অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কোমলমতি শিশুদেরকেই টার্গেট করছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। শিশুদের মাঝে সুকৌশলে জঙ্গিবাদ ঢুকিয়ে দিতে পারলে অতিদ্রুত তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। এমন ব্রত নিয়ে কাজও শুরু করেছিলেন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্যরা। ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আইইআরসি) নাম ঠিক করে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান খোলার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল তারা। অন্যদিকে, গত ঈদুল ফিতরের পরদিনই মোমেনা আক্তার নামের এক মহিলার সঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মুফতি জসীম উদ্দীন রহমানী।
নববিবাহিত স্ত্রীর সঙ্গে মাত্র এক রাত কাটিয়ে বরগুনা চলে যাওয়ার পর তিনি গ্রেফতার হন। টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল (টিএফআই) এবং তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য দিয়েছেন মুফতি জসীম উদ্দীন রহমানী। বর্তমানে তিনি ব্লগার আহমেদ রাজীব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন। সূত্রে জানা গেছে, 'আইইআরসি'-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গ্রেফতারকৃত এবিটির সদস্য জাহিদুল ইসলামের ওপর। রাজধানীর ধানমন্ডি কিংবা গুলশানের মতো অভিজাত এলাকায় আইইআরসির ক্যাম্পাস স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
প্রজেক্ট প্রোফাইলও তৈরির পাশাপাশি ফান্ড সংগ্রহের জন্য জাহিদ বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন। মিলেছিল ইতিবাচক সাড়াও। পর্যায়ক্রমে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় 'আইইআরসি'র শাখা স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল এবিটির। জাহিদ নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাস করেন। গোয়েন্দা নজর এড়িয়ে ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে ভিন্ন আঙ্গিকে জঙ্গিতত্ত্ব কোমলমতি শিশু এবং বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার টার্গেট ছিল এবিটির।
'আইইআরসি'র ব্যাপারে জসীম উদ্দীন রহমানী হিযবুত তাহরির এবং জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গির সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বরখাস্তকৃত সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়াউল হক, পুরান ঢাকার বাংলাবাজার এলাকার মাওলানা ইসহাক খান, মাওলানা আবু হাশেম। রহমানী জানিয়েছেন, পাকিস্তানে অবস্থানরত ইজাজ হোসেন ২০০৪ সালে রিসার্চ সেন্টার ফর ইউনিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আরইউসিডি) নামের একটি এনজিও তৈরি করে এর মাধ্যমে জঙ্গিবাদের প্রচার করার কাজ হাতে নিয়েছিলেন। তবে ২০০৮ সালে ভাসানটেক এলাকায় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর তিনি পাকিস্তানে চলে যান। পাকিস্তানে যাওয়ার আগে ইজাজ কারাবন্দী জেএমবির আমির মাওলানা সাইদুর রহমানের মেয়েকে বিয়ে করেন।
নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য মাওলানা সাইদুর তার মেয়েকে ইজাজের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। জানা গেছে, গত ৭-৮ মাস আগে রহমানী তার প্রথম স্ত্রী-কে ডিভোর্স দেন। বনিবনা না হওয়ার কারণেই প্রথম স্ত্রী-কে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। ওই সংসারে রহমানীর দুই ছেলে রয়েছে। তবে সর্বশেষ গত ঈদের পরদিন রহমানী ময়মনসিংহের মোমেনা আক্তার নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন।
এই বিয়ের ক্ষেত্রেও ঘটক ছিলেন জেএমবির এক শীর্ষ জঙ্গি সদস্য। নববিবাহিত স্ত্রীর সঙ্গে এক রাত কাটানোর পরই গ্রেফতার হন রহমানী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মুনিবুর রহমান বলেন, রহমানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু জানানো সম্ভব নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।