয়ে বেরিয়ে আসুক প্রেমের
উন্মত্ত বিক্লিষ্ট কুম্ভীর এক।
আর তাই করে তারা,
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিল তখন সিগারেট আর বিয়ারের খালি টিনগুলো
অতঃপর ছেলেটি উঠে গেল এক বাসে আর মেয়েটি ট্রেনে
এবং দু’জনার মাঝখানে আর কিছুই ছিল না তখন
বৃষ্টির বর্ষণ ছাড়া।
Seascape
Gulls kiss the sun
And you walk on the beach
Afraid of the tide
From the sea’s warm belly
A lobster crawls to
See if we’ve gone
But mouths still talk
And finding out my lips
I say to you
‘Stretch out your arms
Like seaweed strangled by the wind’
You answer with silence
Out of a seashell
A sandcrab pokes his head
And sniffs the saltwind
Now afraid we sit in silence
And watching the sun go down
I ask you your name
সাগরবিলাস
গাংচিল চুমো খায় সোনালী রোদের গায়ে আর
তুমি হেঁটে চলে যাও উজানের স্রোত এড়িয়ে
সমুদ্রের উষ্ণ তলপেট হতে হামাগুড়ি দিয়ে
বেরিয়ে আসে গল্দা চিংড়ি এক, আমরা
চলে গেছি কি না দেখবে বলে
অথচ আমাদের ঠোঁট তবু কথা বলে চলে, আর
আমার ঠোঁটজোড়া খুঁজে পেতেই বলে উঠি তোমায়,
‘প্রসারিত করো দুই বাহুমুল
যেমন ঝড়ো বাতাস গলা টিপে মারে সমুদ্র শৈবাল’
শব্দহীণ নিরবতায় ভেসে যায় তোমার উত্তর
শামুকের ফাঁক গলে উঁকি মারে এক কাঁকড়া
শুঁকে নেয় বাতাসের নোনা স্বাদ
এখন নিশ্চুপ নীরবতায় ভয়ার্ত বসে আছি তুমি আর আমি, আর
এই ভাবে সূর্যাস্ত দেখে চলতে চলতে
জিজ্ঞেস করি আমি তোমার নাম
When you wake tomorrow
I will give you a poem when you wake up tomorrow
It will be a peaceful poem
It won’t make you sad
It won’t make you miserable
It will simply be a poem to give you
When you wake up tomorrow.
You will find it under your pillow
When you open the cupboard it will be there
You will blink in astonishment,
Shout out, ‘How it trembles!
Its nakedness is startling! How fresh it tastes!’
We will have it for breakfast;
On a table lit by loving,
At a place reserved for wonder
We will give the world a kissing open
When we wake tomorrow.
We still offer it to the sad landlord out on the balcony
To the dreamers at the windows
To the hand waving for no particular reason
We will offer it.
An amazing and most remarkable thing,
We will offer it to the whole human race
Which walks in us
When we awake tomorrow.
ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠে তুমি
তোমায় একটি কবিতা উপহার দেব যখন জেগে উঠবে কাল
সুশান্তময় হবে ঐ পংক্তিমালাগুলো
এতটুকু দুঃখ দেবে না তারা তোমায়
দেবে না এতটুকু অসস্তি
তোমাকে দেবার জন্যে নিতান্তই একটি কবিতা এটা
যখন তুমি কাল জেগে উঠবে।
তোমার বালিশের নীচে খুঁজে পাবে তাদের
আলমারী খুলতে যেয়ে দেখতে পাবে সেখানে তাদের।
বিস্ময়ে পিট্পিট্ চোখে চেয়ে থাকবে তুমি,
চেঁচিয়ে উঠবে, ‘কীভাবে থরথর কাঁপছে ওরা!
অদ্ভুত চমৎকার তাদের নগ্নতা! কী তরতজা এর স্বাদ!’
সকালের নাস্তায় কবিতাটি সংগে নিয়ে বসবো আমরা;
প্রেমময় দ্যুতি ছড়িয়ে জ্বলবে তা টেবিলের উপর,
বিস্ময়াকুলতার জন্যে সংরক্ষিত থাকবে আমাদের আসন।
পৃথিবীকে একটি চুম্বনসিক্ত দ্বার খুলে দেবো আমরা
যখন জেগে উঠবো কাল দু’জনে।
ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা বিমর্ষ বাড়িওয়ালাটিকে উৎসর্গ
করবো আমরা এ কবিতা।
উৎসর্গ করবো জানালার ধারে বসে থাকা স্বপ্নদর্শীদের।
উৎসর্গ করবো আমরা সেই হাতটিকে
অকারণে নেড়ে চলে যা সারাক্ষণ।
আর চমৎকার অসাধারণ যে ব্যাপার-
আমাদের চেতনায় হেঁটে আসা সমস্ত মনুষ্যজাতিকে
উৎসর্গ করবো এ কবিতা মোদের
যখন জেগে উঠবো কাল দু’জনে।
The Innocence of Any Flesh Sleeping
Sleeping beside you I dreamt
I woke beside you,
Waking beside you
I thought I was dreaming
Have you ever slept beside an ocean?
Well yes
It is like this.
The whole motion of landscapes, of oceans
Is within her
She is
The innocence of any flesh sleeping,
So vulnerable
No protection is needed.
In such times
The heart opens,
Contains all there is
There being no more than her.
In what country she is
I cannot tell
But knowing-
Because there is love
And it blots out all dreams-
She is safe
I can turn
Sleep well beside her.
Waking beside her I am dreaming.
Dreaming of such wakings
I am to all love’s senses woken.
কোন এক ঘুমন্ত দেহের সরলতার প্রতি
তোমার শয্যার পাশে ঘুমিয়ে থেকে স্বপ্ন দেখলাম
জেগে উঠেছি, তোমার পাশ হ’তে;
জেগে উঠে ভাবলাম বুঝি আমি স্বপ্নাবিষ্ট।
কখনও কি ঘুমিয়েছ তুমি সমুদ্রের পাশটিতে?
হ্যাঁ তাই,
ব্যাপারটা ঠিক ওরকমই।
ভূ-নৈসর্গের সমস্ত চঞ্চলতা সমুদ্রের সমস্ত উচ্ছলতা
নারীতে নিহিত।
যে কোন ঘুমন্ত দেহের সরলতা ঘিরে থাকে
তার সত্ত্বায়,
প্রতিরক্ষার কোন আয়োজন নেই তাতে-
এতোটা সর্পিল ঐ দেহ।
ঠিক এমনই কোন সময়
যখন উন্মোচিত হয় এ হৃদয়
ধারণোক্ষম হ’য়ে উঠে যেখানে যা কিছু আছে,
তখন এ দেহ প্রতিস্থাপিত হয় তোমাতে।
কোথায় নিবাস তার
জানা নেই মোর।
শুধু এটুকু জানি
ভালো আছে সে-
কেননা ওখানে ভালোবাসা আছে
মুছে ফেলে দেয় যা কিছু অমঙ্গলময়,
অতএব ফিরে দাঁড়াই আমি
তোফা ঘুম যাই তোমার পাশটিতে শুয়ে।
তোমার শয্যার পাশ থেকে জেগে উঠে স্বপ্ন দেখে চলি আমি
স্বপ্ন দেখি আমার এমন এক জাগরণের
যেন বা সমস্ত প্রেমানুভূতিগুলো জেগে উঠেছে সেই সাথে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।