আমার আজকের লেখা আপনাদের সাথে পৃথীবির সব’চে বড় জমি’র ডাকাত কে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য । বাঙলাদেশে আমরা অনেক ভূমি দশ্যুর গল্পশুনি, খবরে দেখি অসহায় জমি হারানোদের বক্তব্য, পেপার পত্রিকায় বড় বড় ছবিঅলা ফিচার পড়ি। এরা দেশের মধ্যেই ডাকাতি বা জোর জবর দখল করে একের জমি অন্যের কাছে বিক্রি করে, নিজে ভোগ করে কিংবা দখল করে ফেলে রাখে । এদেশের সরকার এইসব জমি-ডাকাতদের তোয়াজ করে চলে কারন এরা অর্থের জোরে অনেক সময় শাসকের গদিতে ভূমিকম্প শুরু করে দিতে পারে । আর ভূমিকম্প মানেই তো কুপোকাত! সোজা লেক্সাস গাড়ী থেকে ছিটকে রাজপথে শক্ত পিচে বসবাস ।
আসুন জগতের সর্ব বৃহৎ ভূমি দস্যু সম্প্রদায়ের সাথে পরিচিত হই ।
প্রাচীন কাল থেকেই আরব ভূমি ফিলিস্তিনে ইহুদীদের কিছু বসতি বিদ্যমান, ছিলো সামান্য কিছু অঞ্চল, জমি আর জনপদ। ১৯৪৫ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের মোট আয়তনের প্রায় ৬ ভাগের কম ছিলো ইহুদীদের বসতি বা তাদের অধিকারে থাকা জমি-জমা। ১৯৪৬ সালের ছবি দেখুন ।
ফিলিস্তিনে মুসলমানদের উচ্ছেদ করে গড়ে তোলা হচ্ছে ইহুদীদের আবাসস্হল/ বাড়ী।
ইসরাইলের এই অবৈধ দখলদারীর এক নম্বর মিত্র আমেরিকা। অথচ আমেরিকা দুনিয়াব্যাপী মানবাধিকার, গনতন্ত আর আইনের শাসন শিখানোর ফাকা বুলি দেয় । সাম্রাজ্যবাদের নগ্ন নমুনা আজকের ইসরাইল। কিছুদিন আগে গাজায় যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ইসরাইলি আর্মি চালিয়েছে তা মানব ইতিহাসে নেই।
ফিলিস্তিনিদের হাজার বছরের মাতৃভূমির একাংশ ব্রিটেন আর আমেরিকা ষড়যন্ত্র করে ১৯৪৭সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানী থেকে তাড়িয়ে দেয়া ইহুদীদের বসবাদের জন্য বরাদ্দ দেয় ।
জাতিসংঘ অন্যায় ভাবে ফিলিস্তিনকে ভাগ করে একটি পার্টিশন করে দিয়ে ইসরাইল রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার গোড়া পত্তন করে । ইহুদীরা ধর্মভিত্তিক দেশ ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করে । অথচ পশ্চিমা বিশ্ব সর্বদাই ধর্মভিত্তি রাস্ট্রের বিপক্ষে অবস্হান নেয়। ধর্মনিরপেক্ষ রাস্ট্র তাদের একমাত্র পছন্দ। কিন্তু আশ্চর্য আমেরিকা, ব্রিটেন, ফান্স্র সহ জাতিসংঘে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী দেশগুলোও ইসরাইলের এই ধর্মভিত্তিক জন্মকে সাদরে গ্রহন করেছে ।
এবং ইসরাইলের সকল অবৈধ কর্মকান্ডকে প্রশয় / অনুমোদন দিচ্ছে।
ফিলিস্তিন সীমানায় ১৯৪৯- ১৯৬৭ পর্যন্ত ইসরাইলের অবৈধ ভুমি দখলদারী এবং নতুন বসতি স্হাপন বাড়তে থাকে । ঐসময়ে ইসরাইলের সাথে আরব রাস্ট্রগুলোর (মিশর, জর্দান,সিরিয়া, লেবানন) সাথে কয়েকদফা যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে দ্বিধাবিভক্ত আরবরা ঐক্যের অভাবে পরাজিত হয় । প্রতিবার যুদ্ধেই ইসরাইল ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করতে থাকে এবং নিজেদের সীমানা বৃদ্ধি করে।
১৯৬৭’র পরে ইসরাইল ধীরে ধীরে বিক্ষিপ্তভাবে ফিলিস্তিনের জমি দখল করতে থাকে এবং চলমান ভাবে অসহায় বাসিন্দাদের তাদের পৈতৃক /বংশ পরস্পরায় বাস্তুভিটা ধ্বংস করে বিতাড়িত করতে থাকে । (ছবিতে ২০০০ সালে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের জমির পরিমান দেখুন । )
নিজ বাসভূমি, আজন্ম লালিত সাধের মাতৃভূমি ছেড়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আজ মানবেতর জীবন যাপন করছে বিশ্বব্যাপী । দেশ থাকতে,ঘর থাকতেও আজ তারা উদ্বাস্ত, দেশহারা ,রিফিউজি । আর উড়ে এস জুড়ে বসা ইহুদীরা আমেরিকার দম্ভ আর ক্ষমতায় , তাদের তৈরী যুদ্ধবিমানে হত্যা করছে নিরঅপরাধ শিশু, অসহায় নারী আর বেসামরিক লোকদের।
অসহায় মানুষের তাজা রক্তে রন্জিত আজ গাজা উপত্যকা । ধ্বংস করছে তাদের সাধের ঘর-বাড়ী, লুট করছে সহায়-সম্পদ, স্বামীহারা, ধর্ষিতা আর সন্তান হারা মায়েদের আহাজারিতে ফিলিস্তিনের আকাশ আজ বির্দীন, বিমূর্ত । এই কান্নার আওয়াজ মানবতা, গনতন্ত্র আর সুবিচারের একমাত্র লাইসেন্সধারী দাবীদার পশিচমা বিশ্বের কানে পৌছায় না, তারা বধির, অন্ধ, বোবা , কালা ।
আপনারা কেউ কি বলতে পারেন কি করলে বিশ্ব সভ্যতা, বিশ্বশান্তির সোল এজেন্টদের কানে এই করুন আর্তির আওয়াজ পৌছানো যাবে ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।