অনলাইনে যারা রোজগারের চিন্তা করেন, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা প্রথম টার্গেট করেন গুগল অ্যাডসেন্স । সহজে ফ্রি তেই ব্লগ তৈরী করা যায় । আর এতে গুগলের অ্যাড বসিয়ে দিলেই, টাকা । মানুষের ধারনা এরকমই । এরপর যখন কয়দিন যায়, কোন ভিজিটর এবং ক্লিক না পেয়ে একসময় নিজেই ক্লিক করা শুরু করে দেয় ।
সাথে সাথে না হলেও একটা সময় গুগল ঠিকই এটা ধরে ফেলে এবং অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেয় । ফলে সাঙ্গ হয় অ্যাডসেন্স স্বপ্ন ।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটে । অল্প দুই একটা ব্যতিক্রম ছাড়া ।
দেখতে সহজ মনে হলেও আমার মনে হয় অনলাইনে রোজগারের যে কয়টি উপায় রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে কঠিন অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করা ।
অনলাইনে ওয়েবসাইটের কোন অভাব নেই । পাঠক যেখানে ভালোমানের লেখা পাবে সেখানেই যাবে । আমাদের মধ্যে ইংরেজীতে দক্ষ লোকের সংখ্যা খুবই কম । তাই বেশিরভাগ সময়ই মানসম্পন্ন লেখা আমরা লিখতে পারি না । ইন্টারনেটে অসংখ্য ব্লগার রয়েছে যাদের মাতৃভাষা ইংরেজী ।
তাদের চাইতে ভালো লিখতে পারার যোগ্যতা আমাদের কয়জনের রয়েছে ?
তাছাড়া সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন না জানলে আপনি সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর কিভাবে পাবেন ?
আমার নিজের ঘটনা বলি, সবার মতই আমার প্রাথমিক টার্গেট ছিল অ্যাডসেন্স । কিন্তু টার্মস অব সার্ভিস সম্পর্কে মোটামুটি জানতাম বলে নিজের অ্যাডে নিজে কখনো ক্লিক করিনি । কিন্তু ক্লিক তো দুরের কথা, ভিজিটরও খুব কম পাচ্ছিলাম । সামহয়ারইনব্লগে হাসান ভাইয়ের লেখা পড়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শুরু করি । প্রথম দিকে অনেক কঠিন লাগলেও আস্তে আস্তে মজা পেয়ে যাই ।
কিছুদিন পরই দেখতে পাই নির্দিষ্ট কিছু কিওয়ার্ড এর জন্যে আমার ব্লগ গুগল এর প্রথম পেজে চলে এসেছে । কিন্তু তারপরও আশানুরূপ ভিজিটর এবং ক্লিক কোনটাই পাইনি । কয়দিন পর পেজরেঙ্ক আপডেট এর পর দেখি আমার একটা ব্লগ পিআর ২ তে উঠে এসেছে ।
গেটএফ্রিল্যান্সারে আগেই অ্যাকাউন্ট করা ছিল । একদিন চেক করে দেখি আমার সাইটের রিলেটেড একটা সাইটের জন্যে এসইও এক্সপার্ট চাচ্ছে ।
সেখানে বিড করলাম, আর ক্লায়েন্ট কে আমার সাইটটা দেখালাম আমার কাজের অভিজ্ঞতা হিসেরে । ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে কাজটা দিল । সেই থেকে শুরু হলো আমার নতুন অধ্যায় । এখন প্রায় ১০০০ ডলার এর উপরে কাজ আমার হাতে আছে । এমনকি গতকাল আমার ক্লায়েন্ট কে না করে দিতে হয়েছে নতুন প্রজেক্ট নিতে ।
এত প্রেসার সইবে না ।
কিন্তু অ্যাডসেন্সের সেই ১০০ ডলারের মাইলস্টোন এখনও পূরণ হয়নি ।
তাই নতুন যারা আসছেন এ লাইনে তাদের বলব ওই ১০০ ডলারের সোনার হরিণের পিছনে না দৌড়িয়ে অন্য যে কোনো কাজ শিখে ফেলুন । দেখবেন ওই ১০০ ডলারের চাইতে অনেক বেশি আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে কামাতে পারবেন ।
যারা এসইও শিখতে চান তারা ব্লগিং করতে পারেন, এবং সেই ব্লগ নিয়ে যে কোন একটা কিওয়ার্ড এর জন্য কাজ শুরু করে দেন ।
যখন দেখবেন আপনার সাইটটা সেই কিওয়ার্ডের জন্য গুগলের প্রথম পেজে চলে এসেছেন তখন বুঝবেন আপনি এসইও কাজ শিখে গেছেন । এরপর আস্তে আস্তে ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে বিড করতে শুরু করবেন ।
এসইও কাজে ডাটা এন্ট্রির চাইতে অনেক বেশি টাকা । যারা টেকনিক্যাল কিছু জানেন না, তাদের জন্য এটা হতে পারে অনলাইনে উপার্জনের প্রধান ক্ষেত্র ।
বাংলাদেশে এসইও এক্সপার্ট খুবই কম, এটার মার্কেটের বেশিরভাগ অংশই ভারতীয়দের দখলে ।
সবশেষে বলি, এসইও কাজ কঠিন না হলেও এটার জন্যে দরকার প্রচুর ধৈর্য্য । একটা কিওয়ার্ডের জন্য কাজের রেজাল্ট পেতে দুইমাস পর্যন্ত সময় লাগে । আরেকটা জিনিস দরকার, সেটা হচ্ছে প্রচুর পড়াশোনা ।
পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত আরও কিছু লিখব ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।