আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাসায় হীরা প্রস্তুতি এবং এর রসায়ন

কামরুল কেমিস্ট বাসায় হীরা প্রস্তুতি এবং এর রসায়ন হীরা আর কিছুই নয় কার্বনের একটি রূপ মাত্র। গ্রাফাইট আর হীরার মধ্যে মূল পার্থক্য কার্বন কার্বন বন্ধনে। বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে ক্রিত্তিম হীরা প্রস্তুত করা হয়। শিল্পক্ষেত্রে এর ব্যপক ব্যবহার রয়েছে। ডাঃ হল সবপ্রথম ক্রিত্তিম হীরা প্রস্তুত করেছিলেন।

তবে ব্যপক চাহিদার কারনে এখন আর হলের প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় না। বানিজ্যিক ভাবে হীরা প্রস্তুত করার জন্যে হলের প্রক্রিয়া এখন অকার্যকর। এখন আমরা দেখব কিভাবে বাসায় হীরা প্রস্তুত করা যায়। এ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত হীরার আকার অত্যন্ত ক্ষুদ্র। বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী।

যা যা লাগবেঃ ১. একটি ভালো মাইক্রোওয়েব ওভেন। ২. কফি মগ ( ২ টি) ৩. ৩ মি. মি. গ্রাফাইট পেন্সিল ( ৩ টি) ৪. সামান্য অলিভ অয়েল। ( কয়েক ফোঁটা) ৫. ১০০% সুতির সুতা এগুলোর মধ্যে ১০০% সুতির সুতা খুজে পাওয়া একটু কষ্টকর হবে। কাজ-০১ঃ এই পদ্ধতিতে মাইক্রোওয়েব ব্যবহার করা হয় গ্রাফাইটকে তাপ দিয়ে প্লাজমা অবস্থায় নেয়ার জন্যে। আর অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয় গ্রাফাইট যাতে পুড়ে না যায় [ বেশি তাপে গ্রাফাইট বাতাসের (অক্সিজেন) সাথে বিক্রিয়া করে পুড়ে (আগুন ধরে ) যায়]।

এছাড়া গ্রাফাইট পেন্সিলে যে বাইন্ডার ( আঠালো পদার্থ ) থাকে তা আলাদা করতে অলিভ অয়েলের ভুমিকা ব্যাপক। কয়েক ফোঁটা তেল একটি প্লেটে নিতে হবে। তারপর তেলের মধ্যে ভালভাবে সুতা ভিজিয়ে নিতে হবে। সুতা কিছু তেল শোষণ করে নিবে। কাজ-০২ঃ এবার সুতা নিয়ে সুতায় একটা গিত্তু দিন।

গ্রাফাইটের টুকরো টিকে এবার গিত্তুর ভিতরে দিয়ে দিন। খুব সাবধানে সুতার দুই প্রান্ত টেনে গিত্তু শক্ত করুন। এবার দুইপাশে দুটি টুট পিক ( কাঠি) দিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। কাজ-০৩ঃ মাইক্রোওয়েব এর ভিতরটা ভালো করে পরিস্কার করে নিন। কাজ-০৪ঃ খুব ই সাবধানে গিত্তু খুলে নিন।

গিত্তু খোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে এটি যাতে এদিক সেদিক নড়ে না যায়। একটি ক্ষুদ্র জায়গায় তেল যাতে সীমাবদ্ধ থাকে। কাজ-০৫ঃ এবার কফি মগের পিছন দিকে চিত্রের মত করে গ্রাফাইট বসিয়ে নিন। সমান্তরাল যে দুটি গ্রাফাইট টুকরো রয়েছে তাদের মধ্যে কিন্তু কোন তেল লাগানো হয়নি। বড় মগটি নিচে এবং ছোট মগটি উপরে রাখবেন।

পুরো সিস্টেম টি ক্রুসিবলের ন্যায় কাজ করবে। কাজ-৬ঃ এবার এই বানান ক্রুচিবলতি মাইক্রোওয়েবে রাখুন। জায়গা না হলে মাইক্রোওয়েবের গ্লাস ত্রে টি সরিয়ে রাখতে পারেন। কাজ-৭ঃ মাইক্রোওয়েবে সর্বচ্ছ সময় সেট করে দিন। কাজ শেষে মগ ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

সব কিছু ঠিক থাকলে এর ভিতরে আপনি ১২০০ ডিগ্রীর বেশি তাপমাত্রা তুলতে পারবেন। কাজ-৮ঃ এবার আপনার উৎপাদনটি দেখুন। রসায়ন কি বলেঃ এই প্রক্রিয়ায় ডায়মন্ড উৎপাদন কখনই সম্ভব নয়। কেন? কারন ১. আমরা যে পেন্সিল ব্যবহার করি গ্রাফাইট ছাড়া অন্য কাদা জাতিয় দ্রব্য থাকে। ২. কার্বন রি-ক্রিস্তালাইজ করার জন্যে প্রয়োজনীয় তাপ সরবরাহ করার ক্ষমতা মাইক্রোওয়েবের নেই।

৩. তেল ব্যবহার করে এই তাপমাত্রায় পোঁছানো গেলেও প্রয়োজনীয় চাপ পাওয়া যাবে না। ডায়মন্ড তৈরিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০০০০ গুন বেশি চাপ দরকার। ৪. কেউ কাউ দাবি করতে পারেন যে সিলিকন কার্বাইড বা জিরকনিয়াম অক্সাইড এর মত তাপ শোষণ কারি পদার্থ ব্যবহার করে এটি করা যেতে পারে, কিন্তু প্রয়োজনীয় চাপ পাবেন কোথায়? ৫. এটি সত্য যে ছোট ক্রিস্তাল তৈরিতে বেশি চাপের দরকার নেই কিন্তু ছোট ক্রিস্তালের কোন বাজার মুল্য নেই। ৬. এটি সত্য যে ডায়মন্ড গ্রাফাইটের চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল , তাই গ্রাফাইট সবসময়েই স্থিতিশীল অবস্থায় যেতে চাইবে। মাইক্রোওয়েব এই প্রক্রিয়ার জন্যে ভালো হতে পারে কারন এটি সঠিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে পারে।

৭. খাবার গরম করতে মাইক্রোওয়েবের ব্যবহার এখনও গবেষণাধীন। কারন মাইক্রোওয়েব আমিষ কে মিউট্যান্ট করে ফেলে যা ক্যান্সার এর জন্যে দায়ী। সতর্কতা ঃ লেখাটি শুধু আপনাকে আনন্দ দেওয়ার জন্যে, দয়াকরে বাসায় ট্রাই করবেন না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.