যে বেসেছে ঝর্ণা ভালো, যে বেসেছে ঝিনুক। তার হাতে আয়ু রেখায় ভীষন রকম অসুখ। ।
যদিও জলতাড়া স্রোতে
একগুঁয়ে অস্বীকার তবু
হাঙর জিঘাংসায়...
বিহানের প্রথম মেঘ বসত নিলো এসে রোদগাঁয়ে, পা ছড়িয়ে চাটাই বিছিয়ে পরিচিত ভঙ্গিতে বসা, সাবলীল অতিথির মতো উঁকি দিয়ে গেলো সদর-অন্দর। তখন ছিলো তোমার পাতা কুড়োনোর সাজ; গন্ধ লতার বেনী দীর্ঘ ঝুলিয়ে; নদীর কার্নিশ হতে ঢেউ দু'টো সযতনে খুলে নিয়ে পরে নিলে কোমরের বিছায়।
পুবদেয়ালের খাঁজে তক্ষকের ভোজন সারা হলে এক বুক ঢেঁকুর তুলে জানিয়ে দিলো - যাওয়া যায় পথে এবার। কিন্তু মেঘ এসে বসত নিলো রোদগাঁয়ে। গতরাতের চাঁদ-চিহ্ন ততক্ষনে মুছে নিয়ে হিজল আর আমলকী পাতা কাঁপছিলো তিরতির একবার দুইবার। গুনে গুনে তিনপশলা দলছুট বাতাস বড় ঘরের চাল এবং জানালা এবং বেড়ার নীচ দিয়ে দিকভ্রান্ত ঢুকে এক পলক থমকে থেকে খিলখিল হাসিয়ে দিয়ে গেলো চুড়ির আলনায়। তুমি আলতারঙ বালিয়াড়ি চুড়ি দু'আঙুলে বাজাতে বাজাতে ঘরের দাওয়ায় পা এবং দৃষ্টি ছড়িয়ে দিলে।
পেয়ারার যে ঢালটি বেঁকে এসে ছুঁয়ে গেছে লাউয়ের মাচান, তার পাতার ফাঁকগুলো একবার বড় এবং পরক্ষনে ছোট হয়ে আসছিলো। এইমাত্র তাতে দেখা গেল কানামাছি কৌশলে সিদ্ধ একটা পাকা প্রায় টসটসে পেয়ারার গায়ে থমকে আছে শেষ একফালি রোদ। বিহানের আপাতত সান্ত্বনা।
তোমার তখন পাতাকুড়ানোর কাল।
দক্ষিনে মানুষ এবং হাঙর শিকারে প্রানপণ যথাক্রমে এক প্লাটুন সৈন্য এবং হাঙর শিকারীর তীব্র ঘামের গন্ধ যদিও লেগে ছিলো ভিনদেশী বাতাসে, তুমি তাতে বুক ভরে নিয়ে একটা ঠোকর লাগালে পায়ের প্রথম কাছে পড়া নুড়িতে।
দুলতে দুলতে তখন তার পথ চলা, দু'টুকরোয় ভেঙে গড়ালো দু'দিকে।
তোমার জন্য কাঠবনে জারুলের পাতা, খাড়িতে মাছরাঙা, বুনো গাঁদায় পরবাসী প্রজাপতি অপেক্ষায় আছে। অপেক্ষায় আছে বেথুন ঝুম ঝুম কোলাহল আর রক্ত জবা। যে কোন বিহ্বলতার দিকে ; যে কোন পরাজয়ের দিকে পিঠ ফিরানো তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে এক দংগল নাড়া বিছানো হাঁটা পথ, গত রাতে যারা ভিজেছিলো শিশির ব্যঞ্জনে।
তোমার জন্য দেখো গুচ্ছ গুচ্ছ কবি এবং মাতাল এবং ভাঁড় এবং বিদূষক এবং ময়ূরপুচ্ছ কবন্ধের মতো উঁকি ঝুঁকি মারছে দুপুরের চাতালে।
কিন্তু এখানে এখনও বিহান আর মেঘ নিয়েছে বসত।
তোমার প্রতীক্ষা কাল ফুরোনোর ব্যাকুল প্রতীক্ষায় এই মাত্র পুড়তে পুড়তে খাক হয়ে গেলো একজন প্রচন্ড পুরুষ।
টের কি পাও, প্রিয় মোহকাল ?
১৭/০২/২০১০
(ছবিটি ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত
Dancer in Green Tutu
1880- by Edgar Degas )
( সবিনয়ে জানাই, এটি একটি রিপোষ্ট, আমার সামুতে প্রথম দিককার। পড়েছিলেন শুধু মোসতাকিম রাহী ভাই এবং ফেরদৌসী, মন্তব্যের ঘরে তাদের মন্তব্য দুটি কপি করে দিয়ে আমার কৃতজ্ঞতা জানালাম।
আমার মত অভাজনের নতুন লিখা পড়ার জন্য তাড়া দিয়েছিলেন যারা বিশেষত বাবুল ভাই, ছন্দহীন, জুন , সোমহেপি, শুণ্য উপত্যকা, পাহাড়ের কান্না, সায়েম মুন, হিমাংশু.... প্রসংগত বলি, না এটা ফাঁকি দেয়া নয়, আমার প্রিয় কবিতা শেয়ার করার একটা প্রয়াস।
অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা । )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।