www.nationalnews.com.bd
ছাগল উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছিলো খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার। তাই হাতে নিয়েছিলো ছাগল উন্নয়ন প্রকল্প। এবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দেখছে মহিষ উন্নয়নের স্বপ্ন। আপাতত ৩৪ কোটি টাকা হাতে নিয়ে মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প মাঠে নামাচ্ছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, এ প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ সরকারি সাহায্য থেকেই আসবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৃহস্পতিবার এ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার
সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। এর আগে মাঠে মারা গিয়েছিলো খালেদা জিয়া আমলের ছাগল উন্নয়ন প্রকল্প। ওই প্রকল্প থেকে ইতিবাচক কোন অর্জন তো দূরের কথা তহবিলই গায়েব হয়ে গিয়েছিলো তার।
উপরন্তু ছাগল ইস্যুতে আমজনতা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে হাস্যরস নেহায়েত কম হয়নি। মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের কথা শোনা মাত্রই তাই সেই ছাগল প্রকল্পের দৃষ্টান্ত টানতে দেখা যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলকে। শোনা যাচ্ছে, ছাগল উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যর্থতার জলজ্যান্ত উদাহরণ সামনে থাকায় মহিষ প্রকল্পের উদ্যোক্তারা একটু বেশিই সিরিয়াস। খোদ একনেক সভাতেও নাকি এ বিষয়ক গুঞ্জন ছিলো। আর স্বভাবতই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি সফল করার পণ করেছে।
দেশে মাংসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একটু নাকি মহিষমুখী নীতিই নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকারের নীতি নির্ধারকদের একাংশ। তাদের পরামর্শে এরই মধ্যে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে শুরু হয়েছে ভারতীয় মহিষের মাংস আমদানি। সেই মাংস ১৩০ টাকা কেজিতে ঢাকার বাজারেও বিকোবে বলে জানা গেছে। মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প সফল হলে ভারতীয় মাংস নির্ভরতাও অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মহিষ প্রকল্পসহ বৃহস্পতিবার প্রায় ১ হাজর ১শ ৬৩ কোটি টাকা ব্যয় সম্বলিত ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার যোগাবে ৮শ ৩৩ কোটি টাকা। বাকি ৩শ ৩০ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সরকারি অর্থায়নে ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প। ১শ ৬৯ কোটি ব্যয়ে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকা হাইমচর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাম তীর রক্ষা প্রকল্প, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছ ব্যালট বক্স (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।
এর মধ্য সরকারি অর্থায়ন করবে ৪ কোটি। বাকি ৪৬ কোটি টাকা আসবে প্রকল্প সাহায্য থেকে। নির্বাচন কমিশনের অন্য একটি প্রকল্প হলো কনস্ট্রাকশন অব উপজেলা এণ্ড রিজিওনাল সার্ভার স্টেশনস ফর ইলেক্ট্রোরাল ডাটাবেইজ (সংশোধিত) প্রকল্প। ৩২৬ কোটি টাকার এ প্রকল্পে সরকারি তহবিল থেকে আসবে ২৩০ কোটি ও প্রকল্প সহায্য থেকে পাওয়া যাবে ৯৬ কোটি টাকা। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে জোরারগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে উন্নীতকরণ (সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় করা হবে ৪৬ কোটি টাকা।
সরকারি অর্থায়নে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পও অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া একনেক সভায় অনুমোদন পায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকাস্থ গজনবী সড়কে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণার্থে বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প এবং ৩শ ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের হাইজিন, স্যানিটেশন এ্যাণ্ড ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প (১ম সংশোধিত)একনেক সভায় অর্থমন্ত্রী ও একনেক-এর বিকল্প চেয়ারম্যান আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার (বীর উত্তম), কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, ড. মসিউর রহমান, ড. আলাউদ্দিন আহমেদ ও ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম সভা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। সভায় মন্ত্রি পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিকল্পনা সচিব, পরিকল্পনা কমিশন সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।