আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরীক্ষাভীতি কাটানোর উপায় কি?

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাই নয়, যেকোন পরীক্ষায় ভালো করার জন্যই পরীক্ষাভীতি কাটানো প্রয়োজন। কোন বিষয় সম্পর্কে আগেভাগেই ভয় পেয়ে বসে থাকলে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সফলতা অর্জন করা কখনই সম্ভব নয়। সফলতার প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে “আমি পারব, আমার দ্বারা সম্ভব” এই বিশ্বাস অর্জন করা। পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি পরিমাণে সত্য। কারণ বিশ্বাস না থাকলে পরীক্ষার হলে নিজেকে পালহীন নৌকার মাঝিই মনে হবে।

কিভাবে পরীক্ষাভীতি কাটানো যায় ? প্রথমত মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আসা যাক। এক্ষেত্রে স্বভাবতই পরীক্ষার্থীরা গণিত বাদে অন্যান্য বিষয়ের উপর বেশি গুরুত্ব দিবে। এবং মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ধরনই এমন যে প্রতিটা বিষয়ের উপর পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান না থাকলে কারও পক্ষে ভালো করা সম্ভব না। এই অবস্থায় দেখা যায়, একজন মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সারাদিন বইয়ের মাঝে মুখ গুজে পরে আছে। এছাড়া উপায়ও নেই !! প্রয়োজনীয় বিষয়ের বইয়ের প্রতিটা লাইন পড়া, সেগুলা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য আহরণ করা এবং সেগুলো আবার নোট করে রাখা এবং বার বার নোটগুলো রিভিশান দেওয়া- এসব করতে করতেই পরিক্ষার্থীদের দিন পার হয়ে যায়।

এর মাঝে গণিতের মত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের জন্য সময় বের করা একটু কঠিনই এবং ক্ষেত্রবিশেষে পরিক্ষার্থীরা এব্যাপারে বেশ অনীহাও প্রকাশ করে। কিন্তু এর মাঝেও সময় বের করতে হবে। অনেকের মনে হতে পারে, “আমি মেডিকেলের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলেই তো চলে !! আমাকে আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া লাগছে না !!” কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে, কেউ যত ভালো প্রস্তুতিই নিক না কেন, সে যে মেডিকেলে ভর্তি হবেই এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। প্রথম কারণ হচ্ছে ডাক্তারী পড়তে ইচ্ছুকদের তুলনায় মেডিকেলের সংখ্যা নিতান্তই কম। দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে দুর্নীতি !! আজকাল হরহামেশাই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে।

প্রশ্ন ফাঁসের কারণে যে প্রশ্নে আসলে ৭৫-৮০ পাওয়াই বিশাল ব্যাপার হওয়ার কথা সেখানে কেউ কেউ আফসোস করছে যে নিজের তাড়াহুড়ার কারণে ১/২টি প্রশ্নের উত্তর ভুল দাগিয়ে এসেছে !! বুঝাই যাচ্ছে পরীক্ষাগুলোতে কিরকম মেধার মুল্যায়ন হচ্ছে !! এমন না যে, মেধাবী ছেলেমেয়েরা মেডিকেলে ভর্তি হতে পারছে না। কিন্তু তাদের অনুপাত দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। তাই আজকাল শুধু মেধা আর পরিশ্রমের উপরই সফলতা নির্ভর করছে না, ভাগ্য একটা বিশাল ফ্যাক্টর হয়ে দাড়িয়েছে। এভাবে ভাবলে যেকোন পরিক্ষার্থীরই মনে হতে পারে “আসলে আমরা কি করব ? মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন আমাদের আজীবনের, পরিবারের চাপ আছে। আবার প্রস্তুতিতে পুরোপুরি আত্ননিয়োগ করতে না পারলে মেডিকেলে টিকাও সম্ভব না !!” আসলে ব্যাপারটা যতটুকু জটিল মনে হচ্ছে, খেয়াল করলে দেখা যাবে যে-হয়তোবা ব্যাপারটা অতটুকু জটিল নয় !! প্রতিদিন না হোক সপ্তাহে যদি ৩/৪ দিন কিংবা এক দিন পর পর কেউ গণিত নিয়ে ১-২ ঘন্টা পুর্ণ মনোযোগের সাথে সময় কাটায় তাহলে তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আসা গণিত কোন ব্যাপারই হবে না !! মাঝে ত্রিকোণমিতি, বলবিদ্যা, ক্যালকুলাস এবং জ্যামিতির সুত্রগুলো ঝালাই করে নিতে এমন কোন সময় লাগে না।

বরঞ্ছ চর্চার মধ্যে থাকার ফলে ভবিষ্যতে যখনই প্রয়োজন হবে গণিত নিয়ে পুর্ণদ্যোমে ঝাপিয়ে পরা যাবে !! বীজগণিত খুব একটা কঠিন বিষয় না যদি ভালোভাবে বুঝা থাকে। মাসে ২ বার কিংবা সপ্তাহে একবার করে সময় দিলেই বীজগণিতে কোন সমস্যা হবে না। নিজে গণিত না বুঝলে যে বন্ধু/বান্ধবীরা ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তাদের কাছে মাঝে মাঝে অংক বুঝার জন্য গেলে আরও ভালো। কারণ এতে নিজেরতো লাভ হবেই সাথে সাথে ঐ বন্ধুটিরও অনেক সুবিধা হবে। কারণ কোন বিষয় আরেকজনকে বুঝাতে গেলেই নিজে আরও ভালো বুঝা যায়।

এভাবে একটু সচেতন থাকলেই শিক্ষাজীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টাতে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছুদের কি করণীয় এ ব্যাপারে পরের পর্বে আলোচনা করা হবে। চলবে………………  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.