লক্ষ্যহীন এক মানুষের পথচলা অবলোকনের আশায় আমায় দেখ। তবে সাবধান, অনুকরণ করোনা যেন! নিজস্ব গতি নদীকে কখনো পথ দেখায় না, নিজস্ব গতিতেই সে তার নিজের পথ করে নেয়। শুভ কামনা রইল সবার প্রতি!
বাংলাদেশের শেয়ার ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশই হচ্ছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। আবার এদের অনেকেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে থাকেন প্রায় কোনকিছু না বুঝেই। হয়তো নিকট পরিচিত জনদের অন্ধ-অনুসরণের মাধ্যমে।
আর তাইতো "গুজব" জিনিসটা বেশ ফলদায়ক বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে। ছোট-বড় প্রত্যেক শেয়ার ব্যবসায়ীরই উচিত "গুজবে" কান না দিয়ে কিছুটা বিশ্লেষণের প্রতি সচেষ্ট হয়ে - দক্ষ ও সফল শেয়ার ব্যবসায়ের অনুশীলন করা।
এক্ষেত্রে সাহায্যকারী বিভিন্ন ধরণের সফ্টওয়্যার এখন খুবই সহজলভ্য। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসবের অনেকগুনোই ফ্রী-ডাউনলোড করা যায়। আবার এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে (্www.stockbangladesh.com) যেখােন বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের প্রায়গিক বিশ্লেষণ কোনরকম রেজিষ্ট্রেশন ছাড়াই দেখা যায়।
এসব সফটওয়্যারের বিভিন্ন রংয়ের গ্রাফিকাল বিশ্লেষণ আমাদের অনেককেই হয়তো ঘাবড়িয়ে দেয়। অথচ এর সামান্য কিছু বিশ্লেষণই একজন শেয়ার ব্যবসায়ীকে দক্ষ ও সফল বিনিয়োগের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে
MACD:
কোন নিদির্ষ্ট শেয়ার বিনিয়োগের যথাথর্তা বিশ্লেষণের এটা অন্যতম একটি জনপ্রিয় পন্থা। MACD -র প্রধান তিনটি উপকরণ রয়েছে:
১। MACD (নীল লাইন): এটা ১২ পিরিয়ড ও২৬ পিরিয়ডের Exponential Moving Average (EMA) এর পাথর্ক্য।
২।
MACD Signal লাইন ( লাল লাইন): এটা MACD-র ৯ পিরিয়ডের EMA।
৩। MACD Histogram (সবুজ দন্ড): এটা MACD ও MACD Signal লাইনের পার্থক্য।
এই কৌশল বিশ্লেষণকারীকে MACD Zero Line এর প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। এখন সহজভাবে বলতে গেলে, শেয়ার ব্যবসায়ীকে এই কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে হলে খেয়াল করতে হবে:
** যখন MACD Zero Line-কে MACD নীল লাইন নীচের দিক থেকে উপরের দিকে অতিক্রম করে তখন ৯০% সময় সেই শেয়ারটির দাম বাড়ে।
এই কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যেকোন নির্দিষ্ট শেয়ারের পূর্ববর্তী ৬মাস থেকে ১২ মাসের গ্রাফ দেখা যেতে পারে।
** আবার MACD নীল লাইনটি যখন MACD Signal লাল লাইনটিকে ছেদ করে উপরে উঠে তখন শেয়ারটি ক্রয় করা যায়।
** একইভাবে, MACD Signal লাল লাইনটি নীল লাইনটিকে ছেদ করে উপরে উঠে তখন বুঝতে হবে শেয়ারটি বিক্রি করে দিতে হবে।
RELATIVE STRENGTH INDEX (RSI):
এটাও অন্যতম একটি জনপ্রিয় সূচক, যার মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট শেয়ারের পূর্ববর্তী মূল্য অনুযায়ী বর্তমান মূল্যের শক্তিমত্তা পরিমাপ করা হয়। এই সূচকের গ্রাফ অবলোকনের মাধ্যমেও সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব:
** RSI লাইন যদি Oversold (30) লাইনকে নীচ থেকে উপরের দিকে ছেদ করে তখন সেই শেয়ারটি কেনা যেতে পারে।
** RSI লাইন যদি Overbought line (70)-কে উপর থেকে নীচের দিকে নেমে আসে তখন সেই শেয়ারটি বিক্রি করে দেয়া যেতে পারে।
WILLIAMS % R:
এটা আরেকটি কার্যকরী ও জনপ্রিয় সূচক, যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সঠিক সিদ্ধন্ত নিতে পারেন:
** যখন WILLIAMS % R সূচক লাইনটি Oversold Line (-80)-এর নীচে থাকে এবং উপরের দিকে উঠতে থাকে (-৮০) লাইনকে ছেদ করার জন্য, তখনই সেই শেয়ারটি ক্রয়ের সাম্ভব্য উপযুক্ত সময়।
** আবার WILLIAMS % R সূচক লাইনটি যখন Overbought Line (-20)-এর উপরে থাকে এবং নীচে পড়তে থাকে (-২০) লাইনকে ছেদ করার জন্য, তখনই সেই শেয়ারটি বিক্রি করে দেয়ার সম্ভাব্য উপযোগী সময়।
এভাবে এই সামান্য কয়েক ধরনের প্রায়োগিক কৌশল একজন শেয়ার বিনিয়োগকারীকে দক্ষ্য হিসেবে গড়ে তুলত পারে। আসলে, শেয়ারে বিনিয়োগ একটি দারুন খেলা।
সবাই হয়তো "ম্যারাডোনা" হতে পারেনা; তবে কৌশল শিখতে থাকলে হয়তো তা চোখবুজে 'বলে' কিক্ করা থেকে বিরত রেখে - অন্তত: গোলপোষ্ট বরাবর কিক্ করতে সহায়তা করবে। বলাতো যায় না, অনুশীলন একদিন এই সাধারন আমােদরকে "ম্যারাডোনা"র চেয়েও দক্ষ্য করে তুলতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।