nothing 2 say write now!
(শনিবার, ২২ মে, ২০১০)
পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি বস্তু কি? হীরা? নাহ!
সবচেয়ে দামি বস্তু হল দুই ফোটা অশ্রুজল আর একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস... কারন, এই দুইয়ের মাঝেই লুকিয়ে থাকে কত যে করুন স্মৃতি... যা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বার বার মনের জানালায় এসে উঁকি দেয়...
জীবনের গাড়ি কখন যে কোথায় এসে হঠাৎ মোড় নেয় কেউ বলতে পারে না...
বাবা... জীবনে বাবার গুরুত্ব কত তা কেউ বলতে পারবে না। আমরা শুধু বাবার গুরুত্ব অনুমান করতে পারি। কিন্তু যার নাই সেই শুধুমাত্র তা অনুভব করতে পারে। হয়তো আর কয়েকদিন পর আমিও অনুভব করতে পারব...
আজ আমার জন্মদিন। ১৮ বছর পূর্ণ হল।
মন খারাপ ছিল যে এই দিনে হয়তো খুব একটা মজা করা হবে না। কিন্তু কে জানত এই দিনেই আমি বিশাল একটা উপহার পাব...
জন্মদিনের মাত্র ৪ ঘন্টা আগে ২১শে মে রাত ৮ টায় মহান আল্লাহ তায়ালা আমাকে উপাহার দিলেন আমার বাবার মৃত লাশ। মুহুর্তেই আল্লাহ কেড়ে নিলে আমার সব আনন্দ।
বাবা হঠাৎ করে গতকাল ভোরে এই প্রথম অসুস্থতার কারনে সকাল ৭ টায় বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন। এই প্রথম ছোটখাটো হার্ট এ্যাটাক হয়।
ডাক্তার ৩ দিনের পর্যবেক্ষনে রাখেন।
বাবার সাথে আমরা কাল সন্ধ্যায় দেখা করতে গেলাম। প্রথমে যেতে চাইনি, কারন বাবার প্রতি একটু অভিমান করেছিলাম কোন এক কারনে। তাছাড়া বাবা তো ২/১ দিনে চলেই আসবে।
কিন্তু বাসার সবার জোরাজোরির কারনে গেলাম।
বাবা সুস্থ। তবে সিসিইউতে ছিলেন। বাবা আমার হাত শক্ত করে ধরেন। আমি কথা বলে ৪/৫ মিনিট পর চলে এলাম। আমার বিন্দুমাত্র চিন্তা হচ্ছিল না কারন যেই হাসপাতালে যায় সেই তো দেখি সুস্থ হয়ে ফেরত আসে।
আগে যদি জানতাম, এক মুহূর্তের জন্যও বাবাকে ছাড়তাম না। আমার বাবাকে জড়ি্যে ধরার বড় একটা ইচ্ছা পূরণ করতাম, কিন্তু...
আমি কম্পিউটারে সিনেমা দেখছিলাম... হঠাৎ বড় বোন কান্না শুরু করে। মা আর আরেক বোন হাসপাতালে চলে যায়। বোনের কাছে জানতে চাইলাম, কিন্তু উত্তর পেলাম না। পরে দুলাভাইকে ফোন করলাম...
জানতে পারলাম আমার আঠরোতম জন্মদিনের উপহার আল্লাহ তায়ালা কি ঠিক করে রেখেছিলেন।
আমরা সাতজনের পরিবার ছিলাম। বোন বিয়ে হয়ে চলে গেল শ্বশুর বাড়ি। দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেল... আর আজ বাবা...
হয়ত বা আমি খুব একটা মিশতে পারি না বর্তমান যুগের অত্যাধুনিক ছেলে-মেয়েদের সাথে... হয়ত বা আমি খুবই বোরিং, সারাক্ষন বাস্তবতার কথা বলি... তাই ২/১ জন ছাড়া আমার ছেলে বা মেয়ে বন্ধুও আর নাই...
কিন্তু আমিও তো মানুষ... আমারও তো একটা মন আছে... আছে কিছু আশা... চাই সবার সাথে মিশতে... চাই বন্ধু পাতাতে... বন্ধুতের আড্ডা তো আমারও অধিকার... আমি কি এতই খারাপ? হয়তো সবাই আমাকে চিন্তে ভুল করে... কিন্তু আমি এতটাও খারাপ না...
গত বছর মনের কোন এক কষ্টের কারনে প্রায় এক বছর বিছানা ছাড়তে পারি নাই (মানসিক ডাক্তার মিসেস খালেদা জানান অসুস্থতার কারন)...
কিন্তু আজ বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন কোন ইশারা ছাড়াই...
আমি আবার আমার বন্ধুত্বের হাত বাড়ি্যে দিচ্ছি... তোমরা হবে কি আমার বন্ধু? বন্ধুর পথে ভাল বন্ধু হয়ে ধরবে কি তোমরা আমার হাত? চাই অনেকগুলো ভাল বন্ধু আর বান্ধবি...
জানি না কেন হাউমাউ করে কান্না আসছে না... হয়ত বা চোখের পানি শেষ হয়ে গিয়েছে...
হয়তো আর কয়েকদিন পর আমি সম্পূর্ণ অনুভব করতে পারব বাবা-হারাদের কষ্ট... কারণ কয়েকদিন পর যখন বাবা বলে ডাকব, বাবা আর আসবেন না।
আর বলার কিছুই নাই... একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলা ছাড়া আমার আর কিছুই করার নাই..
আমার আর আমার বাবার জন্য দোআ করবেন। আমি যেন আগামি বছর ও'লেভেলে সব বিষয়ে
A+ পাই।
আর বাবার যেন জান্নাত নসিব হয়।
বাবার পরিচয়:
(নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা)
নাম - হাসান আব্দুল কাইয়ুম (সেলিম)। ৬৫ বছর বয়স।
দৈনিক সংগ্রামের সাবেক চিফ ফটোগ্রাফার ও ফটোগ্রাফার এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি...
দৈনিক আজাদের ফটোগ্রাফার...
মুসলিম বিজনেসম্যান সোসাইটির সেক্রেটারি...
আল মানার অডিও ভিজ্যুয়াল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক...
ঢাকা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সভাপতি...
সেন্টার ফর কালচারের (সিএনসি) প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ছিলেন...
জানাযার নামাজ হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদে আর কবর দাফন হয় আজিমপুর কবর স্থানে।
পত্রিকায় প্রকাশ : সংগ্রাম, আমার দেশ ও নয়াদিগন্ত।
টেলিভিশন : দিগন্ত
"ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিয়ুন"
কোন ধরনের প্রশ্ন বা কথা থাকলে আমাকে নির্দ্বিধায় ফোন করবেন @ ০১৭১৫০১২৭৭৮ অথবা মেইল করবেন > .
কাভি আলবিদাহ না কেহনা...
ভালবাসা আর সালাম রইল।
আল্লাহ হাফিয।
আবিদ হাসান।
http://personallyabid.wordpress.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।