দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হেরোইন সেবন করে ভারত। এমন কি হেরোইনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত আফিম চারার প্রয়োজনীয় উৎপাদনও করে থাকে দেশটি। সম্প্রতি জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ (ইউএনওডিসি) বিষয়ে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদনে এই তথ্য দেয়া হয়। উৎপদিত আফিমের (যা হেরোইনে রুপান্তরিত করা হয় নি) দুই তৃতীয়াংশ যায় পাঁচটি দেশে। যার মধ্যে ৪২ শতাংশ ইরান, ৭ শতাংশ আফগানিস্তান, ৭ শতাংশ পাকিস্তান, ৬ শতাংশ ভারত এবং ৫ শতাংশ রাশিয়ায়।
২০০৮ সালে ভারতে হেরোইন সেবনের পরিমাণ ছিল ১৭ মেট্রিক টন আর বর্তমান জরিপে প্রতিবছর প্রাক্কলিত আফিম সেবনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬৫-৭০ মেট্রিক টন। এই বিপুল পরিমাণ আফিম কিন্তু আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসে না। যেখানে আফগানিস্তান সবচেয়ে বেশি আফিম উৎপদন করে থাকে।
২০০৮ সালের হিসেব অনুযায়ি বিশ্ব বাজারে সরবরাহের জন্য আফগানিস্তানে দুই হাজার সাতশ মেট্রিক টন আফিম রিফাইন করে প্রায় তিনশত আশি মেট্রিক টন হেরোইন উৎপাদন করে। উৎপাদনের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিয়ানমার এবং লাওস ২০০৮ সালে হেরোইন উৎপাদন করে ৪০ মেট্রিক টন যার সম্পূর্নটায় মিয়ানমারে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত সরকারের দেয়া তথ্য মতে বিদেশী উৎস থেকে আসা হেরোইন কখনো তারা জব্দ করে নি বা অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছে এমন কোন তথ্যও পাওয়া যায় না। সুতরাং যেহেতু সারা বিশ্বে উৎপাদিত হিরোইনের প্রায় ৬ শতাংশ শুধু ভারতেই সেবন করা হয় সে হিসেবে ভারতে ১ হাজার ৫ শত থেকে ২ হাজার হেক্টর জমিতে অবৈধভাবে আফিম চাষ হওয়ার কথা। তবে, ২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ি ভারতে আফিমের বৈধ উৎপাদন হয় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে এবং ভারতের দাবি তারা এর উৎপাদন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে রেখেছে।
উল্লেখ্য, ভারতের সাথে সাথে প্রতিবেশি বাংলাদেশ এবং নেপালেও হেরোইন গ্রহনের পরিমাণ বাড়ছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হল তা আফগানিস্তান বা মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসার কোন প্রমান নেই।
গবেষণায় এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, নেপাল এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে ব্যাপক পরিমাণে পপি চাষ হচ্ছে।
২০০৮ সালে বাংলাদেশে হেরোইন গ্রহনের পরিমাণ ছিল ৪ মেট্রিক টন এবং নেপালে হেরোইন গ্রহনের পরিমাণ বেড়ে দাড়িয়েছে ৮ শ’ কেজিতে। নেপাল ও বাংলাদেশের সরকারী প্রতিবেদনে জানানো হয় এর প্রায় সবটুকুই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আসে। ২০০১ সালের জাতীয় জরিপে দেখা যায় ভারতে ১২-৬০ বছর বয়সি পুরুষ জনসংখ্যার মধ্যে হেরোইন ও গাঁজা সেবন করে যথাক্রমে ০.৭ শতাংশ ও ৩ শতাংশ । তবে নারী হেরোইন ও গাঁজা সেবীদের সঠিক তথ্য সংগ্রহ সম্ভব না হওয়ার কারণে ওই জাতীয় জরিপটি সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে গবেষকরা মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।