কিছু নিজের লেখা আর কিছু নেট থেকে ঘষামাজ়া করা, কেউ অন্য কোথাও লিখতে চাইলে প্লিজ জানাবেন © প্রথমে ব্লগ খোলার পর টান টান উত্তেজনা। কবে পোস্ট প্রথম পাতায় আসবে। কবে প্রথম কমেন্ট করা যাবে।
তারপর নিজের একখানা পোস্ট প্রথম পাতায় আসলো। এবার অপেক্ষায় থাকা নিজের পোস্টে কেউ কমেন্ট করে কিনা।
বারবার নিজের পোস্ট দেখা।
এরপর আইডিয়া পাওয়া যে অন্যের পোস্টে কমেন্ট করলে নিজের পোস্টেও অন্যে কমেন্ট করবে। শুরু হলো অন্যের পোস্টে ধুমাইয়া কমেন্ট। কমেন্টের আদান প্রদানে শুরু হয়ে যায় কারো কারো সাথে সম্পর্ক। এখন এই সম্পর্কওয়ালাদের কেউ পোস্ট করলে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় একটা কমেন্ট করতে হয়।
ভালো হয়েছে, সুন্দর হয়েছে , অসাধারণ হয়েছে , চোখ দিয়ে পানি এসে গেলো , এতো সুন্দর কেমন করে লিখেন ইত্যাদি। কিন্ত মনে মনে ঘোড়ার ডিম লিখেছো।
যাই হোক, প্রথম প্রথম সবার পোস্টে শত শত কমেন্ট করেন, কোনো কোনো ব্লগার। কমেন্ট চলছেতো চলছে। বিগত সাত বছরের বাংলা ব্লগে রাশেদ থেকে শুরু করে এরকম নানাজন কমেন্ট করতেই থাকতেন।
এই কমেন্টওয়ালা এবার যাই লিখেন-তাতে মুহুর্তেই কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়। মূল কথা হলো- জাস্ট কমেন্ট বিনিময়।
এরপর যিনি এতো এতো কমেন্ট করলেন-একসময় উনি দারুন হিট পেলেন। ব্লগার এতে বিষম খুশী। এসব করতে করতে একসময় তার একঘেয়েমি চলে আসলো।
তিনি অন্যের পোস্টে কমেন্ট করা কমাতে শুরু করলেন। আগের সেই আগ্রহ এখন আর নেই।
তারপর যখন উনি নতুন কোনো পোস্ট করলেন। দেখেন-কেউ আর তেমন কমেন্ট করেনা। অপেক্ষায় চেয়ে থাকেন।
চার-পাঁচটার বেশী কমেন্ট নাই। এবার শুরু হলো -ব্লগারের অভিমানের পালা।
কি করা যায়, কি করা যায়। কিছু অভিমানে আর কিছু অন্তর্জালায় দিলেন নিজের সব পোস্ট ড্রাফট করে। চলে গেলেন অফলাইনে।
অফলাইনে থেকে এবার খেয়াল করা শুরু করলেন- কেউ উনার খোঁজ খবর নেয় কিনা?
এইভাবে অনেকেই আজ অফলাইনে চলে গেছেন। পুরানো ব্লগারদের আর তেমন দেখা যায়না। অনেকে আবার ঘোষনা দিয়ে যান।
অনেকদিন ছিলাম, এখন চলে গেলাম এইসব বলে।
ইতোমধ্যে আবার নতুন ব্লগাররা এসেছেন।
কমেন্টের দেয়াচলছে। জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সেবামূলক কাজে জড়িয়ে যাচ্ছেন। নিজের মাঝে একটু একটু ভাব জন্মাচ্ছে। কিছুদিন পর আবার অনীহা।
আগের মতো সবার পোস্টে আর কমেন্ট করেন না।
এসব ব্লগারদের আমার কেন যেন একটু কমবয়সী অথবা বয়স হলেও চিন্তায় অপরিণত ব্লগার মনে হয়। ছোট শিশুরা যেমন সবার একটা আকর্ষণ পেতে চায়, ঠিক তেমনি। এরা সবার আকর্ষণের মাঝে থাকতে চায়। ঘনঘন নিজের পোস্ট দেখা।
কে কমেন্ট করলো, কতজনে লাইক করলো ইত্যাদিতে চোখ রাখা।
আবার কিছু ব্লগার আছেন-যারা একি রকম লিখেই যাচ্ছেন। নিজের মতো করে। যেমন- রাগীব, ফকির ইলিয়াস, শরৎ, কৌশিক ইনারা।
অভিমান নিয়ে চলে গেলাম, অনেকদিন আপনাদের সাথে ছিলাম-ইত্যাদি ঘোষণা দেয়া মান-অভিমানের খেলা ইনাদের মাঝে নাই।
এরাই হলো ব্লগের পরিণত বোঝদার ব্লগার।
আশাকরবো,,,, মান অভিমান, রাগ , গোস্সা বাদ দিয়ে শুধু মনের আনন্দেই ব্লগিং করুন।
এবার অন্য একটা ব্যাপার-
ইদানীং নির্বাচিত পোস্ট নামে একটি পাতা রাখা হয়েছে। আমি বিভিন্নভাবে চিন্তা করলাম-কোন পোস্ট গুলো নির্বাচিত পাতায় রাখা হয়। কোনো সঠিক জবাব বের করতে পারলামনা।
অনেক সময় ব্লগারের নাম দেখেই নির্বাচিত পাতায় চলে যায়।
সেদিন একজনকে জিগ্গাসা করলাম ব্লগে মডারেটর চিনার সহজ উপায় কি?
বললেন- যার পোস্ট আগে নির্বাচিত পাতায় তারপর নিয়মিত পাতায় আসে সেই মডারেটর।
সাধারণ নির্বাচিত পাতায় পোস্ট সিলেক্ট করার ব্যাপারে যদি মডারেটররা নিজেদের প্রাধান্য দেয়,নিজেদের অগ্রাধিকার, নিজেদের পরিচিতজনদের অগ্রাধিকার দেয় -তবে যারা বড় বড় ক্ষমতা নিয়ে আছে তাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষতা আশা করা যায় কীভাবে?
বিগত একমাস ধরে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম-অনেক ভালো ভালো লিখা নির্বাচিত পাতায় নাই।
বুঝতে পারলাম- মডারেটরদের মনে হয় সব পোস্ট পড়ার সময় হয়না। তা হতেই পারে।
তবে সব পোস্ট পড়ে যদি নির্বাচিত পাতায় নির্বাচিত করা না হয়-তাহলে ব্যাপারটাতো দারুন অন্যায়। আর এক্ষেত্রে নির্বাচিত পাতা রাখারও কোনো মানে হয়না।
আজ বিদায় নিলাম। সবার জন্য শুভ ব্লগিং।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।