আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জরায়ুমুখ ক্যান্সার আবিষ্কারে বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর সাফল্য

বাঙ্গাল মানুষ

void(1); সারা বিশ্বে চিকিৎসা জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে জরায়ুমুখ ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন নেদারল্যান্ডের লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ক্লিনিক্যাল অনকোলজির পিএইচডি গবেষক বাংলাদেশের রেজাউল করিম। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চের ক্লিনিক্যাল ক্যান্সার রিসার্চ জার্নালের অক্টোবর’০৯ সংখ্যায় এ তত্ত্বসংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। জরায়ুমুখ ক্যান্সারের কারণ : জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়ে থাকে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণে। ভাইরাস আক্রান্ত কোষটি ক্যান্সার কোষে পরিণত হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকে। কিডনি, পাকস্থলী, ডিম্বাশয়, স্তনসহ বেশ কয়েকটি ক্যান্সার আক্রান্ত কোষে বি৭এইচ১ রিসেপ্টর পাওয়া গেলে বোঝা যায় ঐ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর অবস্থা ভালো নয়।

সে ধারণা থেকে মনে করা হয় এ ক্যান্সার আক্রান্ত কোষেও এ রিসেপ্টর দেখা দিলে ক্যান্সারটি খারাপ আকার ধারণ করে। পরিসংখ্যান : প্রতিবছর বিশ্বে ৪ লাখ ৭০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মারা যান ২ লাখ ৩৩ হাজার। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ হাজার ৫০০ নারী এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং মারা যান ৬ হাজার ৫০০ জন। গবেষণা প্রক্রিয়া : রিসেপ্টরের ধারণার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য এ রিসেপ্টর ব্লক করে দেয় এমন ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

কিন্তু সারা বিশ্বের এ ধারণা পাল্টে দিয়ে রেজাউল করিমের মতে, অনেক ক্ষেত্রে এ রিসেপ্টর ব্লক করে দিলে তা ক্যান্সারের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। ক্যান্সারের জন্য জরায়ুমুখে অপারেশন করা হয়েছিল এমন ২৪ থেকে ৮৫ বছরের ১১৫ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে বাছাই করেন রেজাউল করিম। ৫ বছরে এদের মধ্যে ২৩ জন মারা যান, ৮৫ জন জীবিত থাকেন, ৫ জন আবার আক্রান্ত হন । ১১৫ জনের মধ্যে ২২ জনের কোষে বি৭এইচ১ রিসেপ্টর ছিল, যা মোট রোগীর ১৯ শতাংশ। এদের মধ্যে বেশির ভাগের দেহে রেগুলেটরি কোষ বেশি ছিল।

গবেষণা করে রেজাউল দেখতে পান, এ রিসেপ্টর ওষুধ দিয়ে বন্ধ করে দিলে ক্যান্সার কোষগুলোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করতে পারে না। ফলে ওষুধ প্রয়োগে রোগীর অবস্থা খারাপ হবে বলে তিনি মনে করেন। ৮০ শতাংশ রোগীরই এ রিসেপ্টর না থাকায় এ ওষুধ তাদের শরীরে কোনো কাজ করবে না। আবার রেগুলেটরি টি কোষগুলো নিষ্ক্রিয় হলে প্যাপিলোমা ভাইরাস আক্রান্ত কোষগুলো প্রচুর পরিমাণে ইন্টারফেরন-গামা তৈরি করতে পারে। ইন্টারফেরন-গামা ভাইরাসের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

কিন্তু রেগুলেটরি টি-কোষগুলো সক্রিয় হলে কোষগুলো ইন্টারফেরন তৈরি করতে পারে না। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কোনো কারণে রেগুলেটরি কোষগুলো সক্রিয় হলে কোষের সারফেস পিডি-১রিসেপ্টর দেখা দেয়। সক্রিয় কোষগুলো এ রিসেপ্টর দিয়ে বি৭এইচ১ রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়। এ রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে সক্রিয় রেগুলেটরি কোষগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

এর ফলে কোষগুলো সক্রিয় হলেও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে না। রিসেপ্টর ব্লক করার ওষুধ আবিষ্কার করলেও তা যদি ক্যান্সারে রেগুলেটরি কোষ বেশি থাকে এমন রোগীকে দেওয়া হয় তা ভালো হওয়ার পরিবর্তে খারাপ ফল বয়ে আনবে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।