গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।
আমাদের দেশের রাজনীতি আর আলাদীনের আশ্চর্য চেরাগের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা নেই। কেন এই কথাটা বললাম সেটা অনেকের কাছে স্পষ্ট। তবে এটা এখনও ষ্পষ্ট নয় যে রাজনীতিটা আলাদীনের আশ্চর্য চেরাগ হয়ে উঠা শুরু করল ঠিক কবে থেকে? আদর্শ ও সেবা প্রধান এই পেশাটা ঠিক কবে থেকে সম্পদ বানাবার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করা শুরু করল সেটা খোঁজে বার করার চেয়ে এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশী দরকার সেটা হলো এরপর কি হবে রাজনীতির এই ধারাবাহিকতার? এর সমাপ্তি কোথায় গিয়ে ঘটবে? আদৌ ফিরে যেতে পারবে কি আমাদের রাজনীতি তার মূলধারায়? বর্তমানে রাজনীতির যে ব্যবচ্ছেদ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছি আমরা, সেটা কোনদিকে মোড় নিবে সত্যিকার অর্থে তা এই মুহূর্তে অনুমান করা খুব কঠিন। কারণ বিরোধী দলের রাজনীতির কথাই বলি আর সরকারী প্রশাসন ব্যবস্থার কথাই বলি, যে ধারায় এখন পরিচালিত হচ্ছে এদেশের রাজনীতি সেখান থেকে স্বচ্ছ, নির্লোভ, আদর্শবাদী রাজনীতিতে উত্তরণ প্রায় অসম্ভব।
আমাদের রাজনীতিবিদরা ইচ্ছে করলেই ফিরে যেতে পারবেন না তাদের পূর্বসূরীদের অবস্থানে। চাইলেও তারা পারবেন না কারণ বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতি তাদেরকে সেই সুযোগ দিবেনা। সময়ের বিপরীত স্রোতে দাঁড়িয়ে যারা সেই সুযোগ গ্রহণ করার মানসিকতা পোষণ করে তাদের পরিণতি কি হয় তা আমরা দেখেছি আহসানউল্লাহ মাস্টার ও শাহ কিবরিয়ার হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। আর সে কারণেই বলছি যে, মওলানা ভাষানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী প্রমুখ রাজনীতিবিদরা আমাদের কাছে রাজনীতির পুথিগত আদর্শ হিসেবেই থেকে যাবেন। এখনকার রাজনীতিবিদদের দৈনন্দিন চর্চায় তারা উঠে আসবেন না সহজে।
যদিও তাদের উত্তরসূরীদের কেউ কেউ এখনও ধরে আছে বর্তমান রাজনীতির হাল।
এই তো সেদিনের কথা। উদাহরণটা খুব বেশী দূরে নয়। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার খুব সপ্রতিভভাবে হাত দিয়েছিল এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অপসংস্কৃতির সংস্কারে। কিন্তু সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে সেগুলো পূর্বের ফ্রেমে ফিরে গেছে।
রাজনীতির যে নষ্ট অচলায়তনে বন্দী ছিলাম আমরা আবারও সেই বৃত্তেই হয়েছে আমাদের ঠিকান। কিন্তু এ থেকে আমাদের জাতিসত্তার পরিচয়কে বের করে আনার উপায় কি? দুবৃত্তকবলিত যে রাজনৈতিক ধারা আমাদের অস্থি-মজ্জায় মিশে আছে তা থেকে কি আমরা কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবনা? আমরা কি দিন দিন তলিয়ে যাব কেদাক্ত পঙ্কিল আবর্তে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।