আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিঃশেষে বিভাজ্যতার বানিজ্যিক খসড়া

বিদায় - পথের নয়, পথিকের...

গনতন্ত্রের খোলসে বিভৎস এলিটিজম। এলিটিজম আকড়ে ধরে থাকেন দেশের হর্তা-কর্তারা, যেখানে দেশের মানুষ বিদ্যুতের অভাবে হাসফাঁস করছে সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সংসদে বসে জনগনের নির্বাচিতরা টেবিল চাপরান, গালাগালি করেন আর মৌজ করেন। জনগনের বুক চাপরানিতে শিৎকারী বিনোদন খুঁজেন তারা। আইনগুলো এলিটের স্বার্থ বিবেচনায়, জনগনের স্বার্থ বলে কি কোন শব্দ আছে? ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এলিট কখনো সাধারন জনগন নয়।

পুঁজিবাদী, টাকাওয়ালা, এলিটের ভোগবিলাসের বাইরে যাবে এমন আইন আমাদের গনতন্ত্র প্রনীত হয় না। ভেটেরনারীর দুয়ারে তালা পড়ে ছাত্র-রাজনৈতিক দ্বারা দাবী - "শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতার মাপকাঠি যাতে কমানো হয়। " কি অদ্ভুত! কি অদ্ভুত আবদার! সরকারে আসলেই "যে যায় মক্কা সে হয় আলহাজ্জ্ব" এই আলহাজ্জ্ব, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ সরকারের বাক্য বানে মুখস্ত সাধারণেরা তবুও দুটি সর্বোচ্চ দুর্নীতি অনুগামী বৃহৎ দলের অনুসারী। একটি মুজিব একটি জিয়া যদি বেঁচে থাকতেন এ অবস্থা দেখে তারা কি করতেন খুব জানতে ইচ্ছে করে.. একটি সরকার ক্ষমতায় আসেন স্বল্প মেয়াদী বীজ রোপন করেন পাঁচ বছরের মধ্যে ফল পাবার আশায়, আর আগাছার দোষ বিগত সরকারের এটাই তো নিয়ম! দেশ গোল্লায় যাক, দল টিকে থাকুক, দীর্ঘমেয়াদী কোন উদ্যোগ কখনোই নেয়া হয় না কারন সেটা পাঁচবছরের মধ্যে ফলানো সম্ভব না, নিজস্ব উন্নয়ন খাতায় দেখানো সম্ভব নয়। নীচতার সর্ব নিচ পর্যায়ে আমাদের জাতির অবস্থানে নিয়ে গেছে দুর্নীতি পীড়িত এই সব রক্ত চোষা শোষকেরা।

আইনের থেকে আইনের ফাঁক খুঁজে নিজের আখের গোছানোয় এমন পটু অভিজ্ঞ ও স্বাধীন জনপ্রতিনিধি কি আর কোথাও পাওয়া যাবে? এদের দিয়েই আইনের ফাঁক গুলোই সিল করানোর আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখি। হাসছেন আপনি? আমিও তো হাসছি। আমরা দেখি না, আমাদের কান খোলা নেই আমরা বলতে জানি না। সবাই মুগ্ধ দর্শক। সব কিছু গোড়া থেকে শুরু করার প্রত্যয় প্রতিদিন ভোরে উঠে কুলকুচি করে নিই।

আমরা দেশকে নিঃশেষে বিভাজ্যের অংক কষে যাই, আর চিৎকার করে ঘর ফাটাই গ্যাস,বিদ্যুত,পানি আরো সব পুস্তকী 'মৌলিক অধিকারের' জন্য আর অপরদিকে জনপ্রতিনিধির খাতায় থাকে অন্য হিসেব, মান গুলো ছাপোষা শত-সহস্রের কোটায় নয় লক্ষ্য-কোটির কোটায় তাই হয়তো নিঃশেষে বিভাজ্যতার অংক কোন কালেই মিলেনা বাড়ী-গাড়ীর ভিড়ে। জিন থেকে জিনে কেবল দুর্নীতির শাপদ বয়ে এসেছে ছোবল মেরেছে কৃষকের ভাঙা ঘরে, নিম্নবিত্তের ফুটো বাক্সে আর মধ্যবিত্তের জীর্ণ নৈতিকতায়। সব কিছু যখন শেষ! আমরা তবুও আশাবাদী বুলি শুনে ঝিম মেরে পড়ে থাকি। মাঝে মাঝে ভাবি এই আমাদের রক্তেই বয়ে চলি একটি ১৯৫২ একটি ১৯৭১, স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন ছিল আমাদের বুকে দৃঢ়তায়, রুপকথার মতো ছিল সেই সব বলিষ্ঠ চেতনা, যার স্ফুলিংগে স্বাধীনতা হয়েছে সফল। আপনি হয়তো চিৎকার করে উঠবেন রুপকথা কেন বলছি এটা নিয়ে, হ্যা রুপকথা বলছি কারন এখনকার ক্ষমতাশালীদের যারা অর্জিত স্বাধীনতা ভোগ করছেন চুষে চুষে, তাদের দেখে অবাক লাগে এরা এখানে এলো কি করে? দালালের বাচ্চারা এখনো টুপি দাড়ির বেশ্যাবৃত্তি নিয়ে রাজনীতি করে আর স্বাধীনতা অর্জনের ভাগ চায়! প্রতিমুহুর্তে পদাঘাত খাওয়া নিজেকে দেখে ঠাউর করতে পারি না এতটা নির্লিপ্ত আমরা হলাম কেমন করে? তাই আমার কাছে সেটা ঘুমের জন্য মায়ের কোলে শুয়ে রুপকথার মতো।

হয়তো এতক্ষন যা বললাম সব আপনার মুখস্ত হয়তো এর আগেও এগুলো শুনে থাকবেন, কিন্তু আমি তো নিরুপায় আমি নতুন করে আপনার আর আমার মনের একই কথা নতুন করে কেমন করে বলি? আর রাজনৈতিক বুলিগুলো তো ভাঁজতে ভাঁজতে নৈতিকতার বুলি আমরা কমেডি পর্যায়ে নিয়ে গেছি। এতটা নির্লিপ্ত আমরা কেমন করে থাকি? দেশকে কুড়ে কুড়ে এভাবে ভ্যাম্পায়ারের কবলে দেখে, মাঝে মাঝে মনে হয় আরেকটি ৭১ খুবই দরকার। হয় এফোঁড় নয় ওফোঁড়। আরো দু'পেগ ঢালুন,খেয়ে নিজের চেতনার প্রাকটিসটা শেষ করে ফেলি... আমিই তো ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ। সব শেষে বলি শুনুন দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়।

সরকার খুলেছে মন্দির আর আমরা হলাম মন্দিরে টাঙানো সময় বদলে পাল্টে যাওয়া ব্যক্তি দেবতার পুজারী। আর পুরোহিতরা সব, আপনাকে নিঃশেষে বিভাজ্যের অংক শেখাতে সদা তৎপর, হয়তো কিছুক্ষন পর ফাঁকা কলসির ঠন ঠন শুনতে পাবেন, ততক্ষনে আমাদের ছেড়ে যাবেন না,অপেক্ষায় থাকুন...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।