মানুষ পরাজিত হতে পারে কিন্তু কখনো ধ্বংস হয় না। - আর্নষ্ট হেমিংওয়ে
কয়েকদিন ধইরা বৃষ্টি হইতাছে। মন আনচান আনচান করে। বিড়ি খাওয়া নিষেধ তবুও লুকাই লুকাই পরকীয়া করি। নীল ক্যানভাসের নিচে অথবা মার্কেটের নিচে দাড়াই বৃষ্টি দেখি।
ঝুম বৃষ্টির মাঝে কাদা পাড়াইয়া বাসায় ফিরি।
সুবহান বাগ কলোনীর মাঠে বৃষ্টির সময় আমরা কলোনীর পোলাপাইন রা ক্যাদা মাইখ্যা ফুটবল খেলতাম। আমগো লগে চইলা আসতো আশেপাশের দাড়ায় থাকা হাফ ন্যাঙটা বস্তির পোলাপাইনরাও। বলে খালি লাইত্থাও আর বল যেইখানে সব ভীড় সেইখানে। এখন ভদ্রলোক হয়া গেছি।
মাঠের পাশ দিয়া বাসার ফেরার সময় তাকায় থাকি। আজকাল সব ফেসবুক, প্লে স্টেসনে পুলাপাইনরা বিজি...বিস্টি দেখার সময় কই তাদের।
ঢাকা শহরটা ডেড সিটি হইয়া যাইতেছে দিন দিন। সিটিং বাসেও ঝুইলা ঝুইলা আসি। বাসে পাশে রড ধইরা দাড়ানো বেশামাল ইউনি পড়া মেয়েটার স্তনের স্পর্শ মনে কুনু অনুভূতি জাগায় না।
বরং অদ্ভুত এক মায়া হয়। মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন-যাপনের মান দিন দিন কমতেছে। সব সময় সচকিত থাকতে হয় নইলে এক কেজি আপেলে দুইটা আপেল পচা বা পকেটের মোবাইল-টা নাই হয়া যায়। অস্থির মানুষের ঘর্মাক্ত মুখ, খিস্তি-অজানা কাউরে গালাগালি অথবা আল্লাহ বইলা এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছু নাই। প্রৌড়ের হাতে দুইটা কমলা-বাসার ছোট্ট মেয়েটার জন্য, কে জানে তাতে আছে বিষাক্ত কেমিক্যাল।
আমি জানি যে লোকটা অশ্লীল ভাষায় ড্রাইভার টাকে গালি দিচ্ছে, সেই বাসায় পৌছে আদরের মেয়েটাকে কোলে তুলে নেবে পরম মমতায় বা সেই ছেলেটা যে একটু আগে রিকশাওয়ালাকে ঝাড়ি মেরে দুই টাকা কম দিয়ে চলে এসেছে-রাতে তার প্রেয়সী-কে শোনাবে আর মাত্র দুটো সেমিষ্টার পার হয়ে গেলেই সে একটা চাকরি পাবে। শহুরে মানুষের যে টুকু রুপ আমি দেখী আমি জানি তার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক স্বপ্নময়, মায়াবী, সরল চরিত্র। যে কিনা তার শৈশবের গ্রাম, মাঠ, ফসলী জমি, ভরা পুকুরের কথা স্বরণ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। একদিন সমস্ত কাজ শেষ হলে সে ইট-পাথরের এই জন্জাল ফেলে ফিরতে চায় মায়ের কাছে, প্রেয়সীর কাছে, সন্তানের কাছে... সবুজ মাটির কাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।