কথা না বলে আসুন যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করি.
ভারতের সাথে দেশবিরোধী চুক্তি থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতে গ্রেফতার নির্যাতন ও কটূক্তি করছে সরকার। ঢাকা রির্পোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে দেশের স্বার্থের পরিপন্থী চুক্তি করে ভারতকে বন্দর, ট্রানজিট ও করিডোর দিয়ে এসেছে। আর ভারত ২০১০ সালের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। জনগণকে এ বিষয় থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্যই বিরোধী দলের উপর হামলা, জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে কটূক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলা হচ্ছে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য বক্তারা দাবি জানান।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে চিরন্তন বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘‘প্রতিহিংসার রাজনীতি : বিপন্ন মানবাধিকার’’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন। সেক্টর কমান্ডার এম হামিদুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে ও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, দৈনিক নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর, বিজেপি মহাসচিব শামীম আল মামুন, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, গোলাম মর্তুজা, গোলাম মোস্তফা ভূইয়া প্রমুখ।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিহিংসার। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী দল। বিরোধী দলের উপর হামলা, গ্রেফতার, জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে কটূক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলার মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারত চুক্তি থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানো।
প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে দেশের স্বার্থের পরিপন্থী চুক্তি করে ভারতকে বন্দর, ট্রানজিট ও করিডোর দিয়ে এসেছে। আর ভারত ২০১০ সালের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তাই প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে এ বিষয় থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ঘটনা জাতি স্মরণ করবে। ঠন্ডা মাথায় দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করা হয়েছে, বিডিআরকে ধ্বংস করা হয়েছে।
বিডিআর ঘটনার সত্য তথ্য এখনো জনগণের সামনে আসেনি। আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে চাচ্ছে। তারা সিরাজ শিকদারসহ জাসদের ৩৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করে হজম করেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করা হয়েছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের উপর হামলা করা হয়েছে।
আর বিরোধী দলের উপরও হামলা চলছে। তারা বাকশালের মতো চিন্তা-ভাবনা করছে। এইচ টি ইমাম খন্দকার মোস্তাকের কেবিনেটে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছিলেন। শেখ মুজিবকে প্ররোচনা দিয়ে যারা ভুল করিয়েছিল, তারাই শেখ হাসিনাকে প্ররোচনা দিয়ে ভুল পথে পরিচালিত করছে বলে তিনি মনে করেন।
ব্যারিস্টার হায়দার আলী বলেন, জাতীয়তাবাদ ও ইসলামের সমন্বয় যতদিন আছে, ততদিন দেশের স্বাধীনতা থাকবে।
তা না হলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। গত ৩৮ বছরে যে ট্রানজিট ভারত নিতে পারেনি এবার তারা সে ট্রানজিট নিয়েছে। আওয়ামী লীগ পুতুল সরকারের মতো ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ক্রান্তিলগ্নে এসে উপস্থিত হয়েছে। জনগণ ও বিরোধী দলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া যায়।
এখনই ঐক্যবদ্ধ না হলে আর সময় পাওয়া যাবে না। সরকার গণতন্ত্রের কথা বললেও তা দেখা যায়নি, দেশে অসুস্থ রাজনীতি শুরু হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের বিবেককে জাগ্রত করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, বর্তমানে যা হচ্ছে এগুলো টেস্ট কেস। এতে রিঅ্যাকশন যদি কঠোর আসে তাহলে সামনে পরিস্থিতি ভাল হবে, অন্যথায় সামনে আরো বড় কিছু হবে বলে তিনি জানান।
আমানুল্লাহ কবীর বলেন, সরকার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে প্রতিপক্ষের শক্তি পরীক্ষা করতে চায়। শেখ মুজিব দেশের স্বার্থে ভারতের সাথে চুক্তি করেনি। শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্যই সরকার প্রাথমিকভাবে নির্যাতন ও গ্রেফতার করছে বলে তিনি মনে করেন।
আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রতিহিংসা শুরু করেছে।
তারা যা বুঝে তা-ই গণতন্ত্র। তারা সংসদে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছে। প্রশাসন থেকে তাদের বিরোধী লোকদেরকে সরিয়ে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বাইরের শক্তির ইঙ্গিতে চলে আসছে। ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পদত্যাগ করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
শামীম আল মামুন বলেন, জামায়াত শিবির সুসংগঠিত দল। এ জন্য তাদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। বিএনপি বড় শক্তি বিএনপির উপরও হামলা করা হয়েছে। তিনি সমমনা সকল দলকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করার জন্য বিএনপির প্রতি আহবান জানান।
শওকত হোসেন নিলু বলেন, দেশকে অকার্যকর করার জন্য চেষ্টা চলছে।
সবাই আন্দোলনে নেমেছে। এখন সমন্বয়ের প্রয়োজন। ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনার দিনকে কালো দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে হামিদুল্লাহ খান বলেন, সিকিমের মতো বাংলাদেশকে নেয়া যাবে না। এ জন্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন পলিসি গ্রহণ করেছে।
তারা সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ধ্বংস করতে নেমেছে। শিক্ষাব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে নরম করে আনা হয়েছে। এ মুর্হূতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য তিনি আহবান জানান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।