পাঠশালার ছাত্র এখনো
রাস্তা দিয়ে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে হাটছিলাম।
টুং-টাং ঘন্টি বাজিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিক্সার দল জানিয়ে দিচ্ছিল, বরিশাল এখনো মফস্বলের আড়মোড়া ভাঙতে পারেনি। হোঁচট খেলাম পরক্ষনেই..
ঘ্যাঁচ করে সাদা স্টেশন ওয়াগনটা আমাকে ওভারটেক করে থামতেই।
বমির শব্দের সাথে গাড়ির জানালা দিয়ে একটা নারীদেহ বমির তাড়নায় যেন উল্টেই পড়ে যাবে। সামনে বসা ড্রাইভার পেছনে তাকিয়ে গাড়ির আরেক আরোহী পুরুষ লোকটাকে মেয়েটাকে ধরতে বলল।
আমি ততক্ষনে একটু এগিয়ে গাড়ির ভেতরটা স্পষ্ট দেখতে পেলাম। গাড়ির ভেতর বসা একজন ইয়া দাঁড়ি ইয়া জোব্বা'র এক হুজুর বসা। মেয়েটা হেঁচকি তুলে আরো খানিকটা গাড়ির বাইরে চলে যাচ্ছে জানালা পথেই। ওড়না-জামা জড়িয়ে পেঁচিয়ে যাচ্ছে তাই অবস্থা মেয়েটার। কিন্তু কার সিকনেস অসুস্থতার চরমে নিয়ে যাওয়ায় এসবে তার কিছুই আসে যায় না।
আমি ওই স্বল্প সময়ে অবাক হয়ে দেখলাম- মেয়েটা বমির দমকে যতোটা কুকড়ে মুকড়ে আলুথালু হচ্ছে, ঐ হুজুর মশাই'ও তার টুপি দিয়ে নিজের মাথাটাকে আড়াল করে পর্দার শানে নযুল পালনে ব্যতিব্যস্ত। নিজেকে যতোটা সম্ভব মেয়েটার কাছ থেকে গুটিয়ে গাড়ির আরেক পাশে সেটে থাকলেন। সম্ভবত. এই উটকো বিপদ থেকে রক্ষা পাবার আশে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে বেশ ক'টি মানে না জানা মুখস্ত করা সুরা'ও আউড়ে ফেলেছেন।
যা'ই হোক- কোন এ্যাক্সিডেন্ট হোলনা, ড্রাইভার দ্রুত পদক্ষেপ নেবার কারণে।
যে ড্রাইভার হয়তো ঐ হুজুরের মতো পর্দা'র আচ্ছন্ন ব্যাখ্যা জানে না।
কিংবা জানে না মুখস্ত-ঠোঁটস্থ রাশি রাশি সুরা।
জানে শুধু সে মানুষ।
আর মানুষের দায়িত্ব।
এটুকুই যথেষ্ট নয় কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।