শানিত কর সংস্কৃতির চেতনায়
নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ জেলার বেলাব, মনোহরদীও কুলিয়ারচর উপজেলার উপর দিয়ে প্রভাহিত এক সময়ের উত্তাল ব্রহ্মপুত্র এখন মরা নদে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে হারিয়ে গেছে এ নদীর অতীত ইতিহাস। যে নদের গর্জনে এক সময় এ এলাকা হয়েছিল উত্তাল, যে নদে এক সময় শত শত পাল তোলা নৌকা, লঞ্চ, ষ্টিমার চলাচল করতো সে নদ এখন কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মরা নদ হিসেবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার কৃষক। প্রয়োজনীয় সেচ সুবিধার অভাবে এলাকার শত শত হেক্টর জমি এখন হুমকির মুখে।
এলাকার কৃষকরা এখন আর তুলতে পারছেনা গোলাভরা ধান। মাছে ভাতে বাঙ্গালী এ এলাকার অতীত ঐতিহ্য হলেও সে প্রবাদ এখন আর সত্য নয়।
উত্তাল ব্রহ্মপুত্র বুক জুড়ে এখন ধুঁ ধুঁ বালুচর। মাঝে মাঝে এলাকার কৃষকরা ব্রহ্মপুত্রের বুকে ভেসে উঠা চরে ধান, আলু, বাদাম, পেয়াজ, রসুন ও বিভিন্ন সবজির আবাদ করলেও পানির অভাবে পাচ্ছে না তারা ভাল কোন ফলন। বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার হতে ব্রহ্মপুত্রের আরেক শাখা নদী আড়িয়াল খাঁ বেলাব, রায়পুরার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে নরসিংদীতে মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে।
অন্য দিকে আরেকটি শাখা ব্রহ্মপুত্র নাম ধারণ করে ভৈরবে মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের করুণ অবস্থার কারণে আড়িয়াল খাঁ এখন পরিণত হয়েছে মরা খালে। কবি গুরুর কবিতায় আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে কবিতাটি আড়িয়াল খাঁর পাড়ে গেলেই মনে করিয়ে দেয় ভাবুকদের। দূর থেকে তাকালে মনে হয় এ যেন ফসলের মাঠ। জানা যায় গত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আড়িয়াল খাঁ নদীর খনন কাজ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক করলেও খননের অনিয়মের কারণে সুফল বয়ে আনতে পারেনি।
এতে ভালোর চেয়ে মন্দের পরিমাই বেশী বলে এলাকার কৃষকরা মনে করেন।
ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ পাড়ের বাসিন্দা বেলাব গাংকুল পাড়া গ্রামের কৃষক মোছলেহ উদ্দিন, আমলাব গ্রামের হাসেন আলীসহ আরো কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, এখন আর আগের সময় নাই, গাঙ্গের পানি হারাইয়া গেছে কৃষককের বুক অইছে খালি। বিঘা প্রতি জমিতে আগে ধান আবাদ করে পেতাম ৪০ থেকে ৫০ মণ, এহন ২০ মণও হয়না। পুড়াদিয়া গ্রামের জেলে নিরানন্দের সাথে কথা বললে সে জানায়, হুনছি আমরার বাব-দাদারা ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ নদীর মাছ বিক্রি কইরা সংসার চালাইতো, এখন আর সে সময় নাই । ভৈরব কুলিয়ার চর হইতে মাছ কিনে বিক্রি করে লাভ হয়না, বৌ-পোলাপাইন লইয়া বড় কষ্টে দিন কাটাইতেছি।
এলাকার সর্বসাধারনের দাবি, বর্তমান সরকার যদি ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁর খনন কাজ করে, তাহলেই ফিরে আসবে ঐ দুই নদীর অতীত ইতিহাস। আর তাহলেই ফুটে উঠবে এলাকার কৃষককের মুখে সেই পুরানো দিনের গান, ---মাঝি বাইয়া যাওরে। দেখুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।