আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুলখানি - একটি জঘন্য প্রথা

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
উপরের ছবিটি দেখে কী মনে হয় ? কোন অনুষ্ঠান এটা ? বিয়ের অনুষ্ঠান নয় কি ? নাকি মুসলমানি ? নাকি কারো জন্মদিনের অনুষ্ঠান ? নাকি কোন সামাজিক উৎসব ? কোনটা হতে পারে ? এই ছবি দেখে কোনটা মনে হয় ? এই ছবিটা কোন উৎসবের নয়, শোকের। এই ছবিটা একটা কুলখানির। কিন্তু ছবি দেখে কি মনে হয়, এটা কোন শোকের ছবি ? কেমন উৎসব মনে হয় না ? এই কুলখানি হচ্ছে এক স্কুল ছাত্রের। সে তার সহপাঠীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় সহপাঠীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয় স্কুল ছাত্র আরাফাত।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দামী ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের জন্য তার বন্ধুরা তাকে নির্মমভাবে খুন করেছে। একটা খুন হওয়া স্কুল ছাত্রের কুলখানিতে যে শোক থাকার কথা, তা কি আছে এই অনুষ্ঠানে ? আমার কথা : আমি যতটুকু জানি, কুলখানির কোন ধর্মীয় ভিত্তি নাই। এটা একটা সামাজিক প্রথা। হিন্দু ধর্ম থেকে এই প্রথা মুসলমানদের মধ্যে ঢুকেছে। হিন্দুদের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের দেখাদেখি মুসলমানেরা এই অনুষ্ঠান করে থাকে।

মূলত কুলখানি এখন একটা স্ট্যাটাস সিম্বল। কে কত খরচ করল, কে কত মানুষকে দাওয়াত দিতে পারল - সেটার একটা প্রতিযোগিতা। অনেক সময় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃতু্যর পর এই কুলখানি পরিবারের কাছে বোঝার মতো মনে হয়। কিন্তু সামাজিক চাপে পরিবারটি বাধ্য হয় কুলখানি করতে । এই কুলখানির নামে উৎসব একটা পরিবারের সর্বনাশ ছাড়া কিছু নয়, তাদের আর্থিক ক্ষতি ছাড়া কিছু নয়।

মধ্যবিত্ত পরিবারের তখন শ্যাম রাখি কুল রাখি এ রকম অবস্থা হয়। কিন্তু একটা মানুষ মারা যাওয়ার পর ৪ দিনের দিন একটা বিয়ে বাড়ির মতো উৎসব করা কি কোন সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে ? শুনেছি, আফ্রিকায় কোন একটা অসভ্য জাতি নাকি মানুষ মারা গেলে তার লাশ রেঁধে খায়, খাওয়ার সময় বিপুল উৎসব করে। আমরাও সেই রকম বিপুল উৎসব করি, পার্থক্য কেবল এইটুকুই আমরা লাশ খাই না, খাই একটা পরিবারের ভবিষ্যৎ।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।