কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিত্সা কর্মকর্তাকে স্থানীয় যুবলীগের কর্মী দুই ভাই মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অসুস্থ স্বজনের চিকিত্সার জন্য ওই চিকিত্সা কর্মকর্তাকে তাঁরা জোর করে বাড়িতেও নিয়ে যান বলে অভিযোগে বলা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা (আরএমও) ইটনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর পৌনে একটার দিকে ইটনার বড়হাটি গ্রামের আছিরউদ্দিনের ছেলে সাইফুদ্দিন (২৫) ও মহিউদ্দিন (২৩) হাসপাতালে এসে আরএমও মো. ওয়াহিদুজ্জামানকে জানান যে তাঁদের বাড়িতে একজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
রোগীর চিকিত্সার জন্য তাঁরা আরএমওকে তাঁদের বাড়িতে যেতে অনুরোধ করেন। আরএমও রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বললে দুই ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের বাড়িতে যেতে চাপাচাপি করেন। এ পরিস্থিতিতে আরএমও কর্তব্যরত চিকিত্সা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রানাকে যুবকদের সঙ্গে যেতে বলেন। দুই ভাই মোস্তাফিজকে নিয়ে রিকশায় করে তাঁদের গ্রামের পথে রওনা হওয়ার সময় চিকিত্সক দূরত্বের কথা জানতে চাইলে তাঁরা গালিগালাজ করেন। এতে মোস্তাফিজ হাসপাতালে চলে আসেন।
পরে দুই যুবক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মোস্তাফিজকে জোরপূর্বক বের করে রিকশায় তুলে বাড়ির পথে রওনা হন। এ সময় মোস্তাফিজকে তাঁরা গালিগালাজ ও মারধর করেন। বাড়িতে রোগীর চিকিত্সা দেওয়ার পর সাইফুদ্দিন ও মহিউদ্দিন মোস্তাফিজকে চেয়ার দিয়ে পেটাতে উদ্যত হলে অন্যরা বাধা দেয়। পরে মোস্তাফিজকে তাঁরা আবার মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার চাকরিজীবনে এমনভাবে আর কখনো অপমানিত হইনি।
সন্ত্রাসী কায়দায় আমাকে তারা তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। পথে ও বাড়িতে আমাকে তারা গালিগালাজ ও মারধর করে। ’
আরএমও মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে ইটনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সিভিল সার্জন দীন মোহাম্মদ বলেন, ঘটনাটি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে কর্তব্যরত কোনো চিকিত্সক কারো বাড়িতে যেতে পারেন না। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিত্সা নেবে—এটাই স্বাভাবিক।
অভিযুক্ত সাইফুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
মহিউদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সাইফুদ্দিন ও মহিউদ্দিন স্থানীয় যুবলীগের কর্মী। তাঁরা সত্যিই যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাহলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।