আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুরন্ত জার্মানির বিপক্ষে ফেভারিট স্পেন


সূত্রঃ বিডিস্পোর্টসনিউজডটকম বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালটি পরিণত হয়েছে অল ইউরোপিয়ান সেমিফাইনালে। প্রথম সেমিফাইনাল জিতে নেদারল্যান্ড ফাইনালে উঠে যাওয়ায় অল ইউরোপিয়ান ফাইনালে ডাচদের মুখোমুখি হতে ইউরো ২০০৮ এর ফাইনালিস্ট দুই দেশ স্পেন ও জার্মানি ডারবানে আজ রাত সাড়ে ১২টায় লড়াইয়ে নামছে। দ্বিতীয় সেমি জিতে জার্মানি ফাইনাল নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিতে চায় ইউরো ফাইনাল হারের প্রতিশোধ। ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ফার্নান্দো তোরেসের গোলে পরাজয় মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় পাওয়ার ফুটবল খেলুড়ে দেশটিকে। আজকের ম্যাচে ওই ম্যাচের ১৯ জন ফুটবলার মাঠে নামতে পারেন।

স্পেন ধরে রেখেছে ওই ম্যাচের একাদশ অন্যদিকে জার্মান দলে থাকছে ৮ জন। ইউরোর হিসেব যাই হোক বিশ্বকাপে কিন্তু জার্মানিই এগিয়ে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে দু দলের ৩ মোকাবেলায় কখনোই হারেনি জার্মানি। ১৯৬৬ ও ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ আসরে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানি। ১৯৯৪ সালে অবশ্য ১-১ গোলে ম্যাচ শেষ হয় সমতার মধ্য দিয়ে।

এবার কি তবে স্পেনের জয়ের পালা? শুধু ইউরো জয় নয়, স্পেন বিশ্ব জয়ের সামর্থ্য রাখে এটা শুধু কথার কথা নয়। ইউরো জয়েরও আগে থেকে দুর্দান্ত খেলে আসছে স্পেন। দলে রয়েছে দারণ সব ফুটবলার। সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাবান বলে ভাবা হয় স্পেনকেই। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট স্পেন এবার খেলছেও দুর্দান্ত।

প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে গেলেও স্পেন এর পরপরই ফিরে এসেছে। স্পেনের পক্ষে জাভি, ইনিয়েস্তা, ভিয়ারা আলো ছড়াচ্ছেন। কোন ম্যাচেই মনে হয়নি এ দলটা হারতে পারে। অন্যদিকে বিশ্বকাপে এসে দারণ ঝলক দেখাচ্ছে জার্মানি। ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনাকে যেভাবে হারিয়েছে দলটি তাতে জার্মানিকে অপরাজেয় মনে হচ্ছে।

সাবেক জার্মান গ্রেট ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার জার্মানির এ দলটির খেলায় মুগ্ধ। কাইজার বলেছেন, এর আগে জার্মানির কোন দলকে এমন খেলতে দেখেন নি তিনি। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের কোচের কথাকে তো গুরম্নত্বের সাথে নিতেই হবে। টুর্নামেন্টে ১৩ গোল করে জার্মানি এককভাবে শীর্ষ গোল দাতা দেশ। গোল কিভাবে দিতে হবে তা জার্মানির চেয়ে ভালো কে আর জানে।

তবে, আক্রমণ স্পেনই তুলনামূলকভাবে বেশি করছে। বিপক্ষ দলের ডি বক্সে গিয়ে খানিকটা এলোমেলো হয়ে গেলেও সত্যিকার অর্থে স্পেনের সাথে পাল্লা দেয়া খুবই কঠিন। স্পেন এবারই প্রথম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলেও সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্স দলটিকে জার্মানির চেয়ে এগিয়ে রাখছে। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার ফলাফল হিসেবে স্পেনকে বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই রাখা হয়েছে টপ ফেভারিটের তালিকায়। সেমিতে ওঠার আগে টানা ৩টি ম্যাচ ১ গোলের ব্যবধানে জিতেছে।

তবে, স্পেনের রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় ওই ১ গোলই যথেষ্ট ছিলো। সব মিলিয়ে এটা নিশ্চিত জার্মানির বিপক্ষে স্পেনের কোচ ভিনসেন্ট দেল বস্ক তার প্রথম একাদশে কোন পরিবর্তন আনছেন না। ইউরো ফাইনালে তোরেসের গোলে জয় পাওয়ায় বিশ্বকাপে নিষ্প্রভ তোরেসও এ ম্যাচে আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে এখন পর্যনন্ত গোলের দেখা পাননি তিনি। অন্যদিকে জার্মান কোচ জোয়াকিম লোকে ইনফর্ম থমাস মুলারের বিকল্প বের করতে হবে এই ম্যাচে।

টানা দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড পাওয়ায় এ ম্যাচে খেলছেন না তিনি। ফলে ট্রচস্কি, কাকাউ ও টোনির মধ্য থেকে ১ জনকে বেছে নিতে হবে লোকে। দুই জন দুই রেকর্ডের দ্বারপ্রানেত্ম। জার্মান স্ট্রাইকার মিরোসস্নাভ ক্লোসা রোনালদোর বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভাঙ্গার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে, ডেভিড ভিয়া স্বদেশি সুপারস্টার রাউলের স্পেনের পক্ষে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড থেকে আর মাত্র ১ গোল দূরে।

দুজনই এ ম্যাচে চাইবেন নিজ নিজ রেকর্ড নিশ্চিত করতে। তবে, নিজেদের রেকর্ডের চেয়ে যে দলের জয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তাদের মাথায় থাকছে। পাশাপাশি থাকছে গোল্ডেন বল পাওয়ারও লড়াই। সব মিলিয়ে এ দুজনের মধ্যে একটা ভালো লড়াই এ ম্যাচে আশা করতেই পারেন। জার্মানির কোচ স্বীকার করে নিয়েছেন প্রতিপক্ষ হিসেবে স্পেন আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ডের তুলনায় অনেক কঠিন।

তার ভাষায়, স্পেনের একজন মেসি নেই, কিন্তু তার মানের বহু ফুটবলার অছেন। আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ডের মতো স্পেন বেশি ভুলও করবে না। দলটিকে হারাতে হলে তাদের ভুলের জন্য বাধ্য করতে হবে। অন্যদিকে স্পেনের অধিনায়ক ও গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াসের ভাষায় এটি তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ২০০৮ সালের ইউরো ফাইনালের চেয়েও এ ম্যাচকে এগিয়ে রাখছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, আমরা বিশ্বকাপ এ পর্যায়ে এসে থেমে যেতে আসিনি। জার্মানিকে হারিয়ে ফাইনালে যেতে চাই আমরা, এ জন্য আমরা কঠিন লড়াইয়ে নামতেও প্রস্তুত।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।