পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় ,,,,,পথের পাশেই আছে মোর দেবালয়
নবীজি বলেছেন জ্ঞান লাভের জন্য দরকার হলে চীনে যাও,
সেখানে বুয়া আমাকে ঘরে বসে বসে জ্ঞান দিচ্ছে এতে সমস্যা কি?
আর কিছু জানতে হলেই যে আমাকে বিদগ্ধ সূধীজনের কাছে যেতে হবে সেটা আমি বিশ্বাস করিনা।
যাক এসব পাকা পাকা কথা। সেদিন সকালে আমি বিছানায় বসে মনযোগ দিয়ে পেপার পড়ছি তখন সে ঘর মুছতে আসলো। আমি বুঝিনা সে কেন যেন ঐ সময়টাকেই বেছে নেয় আলাপচারিতা করার জন্য। ঐ সময় আমাকে কি বেকার বেকার লাগে তার কাছে !
রাজনীতি থেকে শুরু করে সর্ব বিষয়েই তার অগাধ পান্ডিত্য।
সে হলো তার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম বউয়ের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করায় সে বউ নারী নির্যাতন মামলা করেছে এতে তার স্বামীকে এখন জেলের ভাত খেতে হচ্ছে!
বুয়ার ভাষায় 'খালাম্মা সে বউয়ের চরিত্তর ভালো ছেলনা তাই আমাকে বিয়ে কইরেছে'।
বুয়ার দেশ যশোর, সে আমার বাসায় ঠিকে কাজ করে ।
সে বলছে' আমি কিছু টাকা জমিয়ে একটা ঘর তুইলেছি বাড়িতে, এরপর ফতির বাপ আর আট বচ্ছর পর ছাড়া পেইলে যেন একটা দোকান দিয়ে বসতি পারে তার জন্যি কিছু টাকা জমাচ্ছি'।
আমি বল্লাম, 'কবে ফতির বাপ ছাড়া পাবে তার ঠিক নাই এখনি তুমি খেয়ে না খেয়ে টাকা জমাচ্ছ'?
'খালাম্মা যে কি বলেন "মইরবো বইলে কইরবোনা... বাচলি খাবো কি"? 'মাইনে বুইজেছেন মইরে গেলেতো গেলামই কিন্ত যদি বাইচে থাকি তাহলি কি খাবো? টাকা জমাতি হবিনা আমাগের একটা ভবিষ্যৎ আছেনা'! বলে আমার দিকে তাকিয়ে ভাংগা গালে একটা মিষ্টি হাসি দিল।
কি প্রচন্ড তার দর্শন, কি পজিটিভ তার চিন্তা ভাবনা, মনে হয় পৃথিবীর কোনো প্রচন্ড আশাবাদী ব্যাক্তিত্বও হয়তো এমন একটা কথা বলতে পারেনি।
কিন্ত এখানে যখন কারো কারো ব্লগে স্বরচিত দুঃখের কথা পড়ি তখন বড় টাওয়াল নিয়ে বসি যাতে কী বোর্ডটা চোখের পানিতে নষ্ট না হয়,
বুয়াই আবার পরদিন ওই টাওয়াল ধুয়ে শুকাতে দেয়।
তার একটা কাজ বাড়লো আরকি !
***
ছবি রাজা রবি বর্মা নেটের সৌজন্যে।
লিখেছেনঃ মাহজাবীন জুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।