© তারেক আনোয়ার
যুবকটি অনেকক্ষন যাবৎ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে দেখছে । ঠিক তাদের পাশের বাসার বারান্দায় যুবতীটি দাঁড়িয়ে আছে । দূরত্ব আর কত হবে , বড়জোর সাত কি আট হাত । যুবতীটি একবারের জন্যও এ দিকে তাকায়নি । মনে মনে যুবকটি সংকল্প করে , যে ভাবে হোক কথা বলবে সে মেয়েটির সাথে ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই যুবতীরও যুবকের উপর চোখ পড়ে । তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নেয় যুবক । কিন্তু মনস্থির করতে সময় লাগেনা তার , আবার যুবতির দিকে তাকায় সে । এবং কথা বলে উঠে ............।
এভাবেই নিশানের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয় টুম্পার ।
এরপর , মেয়ে ভোলানো কথায় পারদর্শী নিশানের পক্ষে মেয়েটির মোবাইল নাম্বার যোগাড় করতে বেশীদিন লাগেনি , বেশীদিন লাগেনি বন্ধু হতেও। মোবাইলে রাত জেগে কথা বলা আর দিনে বিভিন্ন স্পটে ঘোরে বেড়ানো , এগুলি হয়ে গেল তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী । আর এভাবেই দুজনের আরো কাছে আসা ।
নিশানই প্রথম মেয়েটিকে প্রেমের অফার করে । কিন্তু মনের প্রবল ইচ্ছা থাকার পরও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী টুম্পা মুসলমান নিশানকে না করে দেয় ।
অবশ্য নিশানের অক্লান্ত চেষ্টা তাকে হ্যাঁ করতে খুব বেশিদিন লাগেনি , ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হয়েও তারা একে অপরকে ভালবাসতে শুরু করে । কিছুদিনের মধ্যেই নিশান টুম্পার ভালবাসার প্রমাণ পায়, বুঝতে তার মিথ্যে ভালবাসার বিপরীতে টুম্পার ভালবাসা সত্যি । সে এও বুঝতে পারে টুম্পা তাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশী ভালবাসে । কি এক অবর্ণনীয় কষ্ট ঘিরে ধরে তাকে । প্রথমে প্রেমের অফার দিলেও সে এটা কে নিয়েছিল নিছক সময় কাটানো এবং মজা হিসাবে ।
কারণ তার পক্ষে হিন্দু টুম্পাকে কখনই বিয়ে করা সম্ভব নয় । তার পরিবার কিছুতেই এটা মেনে নিবেনা । আবার তার পক্ষে পরিবার ও সমাজ ত্যাগ করা সম্ভবপর নয় । এদিকে যে কোন উপায়ে তাকে পেতে মরিয়া টুম্পা , যে এখনও নিশানের আসল মনের খবর জানেনা । এখন কি করবে নিশান ? কি তার করা উচিত ?
নিজের মধ্যে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকা নিশান অন্যান্য বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে সাজেসন চায় ।
অনেকে অনেক রকম বলে , কিন্তু কিছুই পছন্দ হয়না তার । এরমধ্যে অনেকদিন সে টুম্পার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি । মোবাইলও বন্ধ করে রাখে সে । কিন্তু কোন লাভ হয়না । সে আবিষ্কার করে তার মনেও টুম্পার জন্য ভালবাসা আছে ।
সেও সত্যিকারভাবে ভালোবাসতে শুরু করেছে টুম্পাকে ।
অন্যদিকে অনেকদিন নিশানের খবর না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে টুম্পা । নিশানদের পাশের বাসা , যেখানে প্রথম পরিচয় হয়েছিল তাদের , সেই বাসায় চলে আসে সে । সেটা তার মামার বাসা । আবার সেই বারান্দায় এসে দাঁড়ায় সে , সে বারান্দায় যেখান থেকে নিশানের রুম খুব কাছে ।
ঠিক সে সময় রুমেই অবস্থান করছিল নিশান । জানালা দিয়ে বাইরে চোখ যায় তার । একটু খেয়াল করে সে , পাশের বাসার বারান্দা থেকে একটি মেয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে । এবার ভালো করে তাকায় সে । সে দেখে যে দুটি চোখ তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে , যে দুটি চোখ থেকে অবিরাম পানি ঝরছে , তার অতিপরিচিত চোখ সেগুলো ।
তার চোখ থেকেও দুফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে । মনে হয় এক বিশাল সাগরের মাঝখানে হারিয়ে গিয়ে আজ সে তীরে এসে পৌঁছেছে ।
তারপর , সব স্বীকার করে সে টুম্পার কাছে । এটাও জানাতে ভুল করেনি যে , সে এখন সত্যিকার অর্থেই ভালবাসে টুম্পাকে । এবং খুব সহজেই টুম্পার কাছে ক্ষমাও পেয়ে যায় সে ।
আবার নতুন করে শুরু হয় তাদের প্রেমের উপাখ্যান ।
চলবে.........
বি: দ্র : অনেক দিন আগে এ লেখাটি লিখেছিলাম । কিন্তু পরে আর শেষ করতে পারিনি । মুছে দিয়েছিলাম । তাই আবার পোষ্ট করলাম ।
শেষ করব বলে ..........
আলেয়-২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।