রাজনীতির আবর্জনাগুলো বাদ দিলে আপনার সাথে আমার দ্বিমত খুবই সামান্য।
বিদেশে বাংলাদেশীদের কাজের অনেক সুনাম রয়েছে বলে জানি। বৃটেনেও দেখেছি কোন বাংলাদেশি একবার কোন জবে ঢুকলে সহজে ছাড়েনা,কারন হিসেবে আমার অভজারবেশন হল,আমরা কলুর বলদের মত খাটতে পারি,সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করার আশ্চার্য ক্ষমতা রয়েছে আমাদের ভিতর। মাস শেষে টাকা পেলেই খুশি, ভুলে যাই সব নিগ্রহের কথা। যার কারনে ম্যানাজারের খুবই পছন্দ বাংলাদেশি সহ উপমহাদেশীয় কামলা।
আমি আমার একটা উদাহরন দেই, আমি কাজ করি একটা কেয়ার হোমে, আমার ম্যানাজার একজন মরিশান ভ্দ্র লোক। আমার প্রবলেমটা হল আমি যখনি ম্যানেজারকে দেখি তখন কেন যেন অজানা ভয় কাজ করে, মনে হয় এই বুযি আমার কোন ভূল হবে এবং আমার চাকুরিটা চলে যাবে। কিন্তু পাশেই মরিশান, ব্রিটিশ কলিগ যারা আছে তারা দিব্যি ম্যানেজারের সাথে মজা করছে, ঠাট্টা করছে সময়ে সময়ে....প্রথম দিকে খুব অবাক হতাম ম্যানাজারের সাথে কলিগদের আচরন দেখে কিন্ত আমি আজও ওর সাথে ইজি হয়ে কথা বলতে পারিনা ...just hi...hello...official discussion. যদিও আমি জানি যে সে চাইলেই আমাকে চাকুরিচ্যুত করতে পারবেনা কারন এখানে employment law রয়েছে।
এর কোন মনস্তাত্তিক ব্যখ্যা হয়ত আছে। সাধারন ভাবে যেটা আমার উপলব্দি,আমাদের সমাজে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ চরম।
টাকা-পয়সায় যারা ধনী তারা গরিবদেরকে ট্রিট করে নিচু হিসেবে, জবের ক্ষেত্রে ম্যানাজারকে এমনভাবে সমীহ করি যেন আমার শ্রমের কোন মুল্যই নাই বরং উনি জব দিয়ে আমাকে দয়া করেছেন। পেশায় যারা ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার বা ব্যরিষ্টার তাদের প্রতি মনস্তাত্তিক একটা আনুগত্য সেই ছোট বেলা থেকে জীবনের অংশ হয়ে গেছে। যার কারনে সব বাবা-মায়েরাই তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার বানাতে চায়।
মজার ব্যপার হল আমরা যখন কাউকে গালি দেই সেখানেও রয়েছে শ্রেণীপ্রথা যেমন: গালির ভাষা হচ্ছে, তুমিতো একটা ছোট লোক, তোমার কথাতো রিক্সা বা টেক্সি ড্রাইবারের মত আরো কত কি, ভাবটা এমন যে ওরাতো মানুষই না অথচ আমি দেখেছি অনেক টেক্সি ড্রাইবার আছে শিক্ষিত! আপনি যদি তুই, তুমি এবং আপনি শব্দগুলোর ব্যবহার ভাল ভাবে খেয়াল করেন তখন বুযে যাবেন কাকে কিভাবে ট্রিট করছেন।
অনেক মানুষ বেকার হওয়ার ফলে টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় আমাদের দেশে,ঐ কেনা মানুষকে কৃতদাসের মত ইচ্ছামত খাটানো যায়।
কৃতদাস প্রথা নিষিদ্ধ হলেও আমাদের অন্তরে তা আজও প্রবলভাবে বৃদ্যমান। প্রচলিত জি হুজুর মার্কা রাজনীতির দিকে তাকালে এটা আরো পরিষ্কার। নেতারা কর্মীদেরকে যথেচ্ছা ব্যবহার করছে,যে যত বেশি জি নেত্রী হুকুম করুন বলতে পারবে সে তত বড় নেতা! পরিহাসের বিষয় হচ্ছে অনেকে আবার পাশ্চাত্য থেকে উচ্ছ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গেলেও জন্মলব্দ যে মানসিকতা গড়ে উঠেছে তা থেকে বেরুতে পারেনা।
এসবের কারন কি?
একটা কারন হল বৃটিশদের ফেলে আসা শিক্ষা ব্যবস্থা যা আমাদেরকে কেরানী হওয়ার শিক্ষাই দিত, সেই শিক্ষা ব্যবস্থা এখনোও বর্তমান, যা আমাদেরকে শুধু শোষণ করাই শিখায়। কিন্তু বৃটিশরা শেখে কিভাবে শাসন করতে হয়।
আমি এখানে না পড়লে হয়ত বুযতামইনা দুই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আকাশ-পাতাল ব্যবধান।
পুথিগত শিক্ষা দিয়ে আর যাই হউক কোন জাতি নিজ পায়ে দাড়াতে পারেনা।
স্বাধীন ভাবে চিন্তা করার জন্য প্রয়োজন মানসিকতার পরিপূর্ন বিকাশ এবং তা আসবে সত্যিকারের সুশিক্ষা থেকে।
সাথে সাথে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারলেই সকল শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে মাথা উচুঁ করে বেচেঁ থাকা সম্ভব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।