আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অকারণ অপরাধে, মন কাঁদে প্রান কাঁদে

মায়াবতী এই প্রহর

আমি তখন অনেক ছোট। সবকিছুতেই কৌতুহল। সরকারী কোয়ার্টারে থাকার সুবাদে ছোট একটা বাগানও ছিল আমাদের। আমি প্রতিদিন সেই বাগানে খেলতাম। গাছেরা ছিল আমার খেলার সাথী।

একদিন হঠাৎ বাগানের পেছন দিকে আমি একটা জংলী গাছ আবিষ্কার করলাম। গাছটা ছোট, কিন্তু পাতাগুলো বড় আর খসখসে। কাছে গিয়ে দেখি বড় বড় দুটি পাতা একসাথে জোড়া লাগানো। এই জোড়া লাগানো পাতার ভেতরে উকি দিয়ে দেখি ভেতরে ছোট ছোট তিনটা ডিম। বুঝলাম এটা কোন পাখির বাসা আর এগুলো ওর ডিম।

এরপর থেকে আমি প্রতিদিন ডিমগুলো দেখতে যেতাম আর অপেক্ষা করতাম কবে এগুলো ফুটবে! একদিন হঠাৎ খুব জোরে বাতাস শুরু হল। ঝড়ের পূর্বাভাস! আমি দৌড়ে চলে গেলাম গাছটার কাছে। ঝড় যদি ডিমগুলো উড়িয়ে নিয়ে যায়! তারপর ডিমগুলো তুলে নিয়ে মাটির নিচে গর্ত করে সেখানে রেখে দিলাম। ভাবলাম ঝড়তো আর এখানে আসতে পারবেনা! সে রাতে খুব বৃষ্টি হল। পরদিন বাগানে কাদা আর পানি জমে থাকায় আম্মু আমাকে বাগানে যেতে দিলেন না।

তার পরদিন বাগানে গিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ডিমগুলো কোথাও পেলামনা। কাঁদতে কাঁদতে আম্মুকে গিয়ে সব বললাম। সব শুনে আম্মু আমাকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন,তুমি এত বোকা কেন? এরপর আম্মু্ আমাকে বুঝিয়ে দিলেন যে সব মায়েরাই তার সন্তানদের রক্ষা করতে প্রানপণ চেষ্টা করে। ঐ মা পাখিটাই পারতো তার ডিমগুলোকে বাঁচাতে। আজো সেই মা পাখিটার কথা ভেবে আমার বুকের ভেতর কেমন করে! নিশ্চয়ই ডিমগুলো হারিয়ে পাখিটা অনেক কেঁদেছিল! সেই অকারণ অপরাধবোধ আজো আমাকে তাড়া করে ফিরে।

আর সেজন্যই এখনো কোন বিপদে আমি আশ্রয় নিই আমার মায়ের কাছে। আম্মুকে খুব ভালবাসি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।