আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারাবন্দী ১১ জঙ্গী মুক্ত করতে কোটি টাকার বাজেট জামায়াতের

তর্ক করে কি লাভ হবে আপসেতে যুক্তি চলে

বোমা মিজান মাসে পেত দেড় লাখ টাকা জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ জামায়াতে ইসলামী জঙ্গী সংগঠনগুলোর মূল শেকড়। নতুন করে জামায়াতে ইসলামী দেশের জঙ্গী সংগঠনগুলোকে একত্রিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সুইসাইড স্কোয়াডের কারাবন্দী ১১ জঙ্গীকে মুক্ত করতে প্রায় কোটি টাকার বাজেট রাখা হয়েছে। জামিনে ছাড়া পেলে দেশে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে ব্যবহার করা হবে। জেএমবির বর্তমান আমির মাওলানা সাইদুর রহমানের মাধ্যমে জামায়াতের উন্নয়ন তহবিল থেকে জঙ্গীদের অর্থায়ন করা হচ্ছে।

সাইদুর রহমান জামায়াতের টাকায় জেএমবি, হুজির একাংশ, আলস্নাহর দল ও হিযবুত তাহ্রীরকে সংগঠিত করছে। গ্রেফতারকৃত জেএমবির ৭ সদস্যের সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত নেতাদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের জামায়াতের একটি বিশেষ তহবিল থেকে মাসিক হারে খরচ দেয়া হতো। ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া এলাকা থেকে শনিবার জঙ্গী বরসহ জেএমবির ৭ সদস্যকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে গ্রেফতার করে র্যাব। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত আব্দুল মালেক ওরফে মুসা ওরফে সজীব ওরফে রবিন জেএমবির শূরা সদস্য ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার দায়িত্বে সে।

তাকে ময়মনসিংহ জেলা জামায়াত নেতারা সাংগঠনিক ও আর্থিকভাবে সহায়তা করত। জঙ্গী বর আহসান জহির খান ওরফে রোমান জেএমবির এহসার সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার দায়িত্বে। তার সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াত নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। সে শিবিরের বিভিন্ন মহড়ায় অংশ নিত। শিবিরের হয়ে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক হামলায় অংশ নিয়েছে।

বিশেষ করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের ৪ কর্মী জনতার হাতে নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি চোরাগোপ্তা হামলায় অংশ নিয়েছিল। জেএমবির পাশাপাশি শিবির ক্যাডারদের অস্ত্র গোলাবারম্নদ সরবরাহ করত। এ ছাড়া জেএমবির গায়রে এহসার সদস্য ফারম্নক হোসেন ওরফে ফারুক আহম্মেদ ওরফে কসাই ফারুক এক সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সময় বহু হত্যা, খুন ও জখমের ঘটনা ঘটায়। এ ছাড়া ফারুক বহু ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

মানুষকে হত্যা, খুন বা জখম করতে পারদর্শী হওয়ায় ফারম্নক দলে কসাই ফারুক হিসেবে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে স্থানীয় দু'জামায়াত নেতার নির্দেশে জেএমবিতে যোগ দেয় ফারুক। তার সঙ্গে সাভার জামায়াত নেতাদের যোগাযোগ ছিল। গ্রেফতারকৃত জেএমবির বাকি এহসার সদস্য শহীদুল্লাহ, আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল হালিমের সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত শিবির নেতারাদের যোগাযোগ ছিল। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এলাকা অনুসারে জেএমবির সদস্যরা মাসিক হারে খরচ পেয়ে থাকে।

এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ব্যতীত দেশের বেশির ভাগ জেলায় প্রতিটি জঙ্গী পরিবারকে মাসিক ৪ হাজার টাকা হারে দেয়া হয়। চট্টগ্রাম এলাকার প্রতিজন জঙ্গী মাসিক ৪ হাজার টাকা পেয়ে থাকে। এ ছাড়া সন্তানপ্রতি মাসিক ৮শ' টাকা হারে দেয়া হয়। ঢাকায় প্রতিজঙ্গী পরিবারকে মাসিক ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। আর সন্তানপ্রতি মাসিক ১২শ' টাকা দেয়া হয়।

মিরপুর থেকে গ্রেফতারকৃত জেএমবির বোমারু মিজানকে মাসিক দেড় লাখ টাকা দেয়া হতো। জামায়াতের ফান্ডে আসা বিদেশী অর্থের একটি অংশ দেয়া হয় জঙ্গীদের। জামায়াতের উন্নয়ন তহবিল থেকে জঙ্গী অর্থায়ন করা হয়। জেএমবির বর্তমান আমির মাওলানা সাইদুর রহমানের সঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। জামায়াত সাইদুর রহমানের মাধ্যমে জঙ্গীদের অর্থায়ন করে থাকে।

জামায়াতের তরফ থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ সরাসরি বেনামে থাকা সাইদুর রহমানের এ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। পরে সাইদুর রহমান এসব অর্থ জঙ্গীদের মাঝে বরাদ্দ করে। জঙ্গী সংগঠন গুলোর কার্যক্রম বাড়াতে জেএমবির অর্থায়নে জঙ্গীদের বিয়ে আয়োজন করা হয়। জেএমবির তহবিলের টাকায় বর কনের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনা হয়েছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানের আড়ালে গোপন বৈঠকে মিলিত হতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছিল জেএমবির টাকায়।

জঙ্গীদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জামায়াতে ইসলামী জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহ্রীর ও আল্লাহর দলসহ বেশ কয়েকটি জঙ্গী সংগঠনকে দলে ভিড়াতে মোটা অঙ্কের বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। সক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে আপৎকালীন মুহূর্ত মোকাবেলায় এসব জঙ্গীকে কাজে লাগাতে পারে জামায়াত। জঙ্গীদের সংগঠিত করতে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন অর্থ সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে জামায়াত। প্রসঙ্গত, ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন ধরনের ৫শ' ৫৮জন জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের মধ্যে ১১ জন আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্যদের জামিনে ছাড়িয়ে নিতে প্রায় কোটি টাকার বাজেট রাখা হয়েছে। আত্মঘাতী ১১ জঙ্গীকে জামিনে মুক্ত করতে জামায়াতের টাকায় ব্যারিস্টার হওয়া আইনজীবীরা কাজ করছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে দেশে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। বড় ধরনের নাশকতা চালাতে সুইসাইড স্কোয়াডের জঙ্গীদের ব্যবহার করা হতে পারে।

এজন্যই সুইসাইড স্কোয়াডের কারাবন্দী জঙ্গীদের জামিনে মুক্ত করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে যু্দ্ধাপরাধীরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।