স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ৯ দিন ধরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৩৩ নম্বর ছোট বিনোদপুর নদীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আসছে। গত বৃহস্পতিবার স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি সংশোধনের দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা মানববন্ধন কমসূচি পালন করেছে। সম্প্রতি স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে সভাপতি করা হয় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে বাদ দিয়ে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ সমর্থককে সভাপতি করলে এর প্রতিবাদে অভিভাবকরা ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসতে দিচ্ছে না। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, কতিপয় প্রভাবশালী অভিভাবদের প্রভাবিত করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না এবং স্কুলের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করছেন।
স্কুলটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও সহকারী শিক্ষক মো. জুলহাস উদ্দিন জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে এক জরুরি সভায় স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির তালিকা তৈরি করা হয়। পরে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. বশির উল্লাহ মিয়া কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠান। ওই প্রস্তাবিত কমিটি অনুমোদনে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন সুপারিশ করেন। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদনকালে প্রস্তাবিত নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদ থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা নোয়াব আলী বেপারীর নাম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম খানকে সভাপতি করে কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে দুই গ্রুপের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১ জুলাই থেকে নোয়াব আলী বেপারীকে সভাপতি বহালের দাবিতে ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখেছে ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার নোয়াব আলী বেপারীকে সভাপতি বহালের দাবিতে তারা স্কুল মাঠে মানববন্ধন কমসূচি পালন করে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি নোয়াব আলী বেপারী বলেন, 'বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি কমিটিতে আছি। নতুন কমিটিতেও আমাকে সভাপতি করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। পরে উপজেলা থেকে আমার নাম কেটে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলামের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ কারণে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। '
চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হযরত আলী বাছার বলেন, 'কমিটি করার সরকারি সিদ্ধান্ত এলে অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়েই আমরা কমিটি করি। ওই কমিটি থেকে সদস্য হানিফ মোল্লাকে বাদ দিয়ে নুরুল ইসলাম খানের নাম ঢুকিয়ে নোয়াব আলীর পরিবর্তে তাঁকে সভাপতি করা হয়েছে। ' বিদ্যালয়ের বর্তমান অনুমোদিত কমিটির সহসভাপতি সালমা বেগম বলেন, 'আমরা নোয়াব আলী বেপারীকে সভাপতি নির্বাচন করেছিলাম। তাঁকে বাদ দিয়ে নুরুল ইসলাম খানকে সভাপতি করা হয়েছে।
এ কারণেই ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করছে। ' স্কুলের বর্তমান সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম খান বলেন, 'ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আমার নাম প্রথম রেজুলেশনে দেওয়া হয়েছিল। পরে রেজুলেশন থেকে বাদ দিলে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করি। এরপর আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করে আমাকে সভাপতি করা হয়। বিরোধীগ্রুপ ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এলে বলে আজ ক্লাস হবে না।
ফলে তারা চলে যায়। '
শরীয়তপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আবদুর রউফ বলেন, 'বিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জনের খবর জানার পর সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।