প্রকৃতিকে করো তব দাস-চে দ্য আইডল (ব্লগার নং - ৩১৩৩৯)
১.
নিয়ন আলোয় মুখোমুখি আমাদের আঙুলের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায় ধার করা নির্যাস। অনেকগুলো প্রশ্ন হতে পারে,নিয়ন আলো কী?আঙুল কী?নির্যাস কী?আপনার বুক পকেটে রাখা তাজা আগুনের ধারে বসে গাঙচিল বুক চাপড়ায়। আর আপনি নীলিমায় মিশে যান বার বার। নিয়ন আলো আমাদের থেমে যাওয়া রথের ভুল ব্যাখ্যা। আঙুল গভীর রাতে ছাদের কার্ণিশে ঝুলে থাকা হলুদ ফুলের গন্ধ।
নির্যাস ভেতরে বাড়ন্ত শাপলা ফুলের জাগরণ। আপনি এবার জানতে চাইবেন,কচুখেতের সমীকরণ। আমি বলব,জানালায় ঝুলছে মাকড়সার ঝুল। হেঁটে যাওয়া তরুনীর পানে আপনার দৃষ্টি যেতেই আমি বলব,আমাকে মাফ করবেন। এই তরুনীর বুকে রক্তজবার বাসর।
২.
অথবা ক্ষমা করতে পারেন বাঈজীর নাচ। বক্ষবন্ধনীর ফিতে ঘামে ভিজে উঠলে নুপুর গুলো পায়েল সাজে। নষ্ট রঙে সাজানো বাতাস নীল অধর ধরা পড়ে যায় অভ্যস্ত হাতে;কোথাও কোন শব্দ নেই। বাঈজীর ক্লান্তি আকাশ ছুলেই কি তাকে ক্ষমা করা হবে?
পাড়ার সব ছেলে অপেক্ষা করে আছে। আড়ালে তাদের পিতৃদেব বৃন্দ।
জঠরে জমে উঠে বিষ। সহস্র বছর ধরে আমরা ক্লান্ত হয়ে আসছি। তবুও কি তার ক্ষমা নেই?
৩.
আমরা আবার ফিরে যাব নিয়ন আলোর কাছে। নিয়ন আলোয় কি লতাপাতার রক্ত মেশে?নাকি,আভিজাত্য?
ঘর্মক্লান্ত কিশোর ছেলেটার তালাবদ্ধ ভ্যান টির পাহারাদার আমাদের নিয়ন আলো। ওপাড়ার চোর টার নি:শব্দ হেঁটে আসার সাক্ষী আমাদের নিয়ন আলো।
কাকডাকা ভোরে ছেলে টির কান্নার সমব্যথি আমাদের নিয়ন আলো।
৪.
নিয়ন বাতির বুক টা কি কখনো দেখেছেন?ওখানে কতগুলো প্রেত্মাতা বাস করে। ওরা এককালে আমাদের চেনা ছিলো। তাদের মধ্যে একজন ট্রাকচাপা পড়া উদাস কবি,যার স্বপ্ন ছিলো নিজের একটা কাব্যগ্রন্থ প্রকাশনার। কিন্তু তার জানা ছিলো না,কবিতার কোন বাজার নেই।
কবির চেয়ে রসময়গুপ্তের চাহিদা অনেক।
আরেকজন রিক্সাওয়ালা। বস্তির পেছনে নাবালক মেয়েটার নগ্ন লাশ দেখে প্রচন্ড হেসে ছিলেন তিনি। তাকে আরো কিছুদিন পাড়ার মোড়ে,ডাস্টবিনের পাশে,নর্দমায় কিংবা ট্রাফিক পয়েন্টে ও দেখা গেছে।
তারপর নিয়ন বাতির বুকে।
ওখানে একটা মেয়ে ও আছে। মাত্র আটবছর বয়স। তার নাম আর ছবি দিয়ে পত্রিকায় ফিচার হয়েছিলো। অতটুকুন মেয়ে হারিয়ে যাবার আগে জেনেছিলো,পৃথিবীর মানুষ গুলো কালো মুখোশ পরা।
৫.
বাঈজীর ঘরে ফেরা যাক।
মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছে নির্ঘুম। খন্দকার সাহেব কে কথা দেয়া হয়ে গেছে,আগামীকাল রাতে মেয়েটাকে পাঠাতে হবে।
বাঈজীর চোখে কোণে জল জমে।
পরদিন দুর গ্রামে মাটিচাপা দেয়া হয় মা-মেয়ের লাশ। লোকমুখে শোনা যায়,মেয়ের মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছিলো পাষাণ মা।
অতঃপর নিজেই.......
৬.
বাতাসহীন ঘরে কয়েকফোঁটা রক্তের ভেতর পড়ে আছে ছেলেটার উপড়ে ফেলা নখ। পিঠের পোড়া চামড়ার গন্ধে ভারী অন্ধকার।
ভ্যান না পেলে মালিক ওখানে আজ লবণ লাগাবেন।
৭.
আসুন,আমরা আবার চেষ্টা করি। নিয়ন আলো কী?আঙুল কী?নির্যাস কী?
লাল চায়ে চিনি কম বলে থাপড় খেয়েছে চা দোকানের পিচ্চি।
এটাই নিয়ন আলো।
মোড়ের অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে বেওয়ারিশ দুটো কুকুর। ওদের দাঁত গুলোই আঙুল।
চুপিচুপি চারতলার ছাদ থেকে সদ্য যুবক ছুঁড়ে দিলো নিজের দেহ। নিচের পিচে জমে থাকা থকথকে রক্তমাংস গুলোই নির্যাস।
আসুন,এইসব উপাত্ত নিয়ে একটা গল্প লিখি। তার বাজার দর রসময়গুপ্তের চেয়ে বেশি না হলেও কবিতার চেয়ে কিছু টা পাওয়া যায়।
--------------------------------------------------------------------------------
ছবি:এপারে বিশ্বাস
ক্লিক: মহিউদ্দীন দীপ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।