আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি দিয়েছি আমরা শহীদদের রক্তের প্রতিদানে ? ? ? (রিপোস্ট)

হে মানব, আজি ওঠো জেগে বিবেকের তাড়নে

আজ(১৬/১২/২০০৯) বাংলাদেশের জন্মদিবস । ১৯৭১ -এর এই দিনে, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর বিজয় এসে ধরা দেয় আমাদের হাতে । পরাভূত হয় দখলদার, অত্যাচারী পাক-হানাদার বাহিনী । পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় 'বাংলাদেশ' নামের একটি নতুন রাষ্ট্র । রক্তের সমুদ্রের উপর জন্ম সেই রাষ্ট্রের ।

মাত্র নয় মাসে আমরা ত্রিশ লক্ষ প্রাণ হারিয়েছি, যেখানে ভিয়েতনামের প্রায় ত্রিশ বছরের সংগ্রামে পঞ্চাশ লক্ষ লোক প্রাণ দিয়েছিল (বিস্তারিত জানতে লিংকটি দেখুন)। জাতি হিসেবে বোধ হয় আমরা রক্ত দিতে কখনোই কার্পণ্যবোধ করিনি । পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষার জন্য প্রাণ দেয়ার একমাত্র নজিরও আমাদের । এছাড়া, বিভিন্ন সময়ই অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রাণ দেয়ার নজির তো ভুরি ভুরি । বিজয় অর্জনের পর ৩৮টি বছর পার হয়ে গেছে ।

আজ হতে ৩৯ তম বছরের শুরু । অথচ বিগত ৩৮টি বছরে আমরা শহীদদের রক্তের নূন্যতম ঋণও কি শোধ করতে পেরেছি ? কি ছিল শহীদদের আকাংক্ষা ? একটি স্বাধীন দেশ, যে দেশে থাকবে না কোন অত্যাচারী, লুটেরার দল; থাকবে না কেউ অভুক্ত ; আর যারা দেশমাতৃকার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তাদের উপযুক্ত বিচার ; আর এতিম করে রেখে যাওয়া নিজের পরিবারের জন্য রাষ্ট্র হতে কিছুটা সাহায্য । এই তো সামান্য কিছু চাওয়া । কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই ৩৮ বছরের বেশীরভাগ সময়ই রাষ্ট্রের ক্ষমতায় ছিল, হয় সেই বিশ্বাসঘাতকেরা অথবা তাদের মদদদাতারা । এজন্য এই ৩৮ বছরে যুদ্ধাপরাধের বিচার তো হয়ই নি বরং পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে সকল প্রমাণ ।

আর যুদ্ধাপরাধীদেরকে করা হয়েছে পুরষ্কৃত । তারা এই দেশে মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছে । আর মুক্তিযোদ্ধারা হয়েছে পদে পদে বঞ্চিত । আজ এই দেশে মুক্তিযোদ্ধারা আর তাদের পরিবার বাঁচার জন্য ভিক্ষা করে, ভ্যান/রিকশা চালায়, কুলিগিরি করে । এরপরও পরিবার পরিজনসহ তিনবেলা আহার যোগাড় করতে পারে না ।

মাত্র তিনশ টাকার জন্য খুনও হয় মুক্তিযোদ্ধা(বিস্তারিত জানতে লিংকটি দেখুন ) । চাকরীর ক্ষেত্রে ৩০% কোটা নিয়েই বিগত বছরগুলোতে অনেক অনিয়ম আর বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে । এর চেয়ে বড় যন্ত্রণার কারণ শহীদদের জন্য আর কি হতে পারে ? আর যেসব মুক্তিযোদ্ধারা জীবিত রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বুকে বা শরীরে নিয়ে তাদের কথা নাই বা বললাম । জাতি হিসেবে এ যে আমাদের জন্য কতবড় লজ্জার, তা অনুধাবন করার ক্ষমতাও আমাদের অনেকেরই নেই । আজও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে চলছে নানা ষড়যন্ত্র ।

এর পেছনে দেশীয় বিশ্বাসঘাতকদের পাশাপাশি আছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠিরও হাত । আমাদেরকে সতর্কতার সাথে কিন্তু দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে । কারণ বেশী দেরী করে ফেললে ষড়যন্ত্রকারীরা আরও সময় পেয়ে যাবে এবং নিত্যনতুন ষড়যন্ত্র করেই যাবে । " আবেগ ভরা কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করব " - এই হোক ৩৯ তম বিজয় দিবসের অংগীকার । ।

। [লেখাটি ১৬/১২/২০০৯ এ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.