শরীয়তপুর আন্তজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন পুলিশ সদস্যসহ ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় একটি ক্লিনিকে অগ্নিসংযোগ ও শহরের ১০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের পর থেকে শরীয়তপুরের সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এলিম পাহাড়ের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সদর থানা সূত্র জানায়, গত রোববার শরীয়তপুর আন্তজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদারের একটি মোটরসাইকেল পুলিশ আটক করে। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ডাকার উদ্যোগ নেন ফারুক চৌকিদার। বিষয়টির বিরোধিতা করেন এলিম পাহাড়। এ কারণে রোববার সন্ধ্যায় ফারুক চৌকিদারের সমর্থকেরা এলিম পাহাড়কে লাঞ্ছিত করেন।
সোমবার ফারুক ও তাঁর কয়েকজন সমর্থক একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে শহরের বটতলা এলাকায় কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন।
খবর পেয়ে এলিমের সমর্থকেরা শহরের উত্তর বাজারে তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা ফারুক চৌকিদার, তাঁর ভাই কবির চৌকিদার ও সাদ্দাম চৌকিদারকে কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শহরের হাসপাতাল থেকে কোটাপাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শহরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় দেড় হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
সংঘর্ষে জসিম ব্যাপারী, পলাশ মিয়া, আমির হোসেন মাদবর, আলী হোসেন, মিন্টু চৌকিদার, ওয়াহিদুজ্জামান, নিজাম ব্যাপারী, সুজন মিয়া, শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম মাদবর আহত হন। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম ও উপপরিদর্শক এমারত হোসেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি অমিত লোধ আহত হন। তাঁদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।
হামলাকারীরা সদর হাসপাতালের সামনে অবস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন হাওলাদারের মালিকানাধীন হাওলাদার ক্লিনিকে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন। ক্লিনিকে থাকা শতাধিক রোগীকে তাঁরা বের করে দেন। এ সময় ক্লিনিকের অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে জাজিরার নাওডোবা গ্রামের রোকসানা বেগম নামে এক গৃহবধূকে নবজাতকসহ বের করে দেওয়া হয়। শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম মাদবর বলেন, ‘আমাদের সভাপতি আদালত থেকে ফিরছিলেন। এলিম পাহাড়ের সমর্থকেরা পেছন থেকে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
’ এলিম পাহাড় বলেন, ব্যক্তিগত কারণে ফারুক চৌকিদার পরিবহন ধর্মঘটের চেষ্টা করেছেন। এর প্রতিবাদে সাধারণ শ্রমিকেরা তাঁর ওপর হামলা করেছেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হবে। সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।