হরতাল ডেকে মাঠে নেই ‘কৌশলী’ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অন্যান্য হরতালের মতো আজকের হরতালেও রাজধানীতে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রায় কেউই রাজপথে নামেননি। ‘পিকেটিং’ বা মিছিল নিয়ে কর্মীদেরও তেমন কোনো তত্পরতা চোখে পড়েনি।
তবে দলের নেতারা বলছেন, সরকার ও পুলিশের মারমুখী অবস্থানে ‘কৌশলী’ অবস্থান নিয়েছে বিএনপি।
তাঁরা এখন যথাসম্ভব গ্রেপ্তার ও মামলা এড়িয়ে ‘শক্তি ক্ষয়’ কম করতে চান। যে কারণে হরতাল ডাকলেও মাঠে নেই নেতা-কর্মীরা।
ঢাকায় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে আজকের হরতাল ডেকেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট।
আজকের হরতালে সকালে রাজধানীর কলেজগেট ও আদাবর এলাকায় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিমানবন্দর এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেছেন হরতাল-সমর্থকেরা।
এ ছাড়া মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছেন হরতাল-সমর্থকেরা।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বাইরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নয়াপল্টনে দলটির নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। কার্যালয়ের ভেতরে আছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামানসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
এর আগে হরতালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কিছু নেতা-কর্মী জড়ো হতেন। গত কয়েকটি হরতালে সেটি আর দেখা যাচ্ছে না।
অবশ্য বিএনপি সূত্র দাবি করেছে, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত, দপ্তরের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তার বাইরে কেউ হরতাল চলাকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকবেন না। দলের পক্ষ থেকে সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় থেকে পিকেটিং করতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে রাজধানীতে পিকেটিংয়ের তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
দলের শীর্ষ অনেক নেতার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘এর একমাত্র কারণ রাস্তায় দাঁড়ানোর মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। রাস্তায় নামলেই পুলিশ হাত-পা ভেঙে দেবে। তা ছাড়া বিএনপির খুব বেশি নেতাও বাইরে নেই, যাঁরা আছেন তাঁরা আমার মতো ৮০-৮২ বছরের। পিকেটিং বা মিছিল করা শারীরিক কারণে অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়।
’
বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় থেকে পিকেটিং করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে হরতালে রাজধানীতে নেতা-কর্মীদের তেমন কোনো তত্রপতা নেই কেন—জানতে চাইলে শামসুজ্জামান বলেন, সরকার এখন আনুষ্ঠানিকভাবে মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তার ওপর পুলিশ এখন অনেক বেশি ‘হিংস্র’। তিনি জানান, এ কারণে বিএনপি এখন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। তাঁরা গ্রেপ্তার হয়ে এখনই সব শক্তি ক্ষয় করতে চান না।
এ জন্য রাজধানীতে পিকেটিং বা হরতালের সমর্থনে মিছিল তুলনামূলক কম। তিনি দাবি করেন, ঢাকার বাইরের চিত্র ভিন্ন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।