আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সহীহ্ শিবিরনামা

সৎ সংগে স্বর্গবাস, অসৎ সংগে সর্বনাশ

জামায়াত-শিবিরের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপার। ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে এই চক্র ১৯৭১ সালে মানুষকে হত্যা করেছে, ঘরে আগুন দিয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে। এখনো হত্যা, রগ কাটা অব্যাহত রেখেছে। এখনো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা মেধাবী ছাত্র ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হত্যার কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এসব ঘটনা ’৭১-এর বুদ্ধিজীবী নিধনেরই ধারাবাহিকতা।

কিছুদিন যাবৎ তাদের রগ কাটা কর্মসূচি বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। শিবিরের বর্বরতার ইতিহাস তুলে ধরেছেন আনিস রায়হান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক হানাদারদের যারা সহযোগিতা করত সেই জামায়াতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠনের নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংস্থা। ১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ইসলামী ছাত্র শিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে। বর্বরোচিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য সর্বস্তরে নিন্দিত জামায়াতে ইসলামীর এই ছাত্র সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় জবাই করে হত্যার রাজনীতি শুরু করে চট্টগ্রাম থেকে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে হামলা-সহিংসতা-সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়।

তবে এ ক্ষেত্রে অপরাপর ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে শিবিরের পার্থক্য রয়েছে। শিবির সরাসরি হত্যার মিশনে নামে। তাছাড়া এরা যাকে আঘাত করে তাকে চিরতরে পঙ্গু-অচল করে দেয়। এর মাধ্যমে তারা সংশ্লিষ্ট কর্মীটিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার এবং এর মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের সাবধান করে। এ জন্য শিবিরের নৃশংসতার সঙ্গে অন্য কারো তুলনা হয় না।

ফিরে তাকানো যাক একবার শিবিরের বর্বরতার দিকে। মার্চ, ১৯৮১ : প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় শিবির ক্যাডাররা চট্টগ্রাম সিটি কলেজের নির্বাচিত এজিএস ছাত্রলীগ নেতা তবারক হোসেনকে কলেজ ক্যাম্পাসেই কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। কিরিচের এলোপাতাড়ি কোপে মুমূর্ষু তবারক যখন পানি পানি করে কাতরাচ্ছিল তখন এক শিবিরকর্মী তার মুখে প্রস্রাব করে দেয়। ১১ মার্চ, ১৯৮২ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৩ বাস বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে শিবির ক্যাডাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এই সহিংস ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

২৮ মে, ১৯৮৪ : চট্টগ্রাম কলেজের সোহ্রাওয়ার্দী হলের ১৫ নম্বর কক্ষে শিবিরেরকর্মীরা ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও মেধাবী ছাত্র শাহাদাত হোসেনকে জবাই করে হত্যা করে। ১৯৮৬ : শিবিরকর্মীরা ডান হাতের কব্জি কেটে নেয় জাতীয় ছাত্রসমাজ নেতা আবদুল হামিদের। পরবর্তীতে ঐ কর্তিত হাত বর্শার ফলায় গেঁথে তারা উল্লাস প্রকাশ করে। ৩১ মে, ১৯৮৮ : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মেইন হোস্টেলের সামনে, কলেজের প্রিন্সিপাল ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শত শত শিক্ষার্থীদের সামনে ছাত্রমৈত্রী নেতা ডা. জামিল আক্তার রতনকে কুপিয়ে ও হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করে শিবিরের ক্যাডাররা। ১৯৮৮ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাসদ নেতা জালালকে তার নিজ বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা।

জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮ : বহিরাগত শিবির ক্যাডারদের হামলায় আমির আলী হল ছাত্র সংসদের জিএস ও জাসদ ছাত্রলীগ নেতা প্রিন্সসহ ২০-২৫ জন আহত হয়। ১৭ জুলাই, ১৯৮৮ : ভোর সাড়ে চারটার দিকে এস এম হলে বহিরাগত শিবির ক্যাডাররা হামলা চালায় এবং জাসদ ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ও সিনেট সদস্য আইয়ুব আলী খান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য আহসানুল কবির বাদল, হল সংসদের ভিপি নওশাদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। ১৯৮৮ : সিলেটে শিবির ক্যাডাররা মুনীর, জুয়েল ও তপনকে বর্বরভাবে হত্যা করে। আগস্ট, ১৯৮৮ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের বাসভবনে ছাত্র শিবির বোমা হামলা করে। এতে অধ্যাপক ইউনুস বেঁচে গেলেও তার বাড়ির কর্মচারী আহত হয়।

রমজান মাস, ১৯৮৯ : ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফাকে বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী চকপাড়ায় ইফতারের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে হাতের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। নবেম্বর, ১৯৮৯ : নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে সন্ধ্যায় জাসদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর শিবিরের বোমা হামলায় বাবু, রফিকসহ ১০ জন আহত হয়। ২২ ডিসেম্বর, ১৯৯০ : ছাত্রমৈত্রীর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি ফারুকুজ্জামান ফারুককে শিবিরের ক্যাডাররা জবাই করে হত্যা করে। ১৭ মার্চ, ১৯৯২ : পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেলা ১১টার সময় অতর্কিত হামলা চালালে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত পিটু নিহত হন এবং জাসদ ছাত্রলীগের আইভি, নির্মল, লেমন, রুশো, জাফু, ফারুক এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের রাজেশসহ প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হয়। এদের অধিকাংশেরই হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয় এবং রাজেশের কব্জি কেটে ফেলা হয়।

এই হামলার সময় শিবির ক্যাডাররা এস এম হল, আনোয়ার হল এবং লতিফ হল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ব্যাপক আকারে গান পাউডারের ব্যবহার করায় হলের জানালার কাচগুলো গলে গিয়েছিল। লতিফ হলের অনেক কক্ষ এখনো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এই হামলার তীব্রতা এতই ছিল যে, বেলা ১১টায় শুরু হওয়া হামলা রাত ৩টায় বিডিআর নামানোর আগ পর্যন্ত বন্ধ হয়নি। মে, ১৯৯২ : ইসলামী ছাত্রী সংস্থা রাজশাহী কলেজ শাখার নেত্রী মুনীরা বোমা বহন করার সময় বিস্ফোরণে মারা যায় এবং তার সহযাত্রী-সহকর্মী আপন খালা এবং ঐ রিকশাওয়ালা আহত হয়।

১৯ জুন, ১৯৯২ : শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে হরতাল কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং ২৪ জুন তিনি মারা যান। আগস্ট, ১৯৯২ : বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী নতুন বুথপাড়ায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলের বাড়িতে বোমা বানানোর সময় শিবির ক্যাডার আজিবরসহ অজ্ঞাতনামা অন্তত আরো তিনজন নিহত হয়। বিস্ফোরণে পুরো ঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং টিনের চাল কয়েকশ গজ দূরে গাছের ডালে ঝুলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে পুলিশ মহল্লার একটি ডোবা থেকে অনেকগুলো খ-িত হাত-পা উদ্ধার করে। যদিও শিবির আজিবর ছাড়া আর কারো মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি।

পুলিশ বাদী হয়ে মতিহার থানায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলকে প্রধান আসামি করে বিস্ফোরক ও হত্যা মামলা দায়ের করে। প্রায় ৫ বছর পলাতক থাকার পর মামলা ম্যানেজ করে মোজাম্মেল এলাকায় ফিরে আসে এবং জামায়াতের রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হয়। ৬ ফেব্র“য়ারি, ১৯৯৩ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালালে ছাত্রদল ও সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ মিলে গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ওপর শিবিরের হামলায় ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপনসহ ৫ ছাত্র নিহত হয়। ১৯৯৩ : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এনামুল হকের ছেলে ও ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ মুছাকে শিবিরকর্মীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩ : বহিরাগত সশস্ত্র শিবিরকর্মীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ক্রিকেটার জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

১৯৯৪ : পরীক্ষা দিতে আসার পথে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় ছাত্রমৈত্রী নেতা প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয় শিবিরকর্মীরা। ১৩ ফেব্র“য়ারি, ১৯৯৫ : শিবিরকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার আগে বর্বর শিবির ক্যাডাররা তার হাত ও পায়ের রগ কেটে নেয়। জুলাই, ১৯৯৫ : জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র শিবির কর্মীরা হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়। এ হামলায় প্রায় ২৫ জন ছাত্রদল নেতাকর্মীর হাত পায়ের রগ কেটে নেয় শিবির ক্যাডাররা।

১৯৯৬ : জাসাস রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং ছাত্রদল নেতা ডুপ্লের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এদের বাঁচাতে এসে দুইজন সহপাঠী ছাত্রী এবং একজন শিক্ষকও আহত হন। ১৯৯৭ : চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করার জন্য শিবির ক্যাডাররা ছাত্র সংসদের ভিপি মোহাম্মদ জমির ও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমদকে গুলি করার পর পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। ১৯৯৭ : বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দসহ প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে ছাত্র-শিবির। ১৯৯৭ : গভীর রাতে রাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আহত হন।

রাবি জিমনেসিয়াম পুলিশ ক্যাম্পেও বোমা হামলা করে শিবির। ১৯৯৮ : শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্র শিবির। ছাত্র-কর্মচারীদের প্রতিরোধে অধ্যাপক ইউনুস প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মক আহত হন তিনি। ২২ আগস্ট, ১৯৯৮ : ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী চারুকলা ২য় বর্ষের ছাত্র সঞ্জয় তলাপত্রকে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। ১৯৯৯ : রাবিতে অবস্থিত ’৭১-এর গণকবরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য স্থাপিত ভিত্তি প্রস্তর রাতের আঁধারে ছাত্রশিবির ভাঙতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী বাধা দেন।

ফলে শিবির ক্যাডাররা তাকে কুপিয়ে আহত করে এবং ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙ্গে ফেলে। ১২ জুলাই, ২০০০ : চট্টগ্রামের বহদ্দরহাটে শিবির ক্যাডাররা মাইক্রোবাস চালক, পথচারি ১ রিকশা চালক এবং মাইক্রোবাসের মধ্যে থাকা ৭ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে ব্রাশ ফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ৭ এপ্রিল, ২০০১ : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ২ জন নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ২০০১ : রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে সশস্ত্র ছাত্র শিবিরকর্মীরা কমান্ডো হামলা চালায় এবং ছাত্রীদের লাঞ্ছিত ও আহত করে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ, ২০০১ : রাবি অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহাকে ছাত্রশিবির কর্মীরা হাত-পা বেঁধে জবাই করার চেষ্টা করে।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা টের পাবার ফলে, তাদের হস্তক্ষেপে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ২৬ আগস্ট, ২০০২ : ছাত্রলীগের ১ নারী নেত্রী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতির ওপর ধারালো অস্ত্রসহ হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০০২ : সিলেটের মদনমোহন কলেজে শিবির ক্যাডারদের হামলায় ছাত্রদলের ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়। ২৫ জুলাই, ২০০৪ : শিবির ক্যাডার রবি, রোকনের নেতৃত্বে প্রায় ১৫/২০ জনের একটি দল রাবি ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সিনহার ওপর হামলা চালায়। ইট দিয়ে জখম করার পাশাপাশি তার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চালায় শিবির ক্যাডাররা।

২০০৪ : অধ্যাপক মোঃ ইউনুসকে ফজরের নামাজ পড়তে যাবার সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যদিও এই হত্যা মামলায় জেএমবির দুইজন সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তার পরও এলাকাবাসী অনেকেরই মতামত হচ্ছে ছাত্র শিবিরের ক্যাডাররাই তাকে হত্যা করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালে দুই দফায় ছাত্র শিবির তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৪ : বরিশালের বাবুগঞ্জের আগরপুর ইউনিয়নের ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শামীম আহমেদকে শিবির ক্যাডাররা হত্যা করে।

৩০ অক্টোবর, ২০০৪ : জামায়াতের বর্তমান রাজশাহী মহানগরের আমির আতাউর রহমান এবং প্রক্টর নূরুল আফসারের উপস্থিতিতে ছাত্রীদের মিছিলে হামলা চালিয়ে শিবির ক্যাডাররা প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রীকে রক্তাক্ত করে। ৯ ডিসেম্বর, ২০০৫ : রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে সশস্ত্র ছাত্র শিবিরকর্মীরা হামলা চালায়। ১০ ডিসেম্বর, ২০০৫ : সন্ধ্যায় জুবেরী ভবনের সামনে রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এস এম চন্দনের ওপর হামলা চালিয়ে তার রগ কেটে নেয়ার চেষ্টা চালায় সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা। ২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ : বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী শিক্ষক মহিউদ্দিন এবং রাবি ছাত্র শিবির সভাপতি মাহবুব আলম সালেহীনসহ আরো দুইজন শিবির ক্যাডার মিলে একযোগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে রাবি’র ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবু তাহেরকে হত্যা করে। ২১ আগস্ট, ২০০৬ : রাবিতে অনুষ্ঠিত ‘সেক্যুলারিজম ও শিক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেয়ার অপরাধে অধ্যাপক হাসান আজিজুল হককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিবির।

প্রকাশ্য সমাবেশে তারা অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের গলা কেটে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেয়। ১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে যোগদানকারী নতুন ১ শিক্ষককে শিবির ক্যাডাররা ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর মার্কেট এলাকায় ছুরি চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ক্যাম্পাসে শিবিরের কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করায় তার এই পরিণতি ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০০৭ : শিবির ক্যাডাররা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের ৪ জন সাংবাদিকের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। ২ জন সাংবাদিককে তারা রাবির গোপন ১টি কক্ষে প্রায় ৩ ঘণ্টা আটকে রাখে।

১৯ আগস্ট, ২০০৭ : বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্রাবাসে শিবির ক্যাডাররা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে মারাত্মকভাবে জখম করে। এ সময় তারা ছাত্রাবাসের ৪টি কক্ষ একেবারে তছনছ করে দেয়। ২ মে, ২০০৮ : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন সহকারী প্রক্টরের ওপর শিবির ক্যাডাররা হামলা চালায়। বিজয় দিবস, ২০০৮ : শিবির ক্যাডাররা পাবনার পীরপুর গ্রামে ছাত্রলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান সজীবের ওপর ধারালো অস্ত্র সহকারে হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতরভাবে জখম করে। ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে হত্যা করে ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে রাখে শিবিরের ক্যাডাররা।

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র এ এ এম মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। সাপ্তাহিকে প্রকাশ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.