বাড়ীটা চেনাই যাচ্ছে না। খুব সুন্দর লাগছে।
অথচ জায়গাটা ছিলো একটা ভাগাড়। রহিম মিয়া অবাক চোখে দেখলো এই বদলে যাওয়া। সে যখন প্রথম এখানে তার রাজমিস্ত্রি বাহিনী নিয়ে আসে তখন দুর্গন্ধে দাঁড়াতেই পারছিলো না।
দিনরাত পরিশ্রম করে এই সুরম্য প্রাসাদ তারা দাঁড় করিয়েছিলো। এখনো চোখের সামনে ভাসছে সব।
তারা তৈরী করেছিলো ভেতরের কাঠামো। আকাশী ওয়েদার কোট আর আকাশী কাঁচের ওপর ঝকঝকে রোদের প্রতিফলন মায়াবী এক দৃশ্য তৈরী করেছে।
মুগ্ধ চোখে সব দেখছিলো রহিম।
এ সময় গেট খুলে গেলো। সিকিউরিটির আকাশী পোষাক পরা লোকটা রহিমকে ধমক মেরে রাস্তা ছাড়তে বললো। রহিম সেই ধমক পালন করলো দ্রুত। বেরিয়ে এলো ঝকঝকে নতুন একটা জিপ। ওতে বসে আছে এক সুন্দরী মহিলা।
রহিমের কাছে মনে হলো আকাশ থেকে নেমে আসা এক পরী।
গাড়ীটা চলে যাবার পর রহিম এগিয়ে গেলো গেটের কাছে। সিকিউরিটির লোককে বললো সে ভেতরে যেতে চায়। সিকিউরিটি জানতে চাইলো সে কার কাছে যাবে। রহিম জানালো কারো কাছে না।
শুধু ভেতরে ঢুকে দেখবে ভেতরটা এখন দেখতে কেমন। শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে সিকিউরিটি- ''ভাগ বেটা। পাগল ছাগলের জ্বালায় আর বাঁচিনা। ''
রহিম একটু হকচকিয়ে যায়। সম্বিত ফিরতেই সে বলে, হুনেন বাই, আমি রহিম মিস্তিরি।
এই বিল্ডিং আমি বানাইছি। আমি আছিলাম হেড মিস্তিরি। বহুদিন এই বিল্ডিংয়ের ভিতরে আমি থাইকছি। রঙচঙের ফরে দেইকতে কেরুম লাগে হেইডাই দেইকতে চাইছিলাম। হরেন, আমি ডুকি।
সিকিউরিটি তাকে ধাক্কা মেরে পথে নামিয়ে দেয়। রহিম আবার এগিয়ে এসে খুব মন খারাপ করে বলে, ''হুনেন দারোয়ান বাই, আমি এইখানে থাইকতে আসি নাই। এক কামে আইছিলাম। দুইচাইর মিনিট লাইগতো আমার। আমনে এই ব্যাফহার করার তো কোন দরকার আছিলো না।
- ভাগ বেটা মিস্তিরির বাইচ্চা। আমি দারোয়ান না। আমি সিকিউরিটি।
-আমনে নিজেরে যাই কন্, আমনে দারোয়ানই। এতো ভাব নেন ক্যান ?
এটা শুনে সিকিউরিটি রহিমকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
রহিম ব্যথাপাওয়া ঘাড় ডলতে ডলতে বললো, হুনেন সিকুরিটি সাব, আমনে তো আমার লগে খুব ভাব লইলেন। দুইদিন ফরে আমনের চাকরি নট অই গেলে রহিম মিস্তিরির লগে দেখা করিয়েন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।