আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রাম

সময়ের প্রয়োজন

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া রাউজান এলাকায় বিআইটিতে (বর্তমান চুয়েট) পড়ালেখা করেছি আমি। তাই চট্টগ্রামের খবর শুনলেই স্মৃতি মনে পড়ে যায়। চট্টগ্রামের একটি খবর পত্রিকা থেকে। চট্টগ্রাম অফিস : সঙ্কটে লুসাই কন্যা কর্ণফুলী নদী। অব্যাহত দখলের কারণে তার অস্থিত্ব হুমকির মুখে।

রাঙ্গুনিয়ার কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত দীর্ঘ নদী পথের দু'তীরের ভূমি ও চর দখল হচ্ছে প্রকাশ্যে ও প্রতিযোগিতামূলকভাবে। কর্ণফুলীতে জেগে ওঠা চর ভূমিদস্যুদের দখলে চলে যাচ্ছে। সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বাংলাদেশ বাস্তুহারা লীগ ও হকার্স লীগ বিশাল জায়গা দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সাইনবোর্ড লাগিয়ে। এতে নদীর দু'তীর ছোট হয়ে আসছে। এছাড়া দূষণের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে বিপর্যয় ঘটছে কর্নফুলীর পরিবেশ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শাহ আমানত ব্রীজের পূর্ব পাশে অর্ধ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এবং পশ্চিমে প্রায় এক কিলোমিটার চাক্তাই থেকে মনোহরখালী ঘাট পর্যন্ত বিশাল এলাকায় শত শত বসতঘর গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন এর সংখ্যা বাড়ছে। চাক্তাই ও মনোহরখালী ঘাট এলাকায় অসংখ্য কাঠের টিম্বার ফেলে নদীর গতিপথে বাধা সৃষ্টি এবং দখল করা হচ্ছে। মনোহরখালী ফিসারী ঘাট এলাকায় মেরিনার্স সড়কের পাশে বাংলাদেশ বাস্তুহারা লীগ ও হকার্স লীগের সাইন বোর্ড লাগিয়ে বিশাল জায়গা দখলের চেষ্টা করছে। মেরিনার্স সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি দোকান।

জানা গেছে শ্রমিকলীগ কর্মী কোরবান আলী ও হারুনের নেতৃত্বে হাকার্স লীগের সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে। চাক্তাই ব্রিজের একটু দক্ষিণ-পূর্বে গড়ে তোলা হয়েছে শত শত বাড়ি ঘর, ছোট ছোট গুদাম ও কারখানা। প্রায় আধা কিলোমিটার নদীর পাড় ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে। বাসা-বাড়িগুলো ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছে ভূমিদস্যুরা। এলাকাবাসীরা জানান, আটটি সিন্ডিকেট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কর্ণফুলী নদী দখল করছে।

এদের মধ্যে সরকার দলীয় নেতাকমীরাও জড়িত রয়েছে। তারা ১০/১২ জনের গ্রুপ করে দিনদিন কর্ণফুলী নদীর দু'পার গিলে খাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা, কদমতলী, শিলক, কোদলা, সরফভাটা, মরিয়ম নগর, পারুয়া, বোয়ালখালীর কালুরঘাট, চরণদ্বীপ, খরনদ্বীপ, কধুরখীল, পশ্চিম গোমদন্ডী, আমুচিয়া, পশ্চিম পটিয়ার শিকলবাহ, কালারপুল, ডাঙ্গারচর, খোয়াজনগর, চরপাথরঘাটা, ইছানগর, নগরীর মোহরা, কালুরঘাট পশ্চিম, বাংলাবাজার, জলিলগঞ্জ, ফিরিঙ্গিবাজার ও ব্রীজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী দখল হয়েছে সবচেয়ে বেশি। নদীর দু'তীর ভরাট করে স্থানীয় সন্ত্রাসী, সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও ভূমিদস্যু এ দখল প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। দখলকৃত জায়গায় গড়ে তুলছে তারা কারখানা, মিল, দোকানপাট, বালু-পাথর-বাঁশও কাঠের আড়তসহ অবৈধসব প্রতিষ্ঠান।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর মতে কর্ণফুলীর দু'তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারের চেয়ে বেশি। ফলে কর্ণফুলীর বুকে নতুন নতুন চর জেগে উঠছে। পরিবেশবিদরা জানান, দখলের কারণে কর্ণফুলী নদী ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়েছে। প্রতিদিন ৭৩০টি করখারখানা, ১৫০টি বড় আকারের শিল্প প্রতিষ্ঠান, ১৯টি ট্যানারি, ২৬টি টেক্সটাইল মিল, ২টি রাসায়নিক শিল্পকারখানা, পাঁচটি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ৫টি সাবান কারখানা, ২টি তেল শোধনাগার, সিইউএফএল, কাপকো ও চন্দ্রঘোনা পেপার মিলের ৭৬০ মেট্রিক টন বিষাক্ত বর্জ্য কর্ণফুলীতে পড়ছে। এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে চলাচলরত ১২০০ ছোট জাহাজ, ৬০-৭০টি তেলের ট্যাংকার, সাড়ে ৩ হাজার ইঞ্জিল চালিত নৌকার বর্জ্যতো প্রতিদিন কর্ণফুলীতে নিঃসরণ হচ্ছে।

ফলে কর্ণফুলীর ২০ প্রজাতির মাছ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে জানালেন পরিবেশবাদীরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.