আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবীর সকল শাষক গোষ্ঠীকে বুঝাতে হবে বঞ্চিতদরে দুনিয়া একটাই,তারা একই স্বরে কথা বলে।

যমজজীবন

কথার দোরগোড়ায় এ মূহুর্তে কমিউনিষ্ট মেনিফেষ্টোর শুরুর কথাটাই ওৎ পেতে আছে। প্যানপ্যানানি না করে জবানটা একটু অদলবদল করেই বলতে হয়, ভারত ভূত দেখেছে- মাওবাদের ভূত। এই ভূত ঝাড়ার জন্য এক মহা-মৈত্রীবন্ধনে দলবল পাকিয়েছে ভারতের সকল লাট সাহেবেরা- কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিইএম(মাকর্সাদী)সহ তাদের সকল রকমের রক্ষীবাহিনী। ফেসাদ এখানেই শেষ নয়, নিজেদের নিজেরাই নিন্দা করতে, মিথ্যামিথ্যি গালগপ্প সাজাতে পিছপা হন না এরা। কিন্তু চিনপরিচয় তাদের একটা আছেই, মাওবাদীদের কতল করতে সকলেই এক দমে কথা বলেন।

ভক্ষকদের আলাদা আলাদা হাবভাব, কামড়াকামড়ি থাকলেও ভিক্ষুকের(?) ত্যক্ত বিরক্তির প্রশ্নে তারা এক জায়গায় দোস্তি ঘটান। এ ব্যপারে কারো অ’মত থাকলে ইতিহাসের পৃষ্টাগুলো তাকে দুস্তর মতো ছবক দিতে সক্ষম। মাওবাদীদের ডরে-ভয়ে, তাদের কতল করার গোপন শলা পরামর্শে বাংলাদেশের উপরও ধকলটাও কম যাচ্ছে না। বুবুজানের(শেখ হাসিনার) ভারত সফরের ফ্যাড়-ফ্যাকড়া নাড়লে চাড়লেই এ বিষয়ক তোড়া তোড়া বোল ফোটানো যায়। কিন্তু না, আমরা এতই আনুনাসিক, ধ্যান্ধা, একচোখা যে, নাক-কান-চোখে কচুর ঢাঁটা ঢিবা দিতে একটুখানিও বোধবুদ্ধির খোঁচা খাইনি।

যাক সে সব, নুনের ছিটা এ বিষয়ে এনে মনে মনে দাঁতমুখ খিঁচাতে, কোঁথাতে(কোঁৎ) চাই না। আজ যা বলবার খায়েশ হয়েছে বরং তা নিয়ে একটু কথার কুস্তি করি- আজকের দুনিয়ায় ইর্য়াকি করে কেউ যদি মোটা মাথার স্কুল ছাত্রটাকে জিজ্ঞাস করে, পৃথিবীর বিরররররররররররাট গণতান্ত্রিক দেশ কোনটা? তবে কোন রকম চুলবুল না করেই ভোদাই ছাত্রটা খেলুড়ে ভঙ্গিতেই উত্তর দিবে, ভারত। কিন্তুক এ কেমনতর গণতন্ত্র, যে দেশে একদিকের মানুষ হড়হড় করে, ঠেসে ঠেসে মুখে নোলা তোলে আর আরেক দিকের আধ-নেংটা কাঙাল মানুষগুলো ক্ষিধে তেষ্টায় ঝুটাটাও পায় না। ফলে আদিবাসী রাম খারা, ডমরুধরের মত যুবক, যাদের আট ক্লাস পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছেড়ে দিতে হয়েছে কেননা টাকা নেই, কেননা স্কুলে যাওয়া আসাই প্রতিদিনের পরীক্ষার সামিল, তাদের প্রশ্ন সরকার তাদের জন্য কী করেছে? তাদের জন্য, যারা ঝকঝকে ভারতের উন্নয়নকল্পে আরো অন্ধকারে সরে গেছে, কোণঠাসা হয়েছে? যদি আদভি রামাড়ু নামের কোন জনক বলে, আমার ছোট মেয়েটারে আমার সামনে সাওয়াল জুডুম, পুলিশ ধর্ষণ করেছে, যদি অঞ্জনা চান্ডি আর রসী চান্ডি নামের মা-মেয়ে একসাথেই বলে, বেটা না বেটি তা পরীক্ষার জন্য পুলিশ আমার কাপড়ের তলে আঙ্গুল ঢুকিয়েছে- তখন কি এ মহাগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের লালসার ঝিম কাটে না, কাটে না সভ্যতার অধিকারী তকমার দেমাক? মন আচানক করা কথা হলো, মানুষকে বাঁচাতে যেখানে দুই সিকি পয়সা যায়না, সেই কোরাপুট-কালাহান্ডি-লালগড়ে মানুষকে মারতে খরচা করা হয় জলের মতো টাকা, কেননা, কে না জানে, মানুষের চেয়ে এ ভোটাভুটির গণতন্ত্রের দাম তোলা তোলা। সব খুঁত সত্ত্বেও গণতন্ত্র নিশ্চিতভাবে স্বৈরতন্ত্রের থেকে ভাল।

কিন্তু পুঁজিপতিদের গণতন্ত্র এতো পচেগলে গেছে যে ভয়, ভারত দেশের ২০ % মাত্র মধ্য ও উচ্চবিত্ত, যারা বর্তমানের উন্নয়নের ছক থেকে লাভবান হয়েছে, অনায়াসে কর্পোরেট-ফ্যাসিবাদী জোটের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন, ভয় হয় বাকিরা, সেই সব বিদ্যাজীবীরা না জানি আখেরে মাওবাদীদের কমিউনিস্ট ধারার ওপরে নিভর করে বসে, শ্রমিক-কৃষকের কূলকিনারা তো একমাত্র কমিউনিস্ট আন্দোলনই শেষ বরাত পায়, তা পার্থক্য শুধু এতটুকুই যে, সিপিইএম(মার্কসবাদী) না সিপিইএম(মাওবাদী) কার সাথে বিপ্লবের বনাবনি হবে। ভারত মাতার মমতা মাখা সমাজ উন্নয়নের কথায় যে আসলে বদের বাসা সেটা বিলক্ষণ বোঝা গেলেও, ঠিক কোন চক্রান্তের কারণে, দলেবলে কালো, হাড় জিরজিরে শরীরগুলি ‘ধুর শালা যথেষ্ট হয়েছে এই বেঁচে থাকা’ বলে বিনা দ্বিধায় দলে দলে হাতে মান্ধাতার আমলের তীর-ধনুক বা হাল আমলের বন্দুক তুলে নিচ্ছে, সেটা আর অজানা থেকে যাচ্ছে না। এখন লুণ্ঠনবাজ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রোপা আপামর মিডিয়াবাজেরা যদি একদিকে ‘অপারেশন লালগড়’ নামক যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে সমর-বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে আর জানান দেয় চরমপন্থী, মাওবাদী সন্ত্রসীদের হাত থেকে উপশমের জন্যই আপারেশন গ্রিন হান্ট- তবে ঢুঁ’মেরে জানাবোঝা সচেতন মানুষের অন্তত জিভে রোচে না, ঘেন্না লাগে। সে ভারত হোক, ভারতের নাগালে থাকা দেশ হোক আর দূর কোন বেকুবের স্বর্গে থাকা মানুষ হোক তারা বোঝে জঙ্গল মহলে মিলিটারি বুটের পদচারণা কেন? কেন নানান উন্নয়ন প্রকল্পে এখন পর্যন্ত দেশের যত লোক উৎপাটিত হয়েছে তার প্রায় ৫০ % আদিবাসী? গর্তে ঘুটা দিলেই কেঁচো নয় সাপও বেরিয়ে আসে, ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৮ % , দেশের ২০ % অঞ্চলে যাদের বসতি, যারা মাটিতে ফসল বুনে খায়, বাচ্ছা বিয়োয়, হাঁটে ঘুমায়, হাগে ঠিক তার নিচেই, দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলগুলোর অন্তর্গত হয়ে আছে দেশের অধিকাংশ, ৮০ % খনিজ ও ৭০ % বনজ সম্পদ। নজর এ দিকেই ফেরাতে হয় তাহলে? এ তাহলে সপ্তকান্ডের অঘটন? খতিয়ে খোঁজ লাগালেই টের পাবেন ভারতের গায়ে এমন অসংখ্য গেঁটে বাত বাসা বেঁধেছে, যেমন, ভারতের আদিবাসীদের ছত্রিশগড়ের দান্তেওয়াড়া অঞ্চলটি প্রকৃতিক সম্পদে টইটুম্বুর, বিশেষত লোহার খনি পাওয়া যাওয়াতে বহুজাতিক কোম্পানীর নেকনজর পড়েছে এলাকাটির ওপর।

কিন্তু নচ্চর আদিবাসীরাও কম যায় না, তাদের ভিটে মাটি রক্ষার জন্য তারা জান কোরবান দিতে প্রস্তুত। সরকার চাইলেই বেচতে পারে যে কিছুই, আঙ্গুল টিপে সে ভোট নিয়েছে তো এ জন্যই। কিন্তু পাহাড় বেচার ধমকঠমক আদিবাসীরা সহ্য করবে কেন? আদিবাসীদের কাছে নিয়ামগিরি পাহাড়টা উপাসনার বস্তু, মায়ের মত, তার জল পবিত্র দুধের মত। যদি পাহাড় না থাকে জলও থাকবে না, তেষ্টায় জীবনও শেষ হয়ে যাবে। কিনতু না, কে শুনবে ঐ নাক বোঁচকানো, খচ্চর মার্কা বেটে আদিবাসীর কথা? এই একবিংশ শতাব্দীতে যখন উন্নয়নের রথ পাঁই পাঁই, ধেই ধেই করে দৌড়চ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের তখন হয়ত দৃঢ় বিশ্বাস যে, তা থেকে যে টুকু চুঁইয়ে পড়বে, তাতেই এইসব চাষাভুষো আদিবাসীদের বিলক্ষণ উন্নতি হবে।

ঠিক সেই সময়েই কেন, উন্নয়নের বিরদ্ধে নাক বোঁচকা লোকগুলো বিদ্রোহ করছে সেই চক্রান্তটা বোঝা দরকার মনে করে না সরকার। নাকি এই অশিক্ষিত গু’গোবরে গরীব হাফ নেকেড় জানোয়ারগুলো উন্নয়ন বলে যে ব্যাপারটা চালানো হচ্ছে, তাতেই আপত্তি? কে জানে। তা যদি হয়, তবে ওদের মাথায় বুলেট ঠুসে দেওয়াই ঠিক আছে। মালগুলো দেশে থাকবে, উন্নয়নে হ্যাঁ বলবেনা, জঙ্গলে থাকবে, গণতন্ত্রের মর্ম বুঝবেনা, চিরকাল গরুর মতো হাম্বা বলবে, সুইট ইংলিশে হাউ আর ইউ ডুয়িং বলবেনা, ওদের টিকিয়ে রেখে লাভ কি? কৃষি থেকে শিল্প, জঙ্গল থেকে শহর, এটাই সভ্যতার পথ। এটা যারা বুঝবেনা তাদের, বাংলার বুকে আধ ন্যাংটো আদিবাসীদের বিদ্রোহ ছুটিয়ে দিতে হাজারে হাজারে সেনা নেমেছে সমরে, আকাশে উড়ছে হেলিকপ্টার আর মাটিতে হামাগুড়ি দিচ্ছেন পুলিশ সুপার।

কিন্তু ওমা তারপরও কোথায় কি, এক রামে রক্ষে নাই, এক আঞ্চল নিয়ে ভাবলেই হয়না, লালগড় তো আর দেশে একটা নয় গোটা দেশটাই যেন মাওবাদে ভরে গেছে, লালগড় হয়ে গেছে। ছত্তিসগড়ের দান্তেওয়াড়া, বিজাপুর জেলা, আমুক তমুক হয়ে যত দূর জানা যায় উড়িষ্যায় চুপচাপ শুরু হয়ে গেছে আরেকপিস ‘লালগড়’ কান্ড। সাধারণ মানুষ মাওবাদী ও সালোয়া জুদুমের মাঝখানে অসহায়ভাবে ফেঁসে গেছে ব্যাপারটা তেমন নয়। মাওবাদীদের জনসমর্থন যথেষ্ট; একশন করার সময় মাওবাদীরা গ্রামে এসেছিল, বিশ্রাম নিয়ে, জল খেয়ে গেছে, অচেনা সাংবাদিককে একথা জানাতে সাধারণ গ্রামবাসীদেরও মুখে বাধে না। কারণ ঐ মাওবাদীরা তাদের জন্যই লড়ে।

৭০-এর দশকের বিপর্যয় কাটিয়ে মাওবাদীরা আজ যে কোনো সময়ের বিচারে অনেক বেশি রাজনৈতিকভাবে টেক্কা বিস্তার করতে পেরেছে। আর পারবেই না কেন, যখন ভারতে গেল ৬২ বছরে জাতীয় অর্থনীতির সীমাপরিসীমা যতই ডাঁশা হোক না কেন বিস্ময়কর সত্য হচ্ছে, এর ফলে ভারতের দারিদ্র্য পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি। গত ৭-৮ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭-৯ শতাংশে পৌঁছলেও নিচের দিকের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবনমানের কোনো আদল-বদল হয় নি। ভারতীয় সমাজের আকাশ পাতাল শ্রেণী ভেদই মাওবাদীদের জনগণের মধ্যে শক্ত ভীত করে দিয়েছে। কিন্তু হাকিম তো আর হুকুম না দিয়ে থাকনে না তাই সরকার তথা রাষ্ট্র বলছেন, ‘এই দেশে সশস্ত্র বিপ্লবের তত্ত্বের কোনো জায়গা নেই, আমরা মাওবাদীদের এই গণমুক্তির তত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করছি।

’ প্রায় বিশটি রাাজ্যের মাওবাদীদের থাবড়া খেয়ে গাল ফোলা ভারত এখন বড়ই হয়রান। আর মার্কিন দেশ তো গোস্বা করে আছে, মাওবাদীদের দখলে থাকা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহাল থেকে অন্ধ্রের উত্তর পর্যন্ত বিশাল এলাকার প্রাকৃতিক, বনজ ও খনিজ সম্পদের নাগাল তার পেতেই হবে। এ জন্যই পুলিশের আধুনিকীকরণের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। রাষ্ট্রের অপতৎপরতা জন্ম দিয়েছে সালোয়া জুদুম নামের অত্যচারী বাহিনী। আসলে সালোয়া জুদুম হলো মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে জমি খালি করানোর একটি মহতী সরকারি ও শৈল্পিক প্রচেষ্টা।

গ্রিন হান্ট অর্থাৎ মাওবাদীদের কতল করার তত্ত্ব দিচ্ছে সরকার। আরো কত কি! কিন্তু বসে নেই ভারতের বুড়োহাবড়া, হামবড়া ইতিহাসের ভেতর বেড়ে উঠা হাজের হাজার তাগড়া, সেয়ান ছত্রধর মোহতা, দীপকেরা, ডমরুধরের মত আদিবাসী যুবকেরা আজ মাওবাদীদের সেনার এক বড় অংশ। পালার শেষদৃশ্যে যেই জিতুক বা না জিতুক, মাওবাদী নেতা কিষাণজীর সেনারা ঢুকছে বটে, কিন্তু বেরোবে কি? তারা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের একের পর এক রাজ্যের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি বা নকশাল আন্দোলন নামক বিস্ফোরক, তীর-ধনুক হাতে। যেই করেই হোক ঘায়েল করতে হবে শোষণের কোপানল। গোমর ফাঁস করে দিতে হবে প্রতিক্রিয়াশীল ধনীকশ্রেণী, বিদেশিদের দালাল এবং সামন্তপ্রভুদের সরকার এ ভারত সরকরের।

মাজা ভেঙ্গে দিতে হবে বড় কর্তার, বড় হুজুরের। আধখেঁচড়া, বদমায়েশ শ্রেণী দালালদের শিগগিরি বুঝিয়ে দিতে হবে গরিবের সাথে এতদিনের মাস্তানির খেসারত, গুষ্টি উদ্দার করে ছাড়তে হবে তুই-তুকারি করে নাজেহাল করার পাল্টা চোট কত তিতা। জুলুমবাজের পেটের ভুড়িতে চোরার টান লাগাতে প্রস্তুত এরা, এসব আদিবাসী সকলেই। গোবেচারা এসব আদিবাসী লোকগুলো জানাতে চায় আধপেট খেয়ে না খেয়ে দিন গুজরান কত কষ্টের। আমরা শাইনিং ইন্ডিয়ার বগলে থাকা, ইন্ডিয়া দ্বারা নাস্তানাবুদ এ বঙ্গদেশের সরকার দ্বারা তুলাধুনায় থাকা, সরকারের খাছিলতের মর্জিমাফিক, মালিক শ্রেণীর দান-খয়রাতে থাকা মানুষগুলো ঐ নাক বোঁচকা, খচ্চর মার্কা আদিবাসীর জন্য ইতিউতি হায়-হুতাশ করা ছাড়া আর কিবা করতে পারি? আমদেরই তো কত সমস্য তবু খাচ্ছি দাচ্ছি, ভাগ পাচ্ছি, পাদাপাদি করছি আর ইন্টারনেটে তক্কো করছি, যুইত মেরে চোখ বুজে থাকি।

এতো বেশ আছি। কোথাকার কোন ভারতের জঙ্গলে চিরুনি অভিযান চলছে, গ্রিন হান্ট চলছে, টিপে টিপে মারা হচ্ছে মাওবাদী নাকশাল বিপথগামীদের- ওসব আবোলতাবোল জিনিসের দিকে, আমাদের নজর না দিলেও চলবে। ক্যান এত টালবাহানা কারস্, একটু বশ মেনে থাক, আফোসরফাটাও করতে পারিস না, এত অতিষ্ঠ হয়ে লাভ কি? এ হল আমাদের ভেদবিচার। যাই হোক কথার কসরৎ লম্বালম্বি না করে সোজা বলতে চাই আমাদের কিছু একটা করার আছে। নোয়াম চমস্কি, অরুন্ধতী রায়, ডেভিড হার্ভে, অমিত ভাদুড়ী, প্রশান্ত ভূষণ, জন বেলামি ফস্টারসহ ভারত ও বহির্বিশ্বের প্রায় ৩০০ জন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব ভারতীয় শিক্ষাবিদ ও সামাজিক আন্দোলনের কর্মীদের মতো আদিবাসীদের পক্ষাবলম্বন করে সংহতি প্রকাশ করে একটি প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষার করার মতো এবং তা প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ-এ বরাবর প্রেরণ করার মতো ঘটনা কি আমরা ঘটাতে পারি না? আমরা কি পারবো একদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে এমন একটা কিছু করতে (যারা বিষয়ের সাথে একমত কবি-লেখক-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-সংস্কৃতিককর্মী-ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-চলচিত্রকার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক সংগঠনসহ দেশের সর্বস্তরের আমজনতা), ফেসবুকসহ ব্যক্তিগত সকল নেটওয়ার্ক মিলিয়ে, বিভিন্ন যোগাযোগের তৎপরকার মাধ্যমে- কোন এক নির্দিষ্ট দিনক্ষণে ব্যানার, প্লেকার্ড ইত্যাদি সমেত ভারতীয় দূতাবাসের উদ্দেশ্যে স্মরকলিপি প্রদানের পদযাত্রা, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি স্মারকলিপি প্রেরণ, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর ও ‘ভারতের আদিবাসী, মাওবাদী বনাম ভারত সরকারের দ্ব›েদ্ধর উৎস, লাভ-ক্ষতি’ এসব বিষয়ে আলোচনা, বক্তব্য, কবিতা, গান ইত্যাদী ইত্যাদী অর্থাৎ আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকা সকল কিছু নিয়ে এ আগ্রাসনের বিরোদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আয়োজন করা।

আর তর সয়ে থাকা, দেরী করাটা ঠিক হবে কিনা বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের হাতেই তা ছেড়ে দিলাম। খেয়াল রাখা উচিত, কিছু করতে পারাটা আমাদের বাস্তবতার জন্যও লাগসই। আমাদের তেল-গ্যাস-কয়লা, খনিজ সম্পদ রক্ষার মানদন্ডে এটা বিবেচনা করা উচিত। এসব বললাম সই। এখন আফসোস হচ্ছে ঘরে বসে হম্বিতম্বি করার বেলায় আমরা সকলেই ওস্তাদ, রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার হিম্মত আমাদের আছে কি? ১২.০৩.২০১০, শুক্রবার।

যিশু মহমমদ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.