আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

(সূরা আর-রাহমান : ৫-৬) : স্বাধীন-সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ মানুষের-ই রয়েছে, অন্য সকল সৃষ্টি বাধ্যতামূলকভাবে স্রষ্টার প্রতি অনুগত

জেলখানাতে যাওয়া প্রত্যেক বালেগ নর-নারীর জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আয়াত নং-৫) সূর্য ও চন্দ্র একটি হিসেবের অনুসরণ করছে *৪ *৪(ব্যাক্ষ্যা) - অর্থাৎ এসব বিরাট গ্রহ উপগ্রহ একটা অত্যন্ত শক্তিশালী নিয়মবিধি ও অপরিবর্তনীয় শৃংখলার বাঁধনে আবদ্ধ৷ মানুষ সময়, দিন, তারিখ এবং ফসলাদিও মওসূমের হিসেব করতে সক্ষম হচ্ছে এ কারণে যে, সূর্যের উদয়াস্ত ও বিভিন্ন রাশি অতিক্রমের যে নিয়ম কানুন নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে তাতে কোন সময়ই কোন পরিবর্তন হয় না৷ পৃথিবীতে অসংখ্য জীব-জন্তু বেঁচেই আছে এ কারণে যে, চন্দ্র ও সূর্যকে ঠিকমত হিসেব করে পৃথিবী থেকে একটি বিশেষ দূরত্বে স্থাপন করা হয়েছে এবং একটি সঠিক মাপ জোকের মাধ্যমে বিশেষ শৃংখলার সাথে এ দূরত্বের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে৷ কোন হিসেব নিকেশ ও মাপজোক ছাড়াই যদি পৃথিবী থেকে এদের দূত্বের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটতো তাহলে কারো পক্ষেই এখানে বেঁচে থাকা সম্ভব হতো না৷ অনুরূপভাবে পৃথিবীর চারদিকে চন্দ্র ও সূর্যের গতি বিধিতে এমন পূর্ণ ভারসাম্য কায়েম করা হয়েছে যে, চন্দ্র একটি বিশ্বজনীন পঞ্জিকায় রূপান্তরিত হয়েছে যা অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিরাতে সমগ্র বিশ্বকে চান্দ্র মাসের তারিখ নির্দেশ করে দেয়৷ আয়াত নং-৬) এবং তারকারাজি *৫ ও গাছপালা সব সিজদাবনত ৷ *৬ *৫.মূল আয়াতে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে এর সর্বজন বিদিত ও সহজ বোধগম্য অর্থ তারকা৷ কিন্তু আরবী ভাষায় এ শব্দটি দ্বারা এমন সব লতাগুল্ম ও লতিয়ে উঠা গাছকে বুঝানো হয় যার কোন কাণ্ড হয় না৷ যেমনঃ শাক-সবজি, খরমুজ, তরমুজ ইত্যাদি৷ এখানে এ শব্দটি কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে সে বিষয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতভেদ আছে৷ ইবনে আব্বাস, সাঈদ ইবনে জুবায়ের, সুদ্দী ও সুফিয়া সাওরীর মতে এর অর্থ কাণ্ডহীন উদ্ভিদরাজি৷ কেননা এর পরেই --------( বৃক্ষ ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার সাথে এ অর্থ বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ৷ অপর দিকে মুজাহিদ, কাতাদা, এ হাসান বাসরীর মতে এখানেও 'নাজম' অর্থ পৃথিবীর লতাগুল্ম নয়, বরং আকাশের তারকা৷ কারণ এটাই এর সহজ বোধগম্য ও সর্বজন বিদিত অর্থ৷ এ শব্দটি শোনার সাথে সাথে মানুষের মন-মগজে এ অর্থটিই জেগে উঠে এবং সূর্য ও চন্দ্রের উল্লেখের পর তারকাসমূহের উল্লেখ করাই সম্পূর্ণ স্বাভাবিক৷ মুফাসসির ও অনুবাদকের অধিকাংশই যদিও প্রথম অর্থকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন৷ একে ভ্রান্ত বলা যায় না৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও হাফেজ ইবনে কাসীরের এ মতটি সঠিক যে, ভাষা ও বিষয়বস্তু উভয় বিচারেই দ্বিতীয় অর্থটিই অধিক অগ্রগণ্যতা পাওয়ার যোগ্য বলে মনে হয়৷ কুরআন মজীদের অন্য একটি স্থানেও তারকাও বৃক্ষরাজির সিজদাবনত হওয়ার উল্লেখ আছে এবং সেখানে ( ) শব্দটি তারকা ছাড়া অন্য কোন অর্থ গ্রহণ করা যেতে পারে না৷ আয়াতটি হচ্ছেঃ ---------- ( সূরা হজ্জ আয়াত ১৮) এখানে সূর্য ও চন্দ্রের সাথে 'নাজম' শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে এবং 'সাজারু' শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে পাহাড় ও জীবজন্তুর সাথে ৷ আর বলা হয়েছে, এসব আল্লাহর সামনে সিজদাবনত৷ *৬. অর্থাৎ আকাশের তারকা ও পৃথিবীর বৃক্ষরাজি সবই আল্লাহর নির্দেশের অনুগত এবং তাঁর আইন-বিধানের অনুসারী৷ তাদের জন্য যে নিয়ম-বিধি তৈরী করে দেয়া হয়েছে তারা তা মোটেই লংঘন করে না৷ এ দুটি আয়াতে যা কিছু বর্ণনা করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য এ কথা বলা যে, সমগ্র বিশ্ব-জাহানের গোটা ব্যবস্থাপনা আল্লাহ তা'আলার তৈরী এবং সব কিছু তাঁরই আনুগত্য করে চলেছে৷ পৃথিবী থেকে আসমান পর্যন্ত কোথাও কোন সার্বভৌম সত্তা নেই৷ অন্য কারো কর্তৃত্ব এ বিশ্বজাহানে চলছে না৷ আল্লাহর কর্তৃত্বে কারো কোন রকম দখলও নেই, কারো এমন মর্যাদাও নেই যে, তাকে উপাস্য বানানো যায়৷ সবাই এক আল্লাহর বান্দা ও দাসানুদাস৷ একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহই সকলের মানব৷ তাই তাওহীদই সত্য৷ আর কুরআনই তার শিক্ষা দিচ্ছে৷ এ শিক্ষা পরিত্যাগ করে যে ব্যক্তিই শিরক অথবা কুফরীতে লিপ্ত হচ্ছে সে প্রকৃতপক্ষে গোটা বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে লড়াইতে লিপ্ত আছে৷
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।