পাখি এক্সপ্রেস
কুদ্দুসের বাপ... সকাল থেইক্যা কইতাছি বাপের বাড়ি যামু , তোমার তাতে কোন খেয়ালই নাই। আইজ না গেলেতো সুমিরে পাওন যাইবো না। বইনটারে কতোদিন দেখি না। ... কথা শুইনা কুদ্দুসের বাপ মহা ক্ষ্যাপা। এই ব্যস্ততার মইধ্যে তোমার বাপের বাড়ি বাপের বাড়ি শুনতে ভালা লাগে না।
পাড়ার মিয়া ভাইরে বাজারে উঠন নিষিদ্ধ করছে। বাজারের লন্ড্রীতে রাখা তার জামা কাপড়, ছোটইন্নার দোকানে জমা রাখা খুচরা পয়সা- সব জব্দ করেছে। এই দু:সময়ে যদি তার পাশে না থাকি, তাইলে আমার দুর্দিনেও সে পাশে থাকবো না। আফটার অল আমরা একই গ্র“পের।
: ক্যান, তোমরা না আরেকটা বাজার বানাইছো।
ওইখানেতো তোমরাই কমিটি তোমরাই সব। নিজের বাজার ছাইড়া ওই বাজারে যাও কেন? খালি গ্যাঞ্জাম করো। ওই দিন কইলা সংসারে নাকি হিট কইমা যাইতাছে। আবার মেজো পোলারে কইলা টিভি রুমে ব্যান। কথার আগাগোড়া কিছ্ছু বুঝি না।
ওসব বাজারী ভাষা ঘরে আর কইও না। কোথাকার কোন মিয়া ভাইরে বাজারে নিষিদ্ধ করলে তোমার কি? তিন তিনবার চাক্রি হারানোর পরও আক্কেল হয় নাই।
: শুনো বৌ, ক্যারিয়ার বইলা কথা। তা ছাড়া এ গেরামে আমরাই প্রথম গ্র“প বানাই। আমরাতো ইতিহাসের পাতায় থাকমু।
ইতিহাসের কাছে একটা দায়বদ্ধতা আছে না। তুমিতো লাটভাই’রে চেনোই না। খুবই দিলখোশ পাবলিক। জটিল এক নেতা আমাগো লাটভাই। গ্র“প বানানোর সময় গেরামের ম্যালা মেধাবী পোলারে দলে ভিঁড়াইছেন।
ঠিক কইরা দিছেন কে মসজিদের টয়লেট সাফ করবো, কে উঁচানিচা রাস্তায় মাটি দিবো আর কে রাইতে চোর পাহারা দিবো। আবার কে কারোরে ন্যাংটা করার সময় সবাই এক হইবো। তখন আবার গেরামে বাইজ্জা বেজগন্নিগো উৎপীড়ন। সুগোটা কামে লাগাইতে ভুলি নাই। সভাপতি সেক্রেটারি মিইল্যা একটা কমিটিও কর্চেন।
পোলাপানতো পদ পাইয়া যে খুশি। শুনো... তোমরা মাইয়াগো মাথায় ঘিলু নাই। লাটভাইয়ের মতো কোন মাইয়া যদি তোমাগো কমিউনিটিতে থাকতো, তাইলে তারে তোমরা বেণীতে বাইন্ধা রাখতা।
: ক্যাঁচাল থামাও। তুমি না গেলে আমিই যাইতাছি।
তুমি তোমার হিট বাড়ানোর তালে থাকো, আর মিয়া ভাইরে সেফ করো।
: ধুর! সেফ নিয়াতো ভাবি না। পুরাণ জামা আর খুচরা পয়সাগুলাও কোন ব্যাপার না। এগুলা কপি করা আছে। আমাদের যে বিশাল গোলাঘর।
এইটা হইলো একটা চান্স। এই চান্সে আমাগো বাজারে আরো কয়টা দোকানদার আর খরিদ্দার বাড়াইতে হবে।
: এটা ছাড়া আর কোন বুদ্ধি নাই? তোমরা বিভিন্ন প্যাকেজ ছাড়ো। যেমন বন্ধু নিয়া বাজারে গেলে একটা ছাগল ফ্রি। বা সহ-পরিবারে গেলে একটা গাধা ফ্রি।
বান্ধবীরে নিয়া গেলে পুচকা দোকানে ৩ বছরের জন্য টক আর ঝাল ফ্রি। তাইলেই দেখবা বাজার গরম হইয়া গেছে।
: তোমার মাথায় যে হিট কম তা আমি জানি। সা¤প্রতিক ভাবনার লিস্টেতো বাপের বাড়ি ছাড়া আর কিচ্ছু নাই। আমাদের বাজারে বর্ষাকালে পানি উঠে যায়।
ক্যান জানি মাছি ভনভন করে। মানুষজন যাইতে চায় না। পুরান বাজারটার বুক থেইকা যদি মাটি কিছু সরানো যায়, তাইলে তাগো বাজারেও পানি উঠবো। এসব ধান্ধা যদি তুমি বুঝতা, তাইলে আর আমারে বিয়া করতা না।
: দলাদলিতে যারা নাই, তারা কি তোমাগোরে চড় থাপ্পর কিছু দেয় না? তুমিতো একটা মাতব্বরের চাইতেও খারাপ।
দাড়াও তোমার বাজারে যাওনের খায়েশ আমি মিটাইতাছি।
: দেখো বৌ ক্যারিয়ারটা নষ্ট কইরা দিও না। সেক্রেটারি হওনের একটা চান্স আছে। আরো হিটের দর্কার। বহু আগেই ব্যান বা হিটের মতো বিষয়গুলারে একটা স্ট্যান্ডার্ডে নিয়া গেছি।
বাজারে উঠলেই মাইনষের অনুভূতি নাইচা নাইচা উঠে। সেটারে কামে লাগাই। আমারওতো ইচ্ছা আছে একটা বাজারের মালিক হওয়া। তুমি কি চাওনা তোমার জামাই বিখ্যাত কেউ হোক?
... ডাইনে তাকাইয়া দেখে কুদ্দুসের মা আর নাই। হতাশ হয় নাই।
কিন্তু বৌয়ের লগে বাজার নিয়া কথা কইতে আরাম পায়। না, ম্যালা কাম বাকি। সাধারণ পাবলিকরে বুঝাইতে হইবো মিয়া ভাই’র জমজমের পানিতে ধোয়া জামাগুলান গেরামের ম্যালা কামে আইবো। এই জামা উদ্ধার করন লাগবো। জামা ফিরাইয়া দিলেই কারবার শ্যাষ।
অত্যাচারে জর্জরিত হওয়ার আর কোন ইচ্ছা নাই। এই বাজারের পেশাব খোলায়ও আর কোনদিন পেশাব করুম না। দরকার হইলে কাপড় ভিজাইয়া ফেলুম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।