আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জলাবদ্ধতায় ডুবে মহিউদ্দিনের পতন আর হাসিনা-চার্চিলের পরাজয়


খুবই আগ্রহ নিয়ে দূর থেকে চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রাখছিলাম। সারা চট্টগ্রাম জুড়েই অনেক বন্ধু-বান্ধব আর পরিচিতজনের সাথে কথা হলেই এপ্রসঙ্গটি উঠতো অবধারিতভাবেই। মনোনয়ন চূড়ান্ত হবার পর থেকেই সবাই মহিউদ্দিনের জেতার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত বলেই জানাতো। মিডিয়াতেও সূক্ষ্ণভাবে এমনটাই তুলে ধরার প্রয়াস ছিল লক্ষণীয়। অথচ পরিচিতজনদের কথার সুর বদলে যেতে থাকে নির্বাচের সপ্তাহখানেক আগে মৌসুমি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের পানিতে ডুবে যাওয়া নিয়ে......নিচতলায় থাকা এক বন্ধুর মুখে শুনি স্বগতোক্তি, এইটুক বৃষ্টিতে ঘরে পানি উঠে গেল, তাইলে আর ১৭বছর ধরে কি করলি...... মনজুর আলমের নির্বাচনি প্রচারেও বিষয়টি তুমুল প্রচার পায়.......ধীরে ধীরে অন্যান্য ইস্যুগুলোও আগের চেয়ে তেজিভাবে সামনে আসতে শুরু করে......যেমনঃ ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার, কর্পোরেশন আতিমাত্রায় বাণিজ্যিকিকরন, শ্রদ্ধেয় বিপ্লবী বিনোদবিহারি চৌধুরিকে অপদস্থ করার হীন আচরনসহ কিছু ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের সাথে অন্যায়, পরিবেশবাদিদের নানা কর্মসূচি, চাক্তাই খাল খনন, অনেকদিন ধরে একজনের গদিনশিন থাকার ব্যাপারে আপত্তি ইত্যাদি। ঘুরে যায় সমর্থনের হাওয়া....... এমন হুট করে কোন ঘটনা যে মোড় ঘুরিয়ে দেয় শুধু ছোট বা স্থানীয় নির্বাচনেই, তা কিন্তু নয়..... এ প্রসঙ্গে আবছা মনে পড়ে যায় ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের কথা.......সবাই নাকি জানতো আ'লিগ আসছে ক্ষমতায়, কে কোন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পেতে পারে, তা নিয়ে পত্রিকাগুলোতে খবর/বিশ্লেষনী রিপোর্ট বেরুতো........শেখ হাসিনা বলে দিয়েছিলেন বি.এন.পি ১০টি 'সিট' পাবে........ কিন্তু নির্বাচনের আগে প্রথামাফিক জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনটিই নাকি পুরো আবহ পরিবর্তন করে দেয়। নৌকার ভোট গিয়ে পড়ে ধানের শীষে!! সেসময়ের ৮বছরের আমি পরিবার বা অন্যদের কাছে এবিষয়টা শুনলেও পরে ডঃ আনিসুজ্জামানের 'বিপুলা পৃথিবী'-তেও এই ধারনার সমর্থন দেখি। কিন্তু ঐভাষনে শেখ হাসিনা আপত্তিকর কি কি বলেছিলেন, তা ঠিক করে বলতে শুনিনা তেমন কাউকেই....... অর্থাৎ কোন একটা একক ইস্যুতে অল্পসময়ে জনমত প্রভাবিত হয়ে পুরো উল্টো ঘটনা ঘটতে পারে বা আপাত যোগাযোগ না থাকলেও বড় একটা জনগোষ্ঠির মতামতে যে অনন্য অদৃশ্য বন্ধন থাকতে পারে, তা দারুন আকর্ষক বৈকি........ যেমন আমরা বলতে পারি ২য় বিশ্বযুদ্ধোত্তর নির্বাচনে ইংল্যান্ডের যুদ্ধকালিন অনন্য নেতৃত্বদানকারী উইন্সটন চার্চিলকে পরাজিত হতে হয়। এ নিয়ে অনেক গবেষনা হয়েছে এবং যে মতটি খুব দৃঢ়ভাবে বলা হয়, তা হলো "a desire for post-war reform was widespread amongst the population and that the man who had led Britain in war was not seen as the man to lead the nation in peace."------ ব্রিটিশরা বোধহয় চায়নি যুদ্ধদিনের আশার প্রতিক যুদ্ধশেষের অস্থির সময়ে কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপুল জনগোষ্ঠির হতাশার কারন হোন!!! কিভাবে সম্ভব হয় প্রত্যক্ষ কোন যোগাযোগ ছাড়াই কোন একটা একক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনেক মানুষের একই ছাতার নিচে চলে আসার ব্যাপারটা........ভেবে অবাক হতে হয়।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।