গুম আমাদের দেশে একটি নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এর একটি ক্ষুদ্র অংশ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বড় অংশই থাকে গণমানুষের অগোচরে। পেশাদার সন্ত্রাসীদের হাতে এ দেশে অহরহ গুম হয় অসহায় মানুষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এদিক থেকে কম যান না।
ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সন্ত্রাস দমনের নামে পরিচালিত এই আইনবহির্ভূত কড়া পদক্ষেপের শিকার হচ্ছে কখনো কখনো নিরপরাধ মানুষ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অপহৃত বা নিখোঁজ হয়েছে ১২০ জন। এদের মধ্যে ২১ জনের লাশ উদ্ধার ও তিনজনকে পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকি লোকজনের কোনো খবরই পাওয়া যায়নি। এক সময়ের 'শক্তিমান' ও ডাকসাইটে ছাত্রনেতা, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীও রাজধানী থেকে উধাও হয়েছেন বিস্ময়করভাবে।
গাড়িচালকসহ এই সুপরিচিত রাজনৈতিক নেতার উধাও হয়ে যাওয়ার সঙ্গে কোন কালো হাত জড়িত তা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। গত প্রায় পৌনে পাঁচ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ আশাজাগানিয়াভাবে এগিয়ে গেলেও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য প্রায় শূন্যের কোঠায়। বিশেষ করে হত্যা-গুমের ঘটনা রোধে সরকারের ব্যর্থতা তাদের অন্যসব সাফল্যকে ম্লান করছে। একের পর এক হত্যা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনকে যখন দেশবাসী নিয়তির লিখন হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে তখন মাতুয়াইলের সিটি করপোরেশনের আবর্জনার ভাগাড়ে অন্তত চারজনের বস্তাবন্দী লাশ ও হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনা জনমনে নানা সংশয় ও প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। বস্তাবন্দী লাশগুলো গুমের শিকার হতভাগ্যদের কিনা সে প্রশ্ন যেমন কম নয়, তেমন উদ্ধারকৃত হাড়গুলোতে স্ক্রু ও তার লাগানো থাকায় এগুলো এনাটমি বিভাগের বর্জ্য কিনা সে প্রশ্নও উত্থাপিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে যথানিয়মে মামলা দায়ের এবং পুলিশি কায়দায় তদন্ত চললেও পাশাপাশি অব্যাহত রয়েছে গুজব সৃষ্টিকারী ও মতলববাজদের প্রচারণা। এ নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসনে লাশগুলো কোথা থেকে এলো তা সঠিকভাবে উদ্ঘাটিত হওয়া উচিত। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এ ব্যাপারে তৎপর হবে_ এমনটিই কাম্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।