আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হতাশাগ্রস্থ কবিতার তরুণ মালিকেরা

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

ইদানিং চোখের সামনে যত কবিতা দেখি তার বেশীরভাগই হতাশার চাদরে বোনা। সম্ভবত এর লেখকেরা বাচ্চাকাচ্চা/টিনএজ হবে। তারমানে এদেশের বেশীরভাগ কিশোর-কিশোরীরা হতাশাগ্রস্থ/মলিন/বিবর্ণ থাকে। কবিতা পড়ে মনে হয় তাদের এই অতটুকুন বয়সেই জীবনের সকল আনন্দ ধ্বংস হয়ে গেছে, জগতের সকল দুঃখ কষ্ট ভোগ করা হয়ে গেছে এবং এখন আর কিছুই বাকী নাই মৃত্যু ছাড়া। মাঝেমাঝে অবাক লাগে আমিও যখন কবিতা লেখা শুরু করি তখন এসবই ছিলো আমার কবিতার উপজীব্য।

কবিতা নয় যেন নাকি সুরের কান্না। মরে যাবো/গেলাম, শূন্য হলাম, কিছু নেই, সব হারিয়ে যাওয়া - এসব নিয়ে এমনকিছু যা সম্ভবত নিজেরই বোঝার অতীত। কিন্তু এখন মনে হয় একদম হুদাহুদিই হতাশ হয়েছি ঐ বয়সটাতে। হতাশ হবার সময় আসলে আরো পরে আসে, যার ভয়াবহতার সম্মুখে তখনকার মানে কৈশোরের হতাশা ভীষণ রোমান্টিকই মনে হয়। তবে কারণটাও অনুমেয়।

শৈশব-কৈশোরের মানসিক গড়ন। নির্মম অভিজ্ঞতার অভাবে ক্ষুদ্র না-পাওয়াটাকেই বড় মনে হতে থাকে। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের এই অবস্থার পরিবর্তন হলেও এবং অনেক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেও কিছু কিছু মানুষের দুর্দশাগ্রস্থ কবিতা বহাল থাকে। এবং সেগুলো পাঠেও সেই তরুণ চাঞ্চল্যের সন্ধান মিলতে পারে। যদিও আমার ধারণা মতে মানুষের পরিণত বয়সের সত্যিকারের হতাশা নিয়ে কোনো কবিতা হয় না।

যে কবিতা হয় তা অনেক বেশী নিজস্ব দর্শন মতে একটা সীমারেখা টানার মত সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়। সেখানে নতুন কোনো উদ্ভাবনের বা প্রাপ্তির আর প্রত্যাশা থাকে না। অথবা কৈশোরোত্তীর্ণ তরুণেরা আর কবিতা লেখে না। কিন্তু তথাপি এদেশের বেশিরভাগ কবিতার মধ্যেই হতাশা ও স্বপ্নভঙ্গের যে কথা থাকে - তা প্রমাণ করে বেশীরভাগ কবিতা লেখকই কিশোর বা সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ এবং এদের এই কবিতার মধ্যে বিন্দুমাত্র অভিনবত্ব নেই। একজনের কবিতা আরেকজনের বলে চালিয়ে দেয়া যায় অনায়াসে।

এসমস্ত কবিতা নতুন করে লেখার আর প্রয়োজন নেই। বরঞ্চ এসব কিশোরদের সামনে যে অনাগত হতাশা অপেক্ষমান, তার জন্য বর্তমানের হতাশাকে উঠিয়ে রেখে বরং যাপিত জীবনটাকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে আনন্দকাব্য লেখা উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।